করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে এই দেশে। সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রেকের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ৪২ লক্ষের গণ্ডি পার করেছে। দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছে ৯০ হাজারেরও বেশি মানুষ। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দিল্লির এইমস হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রণদীপ গুলেরিয়া মেনে নিয়েছেন দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় তরঙ্গ শুরু হয়ে গেছে। একই সঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, এমন সময় করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভারতের আছড়ে পড়ছে যখন দেশের মানুষ স্বাভাবিক ছন্দে ফেরার প্রবল চেষ্টা চালিয়ে যাচচ্ছে। কারণ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে আনলক। আর এই মাসে ৬ ও ৭ তারিখে দেশে গড় আক্রান্তের সংখ্য়া ৯০ হাজার। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে কী করে ভারত লড়াই চালাবে করোনার মারাত্মক ছোঁয়াচে জীবানুর বিরুদ্ধে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। মহারাষ্ট্র, দিল্লি, অন্ধ্রপ্রদেশসহ একাধিক রাজ্য নতুন করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। আবার পশ্চিমবঙ্গ, উত্তর প্রদেশ, বিহারসহ একাধিক রাজ্যেই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শহর ছাড়িয়ে গ্রামে পৌঁছে গেছে।
211
দীর্ঘ দিন ধরেই করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করছে ভারত। মার্চ মাস থেকে লকডাউনের পথেও হেঁটেছে। এই অবস্থায় দেশের অর্থনীতি প্রায় তলানিতে এসে ঠেকেছে। তাই বর্তমান ভারত শুরু করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধেই লড়ছে না। একই সঙ্গে জিডিপিও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।
311
যার ফলে বেড়েছে বেকারত্ব। পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধির অশনিসংকেতও দেখতে শুরু করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। সরকারের ভাণ্ডার প্রায় ফাঁকা। এই অবস্থায় কিছুটা কঠিন পরিস্থিতিতে শুরু হয়েছে আনলক-৪। সেখানে অনেকটাই বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে চলাফেরার ওপর।
411
আর তাতেই আশঙ্কার কালো মেঘ দেখতে শুরু করেছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। কারণ অধিক পরিমাণে মানুষের সমাগম করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আরও দ্রুততার সঙ্গে বাড়িয়ে দিতে পারবে বলেই তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
511
আর এই পরিস্থিতিত সামাল দিয়ে ভারতের স্বাস্থ্য পরিষেবা কতটা কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে তাই নিয়েই উঠতে শুরু করে প্রশ্ন। কারণ ভারতের স্বাস্থ্য় পরিষেবা মূলত শহরকেন্দ্রিক। আর অধিকাংশ বেসরকারি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
611
কেন্দ্রের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী ভারতে চিকিৎসকের সংখ্যা পর্যপ্ত নয়। প্রাক কোভিড ১৯ যুগে ভারতে ৫ লক্ষ চিকিৎসকের অভাব ছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া হিসেব অনুযায়ী চিকিৎসক আর রোগীর অনুপাত হওয়া উচিৎ ১: ১০০০ আর ভারতে রয়েছে ১ : ১৫৯৬। তবে গ্রামাঞ্চের অবস্থা আরও সংকটজনক।
711
ভারতের সমস্ত রোগীর প্রায় ৭০ শতাংশই বেসরকারি ডাক্তার বা ক্লিনিকের ওপর ভরসা করেন। তবে করোনাভাইরাস চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতাল বা চিকিৎসাক্ষেত্রগুলি এখনএ পর্যন্ত তেমন সাড়া জাগাতে পারেনি।
811
তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ভারতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার ওপর অনেকটাই চাপ বেড়েগেছে বলে বলে দাবি করেছেন চিকিৎসকরা। তবে সেক্ষেত্রেই রয়েছে অর্থের টানাটানি।
911
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় তরঙ্গ প্রতিহত করতে সকরারের উচিৎ তিনটি বিষয়ে জোর দিতে। সেগুলি হল করোনাভাইরাসের আক্রান্ত ব্যক্তিদের সনাক্ত করা। প্রাথমিক কারণ জানা প্রয়োজন।
1011
দ্বিতীয়ত শহরের পাশাপাশি গ্রামগুলিতেও উন্নত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়ে তোলা। একই সঙ্গে পিপিই কিট সরবরাহ করা। গ্রামীণ কন্টেন্ট জোনগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা আরও বাড়িয়ে দেওয়া।
1111
তৃতীয়ত মাস্কের ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব আরও জোরদার করা। করোনা স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে আরও যত্নবান হওয়ার পাশাপাশি সচেতনা বাড়ানো। একই সঙ্গে গণপরিবহণ ব্যবস্থা আর পাব্লিকপ্লেসে নজরদারি চালানো।