সংক্ষিপ্ত
ঐন্দ্রিলা শর্মার শেষযাত্রায় পরিবারের সদস্যরা পরিবারের ছোট্ট সদস্যকে বিদায় জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বড় দিদি বোনকে সুন্দর করে সাজিয়ে বাদায় দিলেন। সেই ছবি মন কেড়ে নিল নেটিজেনদের।
কঠিন আর কঠোর লড়াই করে তবেই মৃত্যুর কাছে হার মানলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। মাত্র ২৪ বছর বয়সেই শেষ হয়ে গেল একটি জীবন। তিনি ছিলেন পরিবারের সবথেকে ছোট সদস্য। প্রাণবন্ত ঐন্দ্রিলার মৃত্যু পুরো পরিবারই কান্নায় ভেঙে পড়েছে। প্রাণশক্তিতে ভরপুর ঐন্দ্রিয়া ছিলেন পরিবারের সকলের প্রিয়। বিশেষত দিদি ঐশ্বর্য শর্মার। পরিবারের সদস্যদের কথায় ঐন্দ্রিয়া নাকি বরাবরই সাজতে ভালবাসতেন। আর সেই কারণেই প্রিয় বোনকে শেষ যাত্রায় টিপ, লিপস্টিক আর চন্দনে সুন্দর করে সাজিয়ে বিদায় দিলেন।
ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর পর থেকেও সোশ্যাল মি়ডিয়ায় জোর আলোচনার বিষয় তিনি। ভাইরাল হয়েছে একের এপর ছবি আর ভিডিও। পরিবারের সদস্য আর অনুগামীদের তোলা ভিডিওতেই ধরা পড়েছে প্রিয়জনদের কান্না ভেজে মুখগুলি। মা থেকে দিদি সকলেরও চোখে জল। উদাসমুখে বাবা। সেই রকমই একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে চোখে বাঁধ ভাঙা জল দিদির। সেই অবস্থাতেই কাঁপা হাতে বোনকে সাজিয়ে দিচ্ছে। লিপস্টিক আর কাজল আর টিপ পরিয়েছেন। কপালে এঁকে দিয়েছেন চন্দনের ফোঁটা। চিরঘুমে ঐন্দ্রিলা- এসব কিছুই টের পেল না। কিন্তু নিয়ে গেল বড় দিদির অফুরান ভালবাসা। শেষ যাত্রায় সাজিয়ে দেন ফুলের সাজে।
কালার্স বাংলার ঝুমুর সিরিয়াল দিয়ে ছোটরপর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। তারপর তাঁকে স্টার বাংলার জীবন জ্যোতি ধারাবায়িকের মুখ্য চরিত্রে দেখা গিয়েছিল। সান বাংলার জিয়ন কাঠি সিরিয়ালে তিনি ছিলেন তুলি। ক্যান্সারে আক্রান্ত ঐন্দ্রিলা। দীর্ঘ দিন ধরেই দাঁড়িয়ে ছিলেন জীবন-মৃত্যুর মাঝখানে। বারবার মৃত্যুকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। গুছিয়ে নিচ্ছিলেন জীবনটাকে। কিন্তু ব্রন স্ট্রোকই তছনছ করে দিন তাঁর সাজানো বাগান।
যদিও কঠিন সময়ে ঐন্দ্রিলার পাশে ছিলেন তাঁর আত্মীয় আর পরিজনরা। আর ছিলেন কাছের মানুষ সব্যসাচী চৌধুরী। যাতে ছোটপর্দার দর্শক বামাক্ষ্যাপা হিসেবেই চেনে। হাওড়ার মেয়ে ঐন্দ্রিলা। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁকে প্রথমে ভর্তি করা হয় হাওড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু পরে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। আইনশৃঙ্খলার কারণে ঐন্দ্রিলার যে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল সেই হাসপাতালের নাম আর ঠিকানা গোপন রাখা হয়েছে। কিন্তু ঐন্দ্রিলার হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুরু করে তাঁর অবস্থার আপডেট সব্যসাচী নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় বারবার দিয়েছেন। অভিনেত্রীর পরিবারের সদস্যরাও এই আপডেট বারবার দিয়েছেন।
পয়লা নভেম্বর ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিল ঐন্দ্রিলা। দুইবার ক্যান্সার জয়ের করেছিলেন। ২০১৫ সালে ঐন্দ্রিলা প্রথম জানতে পারেন তাংর অস্থিমজ্জায় ক্যান্সার। দিল্লিতে শুরু হয়েছিল চিকিৎসা। মূল অস্ত্রই ছিল কেমোথেরাপি। ২০১৬ সালে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। তারপর ২০২১ সালে নতুন করে ডান দিকের ফুসফুসে বাসা বাঁধে টিউমার। আবার শুরু হয় কেমো থেরাপি। অসহ্য যন্ত্রণায় কাতর হয়েও মৃত্যুর লঙ্গে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বেইন স্ট্রোক। চিকিৎসকদের একাংশের মতে ক্যান্সের কারণেই স্ট্রোক হয়েছিল অভিনেত্রীর।
আরও পড়ুনঃ
বিদায় ভালোবাসা, শেষ মুহূর্তে চোখের জলে ভাসলেন সব্যসাচী, ঐন্দ্রিলার পা আঁকড়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন তিনি
'সবই বৃথা তোমায় ছাড়া', পঞ্চভূতে বিলীন ঐন্দ্রিলা, মুখাগ্নির সময়ও পাশে ছিলেন সব্যসাচী
দুইবার মৃত্যুকে হারিয়ে ফিরেছিলেন ঐন্দ্রিলা,স্ট্রোক ছন্দপতন ঘটাল- জানুন অভিনেত্রীর কঠিন লড়াইয়ের কথা