ঐন্দ্রিলার প্রাণের চেয়েও প্রিয় ছিল এই পোষ্যরা। জানা যাচ্ছে ঐন্দ্রিলার অসুস্থতার সময় থেকেই বেশ ঝিমিয়ে পড়েছিল তারা। ঐন্দ্রিলার শূন্যতা গ্রাস করেছিল সেই তাঁদেরও।
১৯ দিনের লড়াই শেষে এবার বিশ্রাম। প্রয়াত অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। ঐন্দ্রিলার মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে তাঁর পরিবার-পরিজন ও বন্ধুরা, শোকের ছায়া টলিপাড়ায়। চোখের জলে প্রিয় অভিনেত্রীকে বিদায় জানাল ঐন্দ্রিলার ভক্তবৃন্দরাও। অন্যদিকে নিভৃতে ঐন্দ্রিলার স্মৃতি আঁকড়ে বিষন্ন অভিনেত্রীর দুই সন্তানসম পোষ্য। মন ভালো নেই বোজো-তোজোরও। অভিনেত্রীর নিথর দেহের দিকে কাতর চোখে তাকিয়ে রইল নির্বাক দুই জীব। ঐন্দ্রিলার প্রাণের চেয়েও প্রিয় ছিল এই পোষ্যরা। জানা যাচ্ছে ঐন্দ্রিলার অসুস্থতার সময় থেকেই বেশ ঝিমিয়ে পড়েছিল তারা। ঐন্দ্রিলার শূন্যতা গ্রাস করেছিল তাঁদেরও। আজ অভিনেত্রীর শেষ যাত্রায় 'মা'কে বিদায় জানাল বোজো-তোজো।
ঐন্দ্রিলার বাড়ির পরিচারিকা সূত্রে জানা যাচ্ছে, ঐন্দ্রিলা বাড়ি ফিরলে তাঁর পিছন আর ছাড়তে চাইতো না দুজনে। ঐন্দ্রিলাও তাঁর এই পোষ্যদের নিয়ে আপ্লুত ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে বোজো-তোজোর সঙ্গে অসংখ্য ছবি আপলোড করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি তাদের নিয়ে সমুদ্রে বেড়াতেও গিয়েছিলেন তিনি। সেই ছবিও নেট মাধ্যমে শেয়ার করেছিলেন ঐন্দ্রিলা। সেপ্টেম্বরেই মন্দারমণিতে বোজো-তোজোকে নিয়ে গিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তিনি লিখেছিলেন 'আমার সন্তানরা এই প্রথম সাগর জলের স্বাদ নিল।'
রবিবার বিকেলেই অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া সম্পন্ন হয় ঐন্দ্রিলার। বিকেল সোয়া পাঁচটা নাগাদ কুঁদঘাটের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছয় মৃতদেহ। সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় টেকনিশিয়ান স্টুডিয়। সেখান থেকে কেওড়াতলায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। ঐন্দ্রিলার মুখাগ্নি করলেন বাবা উত্তম শর্মা ও বন্ধু সব্যসাচী। গোটা ঘটনায় একেবারে স্থবির সব্যসাচী। পাথরের মত করে গেলেন যাবতীয় কর্তব্য। বিগত ১৯ দিনের মত শেষ যাত্রাতেও ঐন্দ্রিলার ছায়াসঙ্গী ছিলেন তিনি। জানা যাচ্ছে ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর খবর পাওয়ার থেকেই জলস্পর্শ করেননি তিনি। কথাও বলছেন না।
২০১৫ সালে প্রথম ক্যানসার ধরা পড়ে ঐন্দ্রিলার। তখন তিনি একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী। মারণ রোগের সঙ্গে মুখে হাসি নিয়েই লড়েছিলেন অষ্টাদশী ঐন্দ্রিলা। লড়াইয়ে জিতেও ছিলেন তিনি। এরপর কেটে গিয়েছিল ছয় বছর। ঐন্দ্রিলার জীবনে আসেন সব্যসাচী। সম্পর্কের পাঁচ বছরের মাথায়ই ফের একবার আঘাত নেমে আসে সব্য-ঐন্দ্রিলার জীবনে। ২০২১ সালে ফের ক্যান্সার আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। ফের লড়াই, ফের জয়। মারণ রোগকে ছাপিয়ে সব্যসাচীর হাত ধরেই জীবনের জয়গান গেয়েছিলেন অভিনেত্রী। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। সকলের অজান্তেই মারণ রোগ ফের বাসা বেঁধেছিল ঐন্দ্রিলার মাথায়। এবার আর ফিনিক্স হয়ে ফেরা হল না তাঁর। ক্যানসারের কাছে হার মানল অভিনেত্রীর জীবনীশক্তি। ২০ নভেম্বর সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে ঐন্দ্রিলা।
আরও পড়ুন -
টিপ-লিপস্টিক আর ফুলের সাজে সাজিয়ে দিলেন দিদি, চুমু খেয়েই শেষ বিদায় জানালেন
সন্তানতূল্য ২ সারমেয়কে সাগর জলে জীবন মন্ত্রের বীজ দিয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা, আজ তিনি নিজেই লড়াই করছেন
ঐন্দ্রিলার লড়াইকে কুর্নিশ, তবু ভয়ে কোনও দিন হাসপাতালে দেখতে যেতে পারিনি: অনির্বাণ চক্রবর্তী