তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, অকারণ কটাক্ষ আর মিথ্যা ভাষণ তাঁর প্রচুর ক্ষতি করেছে। তিনি যা নন সেটাই সবার সামনে উঠে এসেছেন। যার ছাপ পেশাদুনিয়া থেকে ব্যক্তিজীবনেও যথেষ্ট পড়েছে।
শেষে সোশ্যাল মিডিয়ার কাছে ‘ঝুঁকলেন’ ‘পুষ্পা’ রশ্মিকা মন্দানা? সমার্থক! সম্প্রতি প্রাণবন্ত নায়িকার মুখে আষাঢ়ে মেঘ! কারণ? সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁকে নিয়ে অকারণ কটাক্ষ! যার জেরে নাকি তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্কও টালমাটাল। এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তেমনই জানিয়েছেন ‘গুডবাই’ অভিনেত্রী। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, ঋষভ শেট্টির 'কান্তারা' না দেখার জন্য অকারণ কটাক্ষ। পাশাপাশি মিথ্যা ভাষণ। এ সব তাঁর প্রচুর ক্ষতি করেছে। তিনি যা নন সেটাই সবার সামনে উঠে এসেছেন। যার ছাপ পেশাদুনিয়া থেকে ব্যক্তিজীবনেও যথেষ্ট পড়েছে। এক এক সময় সব কিছুই হাতের বাইরে চলে যাওয়ার মতো অবস্থা। পাশাপাশি, প্রচুর মানুষ তাঁকে ভালওবেসেছেন। নায়িকার দাবি, সেই ভালবাসাকে আঁকড়েই তিনি খারাপ সময় বা দিন পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তারকাদের নিয়ে অকারণ অশালীন কটাক্ষ নতুন নয়। সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে এশিয়ানেট নিউজ বাংলার কাছে মুখ খুলেছিলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রফিয়াত রশিদ মিথিলাও। তিন বছর আগে দীর্ঘ সময় তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে একই কারণে খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। তার জেরে তাঁর গৃহশান্তিও বিঘ্নিত হয়েছিল। সাইবার অপরাধ দমন শাখায় অভিযোগ দায়ের করার পর পরিস্থিতি বশে এসেছে। এ বার একই অভিযোগ রশ্মিকার কথাতেও। দক্ষিণী নায়িকার সঙ্গে ঠিক কী হয়েছে? একের পর এক সাফল্যই কি এই কটাক্ষের কারণ?
জানেন না খোদ নায়িকাও। পোস্টে রশ্মিকা লিখেছেন, ‘অভিনয়ে আসার পর থেকেই এক দল মানুষের প্রবল ঘৃণার শিকার আমি। আক্ষরিক অর্থেই ট্রোলড। প্রচুর নেতিবাচক কথা আমার বিরুদ্ধে ছড়ানো হয়েছে।’ তাঁর আরও দাবি, অভিনয় দুনিয়ায় কাজ করতে গেলে একটু আধটু অপপ্রচার সহ্য করতেই হয়— এটা তিনিও জানেন। তাই শুরুতে তেমন পাত্তা দেননি। বিষয়টি নিয়ে মাথাও ঘামাননি। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে, তাঁর আরও আগে এ বিষয়ে মুখ খোলা উচিত ছিল। অভিনেত্রীর আরও খেদ, তিনি তাঁর প্রতিটি ছবিতে নিজেকে ঘেষমেজে আরও সাবলীল করার চেষ্টা করেছেন। অভিনয়ের প্রতি মনোযোগী হয়েছেন। যাতে তাঁর অনুরাগীরা তাঁকে নিয়েই সন্তুষ্ট থাকেন। কিন্তু পুরোটাই ব্যুমেরাং হয়ে ফিরেছে তাঁর কাছে। তাঁর পরিশ্রম, অধ্যবসায়ে জল ঢালতে যেন কোমর বেঁধে নেমেছেন এক দল মানুষ।
যদিও এ সবের মধ্যেই রশ্মিকার হাতে বড় বড় ছবির কাজ। তাঁর দাবি, এই অপপ্রচারগুলো না থাকলে তিনি আরও দ্রুত উন্নতি করতে পারতেন। নেতিবাচকতার পিছনে তাঁর সময়, পরিশ্রম-- কোনওটাই নষ্ট হত না। একই সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়েও এত জলঘোলা হত না। যা আদৌ সত্যি নয়। এই ধরনের নেতিবাচকতা কী ভাবে ছাপ ফেলেছে রশ্মিকার উপরে? নায়িকার দাবি, একটা সময়ের পরে তিনি হতাশার ভুগতে শুরু করেন। কারণ, কাউকেই তিনি কিছুতেই বুঝিয়ে উঠতে পারছিলেন না, তিনি যা নন সেটাই দেখানো হচ্ছে। তিনি যা বলেননি সেটাই ভুয়ো খবর আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এতে ক্রমশ পরিস্থিতি খারাপ হয়ে উঠেছে। তাই বাধ্য হয়ে এত দিন পরে মুখ খুলেছেন তিনি। পাশাপাশি, তিনি অভিনন্দন জানিয়েছেন সেই সব অনুরাগীদের, যাঁরা তাঁকে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। রশ্মিকার কথায়, এঁরাই তাঁকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। হাজারো নিন্দে-মন্দর পরেও এঁরা তাঁর পাশ থেকে সরেননি। এঁদের জোরেই, এঁদের ভালবাসাকে হাতিয়ার বানিয়ে এখনও অভিনয় দুনিয়ায় টিকে রয়েছেন। আগামী দিনেও নিজের জায়গা ধরে রাখবেন।
সোশ্যাল দুনিয়ায় তাঁর কটাক্ষের শিকার হওয়ার কথা জানাতেই তাতে মন্তব্য করেছেন সহ-অভিনেতা দুলকার সলমন। তাঁর মতে, ‘তাঁদের থেকে ভালবাসা আশা করো, যাঁরা তোমার মতো হতে চায়। আর ঘৃণা তাঁরাই করেন, যাঁরা তুমি হয়ে উঠতে পারে না। তোমার উদাহরণ তুমিই! তোমায় শব্দ বন্ধনে বাঁধা যায় না।’