
সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার নির্বাচন নিয়ে ডামাডোল, সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসক কমিটি গঠন, তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কারণে ভারতকে ফিফার নির্বাসনে পাঠানো, নানা সমস্যা,সব কিছুই এখন অতীত। ফিফার নিয়ম মেনে ও কেন্দ্রীয় সরকারের আবেদন মেনে শীর্ষ আদালত প্রশাসক কমিটি ভাঙার কিছু দিনের মধ্যেই উঠে যায় ভারতের উপর থেকে ফিফার নির্বাসন। চলতি মাসের ২ তারিখ এআইএফএফের নির্বাচনে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হন কল্যাণ চৌবে। বর্তমানে অন্ধকারের শেষে ফের আলোর রাস্তায় ভারতীয় ফুটবল। আর সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার সর্বোচ্চ আসনে বসার পর প্রথমবার ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে দেখা করলেন কল্যাণ চৌবে। দুজনের মধ্যে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলেও খবর।
এআইএফএফের নতুন সভাপতি হওয়ার পর থেকেই ফিফা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কল্যাণ চৌবের দেখা করার কথা একটা কথ শোনা যাচ্ছিল। কাতারে গিয়ে জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে দেখা করলেন কল্যাণ চৌবে। সঙ্গে ছিলেন সেক্রেটারি জেনারেল শাজি প্রভাকরণ। সেই ছবিও সামনে এসেছে। ফিফার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারায় আপ্লুত কল্যাণ চৌবে। ফেডারেশনের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে,'দোহায় ফিফা দপ্তরে সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে দেখা করেন এআইএফএফ প্রেসিডেন্ট কল্যাণ চৌবে ও সেক্রেটারি জেনারেল সাজি প্রভাকরণ।' এছাড়াও সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে,ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং উন্নতির রূপরেখা নিয়ে ইনফান্তিনোর সঙ্গে আলোচনা করেছেন কল্যাণ। ভারতীয় ফুটবলে উন্নতির মূল বিষয়গুলি কী কী এবং কী ভাবে সেই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইনফান্তিনো জানিয়েছেন, অদূর ভবিষ্যতে ভারতে আসবেন তিনি। ফিফা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় সন্তুষ্ট কল্যাণ চৌবে।
প্রসঙ্গত, সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার প্রেসিডেন্ট পদে কল্যাণ চৌবের প্রধান প্রতীদ্বন্দ্বী ছিলেন বাইচুং ভুটিয়া। তবে প্রথম থেকেই নির্বাচনে অনেকটাঅ অ্যাডভান্টজে ছিলেন কল্যাণ। নির্বাচনে বাইচুং ভুটিয়ার লড়াই যে একেবারেই সহজ ছিল না তা প্রথম থেকে জানতেন নিজেও। কারণ নির্বাচনে নিজের রাজ্য সিকিমের সমর্থন পাননি। যা নিয়ে ক্ষোভও উগরে দিয়েছিলেন প্রাক্তন তারকা ফুটবলার। নির্বাচনে বাইচুং লড়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশ ফুটবল সংস্থার হয়ে। সমর্থন করেছিল রাজস্থান ফুটবল সংস্থা। অন্য দিকে, কল্যাণ দাঁড়িয়েছিলেন গুজরাত রাজ্য সংস্থার হয়ে, যে রাজ্যের বাসিন্দা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কল্যাণ নিজেও বঙ্গ বিজেপির সক্রিয় সদস্য। কেন্দ্রীয় শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় প্রথম থেকেই কল্যাণের পাল্লা অনেকটাই ভারি ছিল। নির্বাচনের ফলেও দেখা যায় বাইচুং ভুটিয়াকে ৩৩-১ ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছে কল্যাণ চৌবে। যদিও তার হারের পেছনে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছিলেন বাইচুং। যদিও তা বেশি সময় ধোপে টেকেনি। নতুন দায়িত্ব পেয়ে ভারতীয় ফুটবলে উন্নতের শিখরে নিয়ে যাওয়াই যে প্রধান লক্ষ্য সেই কথা জানিয়েছেন কল্যাণ চৌবে।