সত্তরের দশক যখন উত্তাল দেশভাগ, কাঁটাতারের যন্ত্রণা, উদ্বাস্তু-র মত বিষয়কে ঘিরে, তখনই তা দর্পনের মত স্পষ্ট পর্দায় ফুঁটে উঠেছিল ঋত্বিক ঘটকের হাত ধরে। প্র্তিটি ফ্রেমেই যেন সাদা কালোয় মোড়া এক না বলা যন্ত্রণা ছাপ রেখে গিয়েছিলেন তিনি। যেখানে মানুষের ভিটে মাটি ছেড়ে আসার কষ্টই প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছিল। বাংলা চলচ্চিত্র জগতের তিন কিংবদন্তি পরিচালকের মধ্যে ঋত্বিক ঘটক বেছে নিয়েছিলেন এই বিষয়টিকে। তাঁর মনের কোণে জমে থাকা মুহুর্তেরাই যেন ভিড় জমাত সংলাপে, ছবির প্রতিটি অধ্যায়ে।
আরও পড়ুনঃ বড়দিনে মায়ের সঙ্গে কেক তৈরীতে ব্যস্ত মিমি, শেয়ার করলেন রেসিপি
বর্তমানে আবার সেই বিষয়কে ঘিরে উত্তাল দেশ। সিএএ নিয়ে মানুষের মনে একাধিক অনিশ্চয়তা, প্রশ্ন। সেই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের প্রচারেই আবার কেন্দ্রিয় শাসক দল অস্ত্র করল ঋত্বিক ঘটকের ছবির কিছু মুহুর্তকে। তাঁর হাতে তৈরি দেশভাগ নিয়ে ট্রিলজি মানুষের মনে আজও জীবন্ত। তেমনই বিষয়ের একটি ছবি হল কোমলগান্ধার। সেই ছবিরই বেশ কিছু অংশকে এবার হাতিয়ার করল বিজেপি। তবে রাজনৈতিক প্রচাারে কেন আসছে একজন পরিচালকের নাম! মুহুর্তে প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই।
এবার নিরবতা ভেঙে প্রকাশ্যেই এর বিরুদ্ধে সরব হলেন ঘটক পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার এক প্রেস বিবৃতিতে তারা জানায়, “যে আইন দেশের সাধারণ মানুষকে তাঁদের নাগরিকত্ব নতুন করে প্রমাণ করা এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অগণিত মানুষকে পরিচয়হীন করার সম্ভাবনা রাখে, তার সমর্থনে ঋত্বিক ঘটকের ছবির অংশ ব্যবহার করা আমাদের কাছে মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। যে মূল্যবোধ পরিচালকের জীবনের শিকড় ছিল, এই ঘটনা তার সম্পূর্ণ বিরোধী।’’ পরিবারের মোট ২৪ জন সদস্য মিলে এই বিবৃতি দিয়েছেন। ঋত্বিক ঘটক একজন আদ্যপান্ত বামপন্থী, তাঁর মতাদর্শকে অস্ত্র করে সিএএ প্রচারে এক ভিন্ন মতাদর্শের রাজনৈতিক দল, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই একাধিক তোপের শিকার হতে হয় বিজেপিকে।