
প্রফুল প্যাটেলের চেয়ার আঁকড়ে পড়ে থাকা, ফিফার নির্বাসন, সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ, ফিফার নির্বাসন মুক্তি। নানা ঘাত-প্রতিঘাতের পর অবশেষে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা পেল তাদের নতুন সভাপতিকে। আর প্রথমবার এক ফুটবলারের হাতে উঠল দেশের ফুটবলের দায়িত্ব। লড়াইটাও মূলত ছিল দুই ফুটবলারের। একদিকে দেশের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা কিংবদন্তী স্ট্রাইকার বাইচুং ভুটিয়া। অপরদিকে জাতীয় দলের প্রাক্তন গোলরক্ষক কল্যাণ চৌবে। এই লড়াইতে যে কল্যাণ অনেকটা এগিয়ে ছিল তা আগে থেকেই জানা ছিল। আর আর এআইএফএফের ভোটের ফল প্রকাশেও তা আরও স্পষ্ট হল। স্ট্রাইকার বাইচুং ভুটিয়ার অ্যাটাককে রুখে দিলেন গোলক্ষক কল্যাণ চৌবে।ভোটে বাইচুং ভুটিয়াকে একতরফাভাবে ৩৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার নয়া সভাপতি নির্বাচিত হলেন প্রাক্তন গোলরক্ষক তথা বর্তমানে বিজেপি নেতা কল্যাণ চৌবে।
নির্বাচবে বাইচুং ভুটিয়ার লড়াই যে একেবারেই সহজ ছিল না তা প্রথম থেকে জানতেন নিজেও। কারণ নির্বাচনে নিজের রাজ্য সিকিমের সমর্থন পাননি। যা নিয়ে ক্ষভও উগরে দিয়েছিলেন প্রাক্তন তারকা ফুটবলার। নির্বাচনে বাইচুং লড়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশ ফুটবল সংস্থার হয়ে। সমর্থন করেছিল রাজস্থান ফুটবল সংস্থা। অন্য দিকে, কল্যাণ দাঁড়িয়েছিলেন গুজরাত রাজ্য সংস্থার হয়ে, যে রাজ্যের বাসিন্দা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কল্যাণ নিজেও বঙ্গ বিজেপির সক্রিয় সদস্য। কেন্দ্রীয় শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় প্রথম থেকেই কল্যাণের পাল্লা অনেকটাই ভারি ছিল। তবে ফলাফল যে ৩৩-১ হবে তা অনেকেই ভাবেননি। কল্যাণের জয়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির পর ফের এক বাঙালিকে দেখা ভারতীয় ফুটবলের প্রশাসনিক মসনদে।
প্রসঙ্গত, ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে ফুটবল কেরিয়ারে সাফল্য পেলেও রাজনৈতিক কেরিয়ারে খুব একটা সাফল্য কোনও দিনই পাননি কল্যাণ চৌবে। ফুটবলকে বিদায় জানানোর পর সক্রিয় রাজনীতিতে আসেন কল্যাণ। দীর্ঘ বছর ধরে রাজনীতি করেছন। তবে রাজনৈতিক কেরিয়ারে যে দুবার নির্বাচনে লড়েছেন কল্যাণ সেই দুবারই হারের মুখ দেখতে হয়েছিল। ২০১৫ সালে যোগ দেন বিজেপি-তে। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে কৃষ্ণনগর থেকে তাঁকে প্রার্থী করে বিজেপি। তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রর কাছে হেরে যান। এর পর ২০২১ বিধানসভা ভোটে মানিকতলা থেকে বিজেপি প্রার্থী হন। সেখানে হারেন তৃণমূলের সাধন পাণ্ডের কাছে। তবে ভারতীয় ফুটবলের প্রশাসনিক নির্বাচনে দাঁড়িয়ে প্রথমবারেউ বাজিমাত করলেন কল্যাণ। এখন তার সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ অনূর্ধ্ব ১৭ মহিলা বিশ্বকাপ সাফল্যের সঙ্গে আয়োজন করা। সেই দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত কল্যাণ চৌবে।