রাম মন্দির নিয়ে কংগ্রেসের দাবি নস্যাৎ, তালা খোলার বিষয়ে জানতেনই না রাজীব, বিতর্ক উস্কালেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু

দীর্ঘ  অপেক্ষার পর ৫ আগস্ট অযোধ্যায় রাম মন্দির  নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নিজের হাতে ভূমিপুজো করে মন্দিরের শিলান্যাস করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আপাত দৃষ্টিতে এটি একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান হলেও, এর নেপথ্যে যে গভীর রাজনীতি আছে, তা এদেশের সকল রাজনীতি সচেতন মানুষেরই জানা। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ভাবাবেগকে হাতিয়ার করে ভোট ব্যাঙ্ক তৈরির লক্ষ্যে মন্দির নির্মাণের কৃতিত্ব নিয়ে দড়ি টানাটানি শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের দুই প্রধান রাজনৈতিক দলের মধ্যে। বিজেপি শুরু থেকেই মন্দির আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। স্বাভাবিকভাবেই, মন্দির নির্মাণের প্রাথমিক কৃতিত্ব তাদেরই প্রাপ্য। কিন্তু খানিকটা আশ্চর্য হলেও সহসা কংগ্রেসেরও রামভক্তির উদয় হয়েছে। বিজেপিকে একা এই মন্দির নির্মাণের ‘ক্রেডিট’ দিতে নারাজ তাঁরা। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে যে রাজীব গান্ধী রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু সেই দাবি ঘিরেই দানা বাঁধল নতুন বিতর্ক। রাজীব গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসাবে পরিচিত ওয়াজাহাত হাবিবুল্লাহ তাঁর বইতে দাবি করেন যে রাজীব এই বিষয়ে কিছু জানতেন না।

Asianet News Bangla | Published : Aug 20, 2020 2:22 AM IST
110
রাম মন্দির নিয়ে কংগ্রেসের দাবি নস্যাৎ, তালা খোলার বিষয়ে জানতেনই না রাজীব, বিতর্ক উস্কালেন ঘনিষ্ঠ বন্ধু

কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ঘনিষ্ঠ কমল নাথের দাবি, কংগ্রেস শুরু থেকেই রাম মন্দিরের পক্ষে। রাজীব গান্ধীর আমলেই প্রথমবার মন্দিরের শিলান্যাস হয়। সাধারণ মানুষের জন্য মন্দিরের দরজাও খুলে দিতে চেয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী।

210

 এক সর্বভারতীয় সাক্ষাৎকারে কমল নাথ  বলেছেন,”আমি শুরু থেকেই বলছি, মন্দির নির্মাণকে সমর্থন করি। ভারতই একমাত্র দেশ যেখানে সবার সম্মতিতে এভাবে মন্দির নির্মাণ সম্ভব। ভুলে গেলে চলবে না যে ১৯৮৬-তে রাম মন্দিরের দরজা কিন্তু রাজীব গান্ধীই খুলেছিলেন। ১৯৮৯ সালেই একরকম ভূমিপুজো হয়ে গিয়েছিল। রাজীব ভোটের প্রচারেও রামরাজ্যকেই স্লোগান করেছিলেন।”

310

শুধু কমলনাথ নয়, রামমন্দির বিবাদ ইস্যুতে অনেকেরই ধারণা যে ১৯৮৬ সালে বাবরি মসজিদের দরজার তালা খোলার নেপথ্যে ছিলেন রাজীব গান্ধী।
 

410

তবে কংগ্রেসের এহেন দাবিকে নস্যাৎ করে রাজীব গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু হাবিবুল্লাহ নিজের বইতে লেখেন, 'আমি প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম মন্দিরের তালা খোলার বিষয়ে তিনি জানতেন কিনা। তাতে তিনি আমাকে জবাব দিয়েছিলেন, কোনও সরকারেরই উপাসনার জায়গা নিয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আমি এই বিষয়ে বীর বাহাদুর সিংকে (তৎকালীন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী) জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তবে আমার মনে হয় এর পিছনে ছিলেন অরুণ নেহরু এবং মাখল লাল ফতেদার। যদি তা সত্যি হয়, তবে আমাক কোনও একটি পদক্ষেপ নিতে হবে।'

510

হাবিবুল্লাহ জম্মু ও কাশ্মীর ক্যাডারের একজন প্রাক্তন আইএএস অফিসার। রামমন্দির অধ্যায়ের যেই পর্বের উল্লেখ করা হচ্ছে, সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর দফতরে কাজ করছিলেন হাবিবুল্লাহ। 

610

গতবছর অযোধ্যার জমি বিবাদ মামলার নিষ্পত্তি ঘটিয়ে শীর্ষ আদালত বিতর্কিত জমিটি রামলালা বিরাজমানকে দেওয়ার রায় দেয়। এই পরিস্থিতিতে রামমন্দির নিয়ে বিজেপির পালের হাওয়া কাড়তে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল যে রাজীব গান্ধী রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে ছিলেন।

710

১৯৮৬ সালে ফৈজাবাদের আদালত রাম জন্মভূমির তালা খোলার এবং সেখানে হিন্দুদের প্রার্থনা করার অধিকার প্রদান করে রায় দিয়েছিল৷ তবে যেদিন এই রায়দান করা হয়, সেদিন নাকি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী দেশের খরা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন।

810

তবে পরবর্তীতে ১৯৮৯ সালের ১৪ অগাস্ট অযোধ্যার বিতর্কিত জমিটিতে যেভাবে পুজো চলছে তা চালু রাখার নির্দেশ দেয় আদালত। এর পরেই রাজীব গান্ধী শাসিত দিল্লির কংগ্রেস সরকার ভিএইচপি-কে রামমন্দিরের শিলান্যাসের অনুমতি দেয়। রামমন্দিরের প্রথম ইঁটটি স্থাপন করা হয়।

910

এদিকে কংগ্রেস যতই গলা ফাটাক রাম মন্দির ইস্যুতে নিজের পুরনো দলকে কটাক্ষ করলেন জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াও। তাঁর নিশানায় কার্যত মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ  এবং কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। সিন্ধিয়ার কথায়, রাজীব গান্ধী বাবরি মসজিদের তালা খুলেছিলেন কি না, তা জানে না কংগ্রেসই।

 

1010

গত ৫ আগস্ট রাম মন্দিরের ভূমিপুজোর দিন কমলনাথ বলেছিলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীই বাবরি মসজিদের তালা প্রথম খুলেছিলেন। সেই প্রসঙ্গেই সিন্ধিয়া বলেন, ‘‘‌একদিকে তিনি (‌কমলনাথ)‌ বলছেন রাজীব গান্ধী বাবরি মসজিদের তালা খুলেছিলেন। অন্যদিকে শশী থারুর বলছেন, না তিনি তালা খোলেননি। কংগ্রেস নিজেই জানে না, তাঁদের নেতৃত্ব কী করেছে আর কী করেনি।’‌’

Share this Photo Gallery
click me!

Latest Videos