বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় হয়েছিল আন্দোলন, ২১ ফেব্রুয়ারি বাঙালির প্রকৃত শহিদ দিবস
মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রথম আন্দোলন শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের বুকে। ১৯৪৭ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে এই আন্দোলনের জন্ম। ৯৫২ সালে তা ব্যাপকতা লাভ করে। যার জেরে বাংলাদেশ যা তখন পূর্ব পাকিস্তান নামে পরিচিত ছিল সেখানে ঢাকায় বাংলা ভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে কয়েকজন শহিদ হন এবং শতাধিক মানুষ জখম হন। ১৯৯৮ সালে এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো।
Asianet News Bangla | Published : Feb 21, 2020 3:59 AM IST / Updated: Feb 21 2020, 10:37 AM IST
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে ঢাকার রাস্তায় চলছে সজ্জা।
ভারত ভেঙে জন্ম হয়েছিল দুটি দেশের। এরমধ্যে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশ। সে সময় বাংলাদেশ পরিচিত ছিল পূর্ব পাকিস্তান নামে। কিন্তু, পূর্ব পাকিস্তানে সরকারি ভাষা হিসাবে উর্দূ-র নাম ঘোষণা হতেই প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন বাঙালিরা।
বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা করার দাবিতে ১৯৪৭ সালে শুরু হয় আন্দোলন। সেই বছর নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ঢাকার রাস্তায় শুরু হয় বিক্ষোভ-আন্দোলন।
ভাষা দিবস উপলক্ষে ঢাকার আরও এক ছবি। ইতিহাস- ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন ঢাকার বুকে ব্যাপকতা লাভ করে। পুলিশ ঢাকার রাজপথে ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা জারি করেছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এগিয়ে চলে।
ইতিহাস- ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা অমান্য করে এগিয়ে চলা প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে আব্দুল বরকত, আব্দুল জববার, আব্দুস সালাম, রফিক ও শাফিউর শহিদ হন। পুলিশের গুলিতে এবং পদপিষ্ট হয়ে জখম হন শতাধিক ছাত্র ও সাধারণ মানুষ।
ঢাকার শহিদ মিনারের আরও এক ছবি। যেখানে এক ছাত্রী ব্যস্ত দেওয়া চিত্র অঙ্কনে। ইতিহাস- ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি-তে মাতৃভাষার দাবিতে হওয়া মিছিলে পুলিশের গুলি চালানোর প্রতিবাদে ২২ ফেব্রুয়ারি উদ্বেল হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ। ঢাকার মেডিক্যাল কলেজ হস্টেল প্রাঙ্গণে সমাবেশ হয়। সেখানে শহিদ ছাত্র ও সাধারণ মানুষের স্মরণে গর্জে ওঠে মানুষ।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা উপলক্ষে কলকাতার রাস্তায় চলছে সজ্জা।
১৯৫২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি-র সকালের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজ হস্টেলের প্রাঙ্গণে তৈরি করা হয় শহিদ স্মৃতিস্তম্ভ। কিন্তু, তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের পুলিশ বাহিনী ২৬ ফেব্রুয়ারি তা গুঁড়িয়ে দেয়। এই ঘটনায় আরও গতি পায় ভাষা আন্দোলন।
কলকাতায় মাতৃভাষা আন্দোলনকে স্মরণ করে ভাষা দিবসের প্রতীকী মূর্তিতে শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানে প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়ী হয়। ৯ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলা-কে পাকিস্তানের অন্য়তম রাষ্ট্রভাষা হিসাবে মর্যাদা দেয় যুক্তফ্রন্টের প্রাদেশিক সরকার। আর ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি-কে ভাষা আন্দোলনের শহিদর স্মরণে শোকদিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
১৯৯৯ সালে ইউনেস্কোও এই দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বলে চিহ্নিত করে। সেই থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটি বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসাবে পালিত হয়ে আসছে।
ঢাকায় শহিদ দিবস পালনের জন্য রাস্তা জুড়ে আলপনা আঁকছে ছাত্র-ছাত্রীরা।
ফুলে ফুলে সাজিয়ে তোলা হয়েছে ঢাকার শহিদ মিনার।
লাল পলাশের বুক চিরে উঁকি মারছে ভাষা শহিদ দিবসের স্তম্ভ।