ভারত তথা এশিয়ার প্রথম বিশ্বজয়ী অধিনায়ক (World Cup Wining Captain)। ভারতের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডার। ৪০০-র বেশি উইকেট, ৫০০০-এর বেশি রান সংগ্রহকারী একমাত্র টেস্ট ক্রিকেটার (Test Cricketer)। তিনি কপিল দেব (Kapil Dev)। নিজের ক্রিকেট কেরিয়ারে গড়েছেন অসংখ্য রেকর্ড। ক্রিকেট মাঠের মতই তার ব্যক্তিগত জীবন অর্থাৎ প্রেম ও বিয়ের কাহিনিও খুবই ইন্টেরেস্টিং। ৬ জানুয়ারি কপিল দেবের জন্মদিন (Happy Birthday Kapil Dev) উপলক্ষ্যে চলুন জানা যাক কিংবদন্তী কপিল দেব ও তার স্ত্রী রোমি ভাটিয়ার প্রেম কাহিনি (Love Story)।
কপিল দেব, পুরো নাম কপিল দেব রামলাল নিখঞ্জ। ভারতীয় তথা বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম কিংবদন্তী তিনি। ১৯৭৫ সালে ঘরোয়া ক্রিকেট হরিয়ানা বনাম পঞ্জাব ম্যাচ দিয়ে নিজের ক্রিকেট কেরিয়ার শুরু করেছিলেন কপিল। ১৯৮৩ সালে কপিলের নেতৃত্বেই প্রথম বিশ্ব জয়ের স্বাদ পেয়েছিল টিন ইন্ডিয়া।
212
২২ গজে অসংখ্য রেকর্ডের পাশাপাশি নিজের 'লাভ লাইফ'-ও খুবই রোমাঞ্চকর কপিল দেবের। সেখানে প্রেম, রোমান্স, দুঃখ, লড়াই সব মশালাই রয়েছে। যেই গল্প কোনও বলিউড মুভির থেকে কম নয়।
312
১৯৮০ সালে কপিল দেব রোমি ভাটিয়াকে বিয়ে করেছিলেন। দুজনেই প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন। কিন্তু নিজের মনের কথা রোমিকে বলার জন্য বহুদিন সময় নিয়েছিলেন কপিল সাহস অর্জনের জন্য।
412
এক সাক্ষাৎকারে কপিল জানিয়েছিলেন, রোমির সঙ্গে কপিলের আলাপ করিয়ে দিয়েছিলেন সুনীল ভাটিয়া নামে এক কমন বন্ধু। সেটা সাতের দশকের শেষ দিক। প্রথম দেখাতেই রোমির সপ্রতিভ রূপে মুগ্ধ হয়ে যা হরিয়ানা হ্যারিকেন।
512
আলাপ হওয়ার পরে বেশ কিছু দিন কেটে গেলেও দু’জনে মনের ভাব প্রকাশ করতে পারছিলেন না। কপিল সেই সময় লাজুক ছিলেন বলে জানিয়োছেন রোমি। ধীরে ধীরে একে অপরের সঙ্গে সময় কাটাতে থাকেন কপিল ও রোমি। দুজনে দীর্ঘ সময় ল্যান্ড লাইনে কথা বলতেন। সে সময় কপিল থাকতেন হরিয়ানায় এবং রোমি দিল্লিতে। ফলে এসটিডি কলে প্রচুর বিল আসায় এসটিডি কানেকশন ছেড়ে দেয় দুই পরিবার। যার ফলে সাময়ীক ছেদ পড়ে কপিল-রোমি রোমান্সে।
612
পরে সেই সমস্যার সমাধানও বের করেন কপিল। কোনও ম্যাচ খেলতে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে কপিল এয়ারপোর্টে পৌছে যেতেন। সেখান থেকে এসটিডি বুথ থেকে ফোন করতেন রোমিকে। এইভাবে দুজন এগিয়ে নিয়ে যান তাদের প্রেম পর্ব।
712
রোমিকে প্রপোজোর পর্বও খুব ইন্টেরেস্টিং। ট্রেনে রোমিকে প্রপোজ করেছিলেন কপিল দেব। দু’জনে তখন একসঙ্গে ট্রেনে যাচ্ছিলেন। রোমিকে সে সময় কপিল জিজ্ঞাসা করেছিলেন সেই সময়কার ট্রেনের জানালার বাইরের দৃশ্য তিনি ক্যামেরাবন্দি করে রাখতে চান কি না। যাতে পরে সেই ছবি তাঁদের সন্তানদের দেখানো যায়। সেই সময় ট্রেনের জানলা দিয়ে কপিলের করা বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং দেখা যাচ্ছিল। যার পর লজ্জায় লাল হয়ে যান রোমি ও প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান।
812
প্রেমিকাকে ইমপ্রেস করার জন্য নিজের ম্যাচ দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন কপিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভারত সফরের টেস্ট সিরিজের ওই পঞ্চম ম্যাচ শেষ অবধি অমীমাংসিত থেকে যায়। তবে কপিলের কাছে এই ম্যাচ নানা কারণে স্মরণীয়। গ্যালারিতে প্রেমিকার সামনে তিনি প্রথম টেস্ট শতরান পেয়েছিলেন এই ম্যাচে।
912
তারকা হওয়ার পর শোনা যায় সেই সময় কপিলের জীবনে আসেন বলিউড অভিনেত্রী সারিকা। দুজনের মধ্যে সম্পর্ক বেশ কিছুদূর এগোয় বলেও শোনা যায়। যদিও পরে সেই খবর জানার পর নিজের সম্পর্ক রাশ আরও মজবুত করেন রোমি।
1012
এরপরই কপিল ও রোমি দুজনে বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেন। কিন্তু প্রথমে দুই পরিবারের তরফ থেকে তাদের সম্পর্ক মেনে নেয়নি। কিন্তু পরিবারের অমতে বিয়ে করতে চাননি রোমি ও কপিল। তাই তারা কিছু দিন অপো করার সিদ্ধান্ত নেন।
1112
অবশেষে ১৯৮০ সালে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে করেন কপিল দেব ও রোমি ভাটিয়া। বিয়ের পর কপিলের ক্রিকেট কেরিয়ারে ঝড়ের গতিতে উন্নতি হয়। বিশ্বকাপ জয়ের পাশাপাশি একাধিক রেকর্ড গড়েন তিনি।
1212
দাম্পত্য জীবনের ১৪ বছর পর কপিল-রোমির পরিবারে আসে তাদের কন্যা সন্তান। সেই বছরই ক্রিকেটকে বিদায় জানান কপিল দেব। বর্তমানে স্ত্রী, কন্যাকে নিয়ে নিজের অবসর জীব কাটাচ্ছেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক।