জ্যাকলিনের ফিনফিনে শাড়ি ও অশ্লীল ব়্যাপ, লোকগীতির রিমিক্সে বিপাকে বাদশাহ
"বড়লোকের বেটি লো লম্বা লম্বা চুল এমন মাথায় বেঁধে দেব লাল গেন্দা ফুল" এই লোকগীতি বাঙালির মধ্যে কতখানি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে তা নিশ্চই বলার অপেক্ষা রাখে না। আর এই গানকেই রিমিক্স হিসেবে বেছে নিলে যে বাঙালির আঁতে ঘা লাগবেই সেটা না বোঝার কোনও কারণ ছিল না বাদশাহর। সম্প্রতি তাঁর এবং জ্যাকলিন ফারন্যানডিজের গান 'গেন্দা ফুল' নেটদুনিয়ায় মারাত্মক রকমের ভাইরাল।
Adrika Das | Published : Mar 28, 2020 7:19 AM IST / Updated: Mar 28 2020, 02:46 PM IST
নিজের ব়্যাপের সঙ্গে লোকগীতির লিরিকস নিয়ে একটি রিমিক্স তৈরি করেছেন বাদশাহ। কিছু সংখ্যক বাঙালির তা পছন্দ হলেও, গানটির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে অসংখ্য বাঙালি।
দিন কতক আগে দোলের সময় রোদ্দুর রায়ের, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানকে বিকৃত করার অভিযোগ এসেছিল। গোটা বাঙালি জাতি রে রে করে উঠেছিল সেই সময়। একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে চলেছে বলে আশঙ্কা অনেকেরই।
বাদশাহর উপর বাঙালির ক্ষোভের কারণ বেশ কয়েকটি। প্রথমত গানের কম্পোজের বিষয়টি। ইউটিউবে গানের ডিটেলের সেকশনে গেলেই চোখে পড়বে অরিজিনাল লিরিকস হিসেবে কেবল লেখা বাংলা লোকগীতি।
মূল গানটি গেয়েছেন স্বপ্না চক্রবর্তী এবং লিখেছেন রতন কাহার। বীরভূমের শিউড়ির বাসিন্দা তিনি। তাঁর বিষয় কোনও খোঁজ খবর না নিয়েই অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়ে গানের কার্টেসিতে লোকগীতি লিখে দিয়েছেন বাদশাহ।
দ্বিতীয়ত একটি সুন্দর লোকগীতিকে প্রায় আইটেম নম্বর বানিয়ে ফেলা। বাঙালিদের অভিযোগ, এমন লোকগীতিকে আইটেম নম্বর বানানোর কি প্রয়োজন ছিল। রিমিক্স করে করে বলিউড এমনি সমস্ত ভালো গানকে ধ্বংশ করে দিচ্ছে, তার মধ্যে জ্যাকলিনকে ফিনফিনে শাড়ি পরিয়ে এমন গানে নাঁচানো ঠিক হয়নি।
জ্যাকলিনের হাবভাবও নাকি বেশ অশ্লীল ছিল গানের মধ্যে। তার সঙ্গে লিরিকসে নিতম্ব, কোমড়, জ্যাকলিনের শরীর নিয়ে যে ধরনের ব়্যাপ তিনি করেছেন তাতে যেকোনও বাঙালিরই প্রতিবাদ করাটাই স্বাভাবিক।
কয়েকজনের মতে, এতদিন এই গানটি শুনলে তথাকথিত হাই ক্লাস বাঙালি বলত, ইশ! এ কেমন গেঁয়ো গান। অথচ আজ বাদশাহর অশ্লীল ব়্যাপ এবং জ্যাকলিনের খোলামেলা পোশাকে গানটা বেশ পছন্দ হয়েছে।
অবাঙালিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার কিছু নেই। তাদের কাছে লোকগীতির প্রতি নস্টালজিয়া, আবেগ না থাকাটাই স্বাভাবিক। তবে বলিউডের জনপ্রিয় ব়্যাপার হওয়ার সত্ত্বেও এমনভাবে একটি লোকগীতিকে বিকৃত করা ঠিক হয়নি বাদশাহর।
সোশ্যাল মিডিয়া অসংখ্য নেটিজেনের পোস্টে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রত্যেকেই গানটির বিরোধিতা করেছেন। তাদের কথায়, যেকোনও গানেই মহিলাদের অবজেক্টিফাই না করলে বলিউডের পেটের ভাত হজম হয় না।
বলিউডের শিক্ষা হবে না। দেশ-বিদেশ থেকে বহু গান চুরি করে জঘন্য বেশ কিছু গান কম্পোজ করেছে। তারপরও চুরির স্বাদ মেটেনি তাদের। রিমিক্সের জমানায় অরিজিন্যালিটি হারিয়ে ফেলছে বলিউড।