মুসলিমদের বন্দি করতে ৪০০-র বেশি কয়েদখানা, উপগ্রহ চিত্রে ফাঁস বেজিং-এর মিথ্যা বয়ান, দেখুন

চিনে উইঘুর মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জন্য বন্দি শিবির তৈরির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। তবে, চিন সরকার বরাবর দাবি করেছে সেগুলি বন্দি শিবির নয়, বরং শিক্ষাকেন্দ্র। তারা আরও বলেছে বর্তমানে আর এই ধরণের শিক্ষাকেন্দ্র তকা তৈরি করে না। কিন্তু, এক অস্ট্রেলিয়ান থিংক ট্যাঙ্ক-এর সাম্প্রতিক গবেষণায় ফের বেজিং মুখের কথা এবং কাজে আকাশ-পাতাল ফারাক ধরা পড়ে গিয়েছে।

 

amartya lahiri | Published : Sep 24, 2020 1:17 PM IST / Updated: Oct 14 2020, 08:24 AM IST
110
মুসলিমদের বন্দি করতে ৪০০-র বেশি কয়েদখানা, উপগ্রহ চিত্রে ফাঁস বেজিং-এর মিথ্যা বয়ান, দেখুন

অস্ট্রেলিয় স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউট বা এএসপিপি সম্প্রতি বেশ কিছু উপগ্রহ চিত্র সংগ্রহ করেছে যাতে দেখা যাচ্ছে বর্তমানে অন্তত ১৪টি বন্দি শিবির নির্মাণের কাজ চলছে। এছাড়া ২০১৭ সালের মধ্যেই ৩৮০ টি এইরকম ভবন তৈরি করা হয়েছিল।

210

এই অজি সংস্থার অন্যতম গবেষক নাথান রুসার দাবি করেছেন, চিনা কর্তৃপক্ষ দাবি করে এই পুনর্শিক্ষা কেন্দ্রগুলি থেকে স্নাতক হয়ে গেলেই বাসিন্দাদের মুক্তি দেওয়া হয়। আর এইরকম নতুন কোনও কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে না। কিন্তু, বাস্তবটা হল, এর মধ্যে বেশ কিছু ভবন রয়েছে, যেগুলি আগতে কারাগার ছাড়া কিছু নয়। আর ২০১৯ এমনকী ২০২০ সালেও নতুন নতুন কেন্দ্রগুলি নির্মিত হয়ে চলেছে।

 

310

শিনজিয়াং তথ্য প্রকল্প নামে অনলাইনে এই বিষয়ে বেশ কিছু উপগ্রহ চিত্র এবং অন্যান্য তথ্য প্রকাশ করেছে এএসপিআই। সংস্থার গবেষকরা জানিয়ছেন রাত্রে ভবনগুলিতে আলো জ্বলে বলে, সেই সময়ের উপগ্রহ চিত্রগুলিতে শহরের বাইরের সদ্য নির্মিত বন্দি শিবিরগুলির ছবিগুলি পরিষ্কার দেখা গিয়েছে। দিনের বেলায় বন্দি শিবিরগুলি নির্মাণের কাজ হওয়ার ফুটেজ-ও রয়েছে তাদের কাছে।

410

বিভিন্ন সময়ে মানবাধিকার কর্মী ও উইঘুর অধিকার রক্ষাকর্মীরা, শিনজিয়াং প্রদেশের এই বন্দি শিবিরগুলিতে আটক নারী-পুরুষদের দিয়ে জোর করে বিভিন্ন কারখানায় কাজ করানোর অভিযোগ করেছেন। এএসপিআইয়ের গবেষণা বলছে তাদের অভিযোগ সম্ভবত সত্য। কারণ বেশিরভাগ বন্দি শিবিরগুলিই তৈরি করা হয়েছে শিল্পাঞ্চলে।

 

510

প্রাথমিকভাবে, চিন দাবি রেছিল শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুরদের আটক করার জন্য কোনও কেন্দ্রই নেই। পরে তারা বলেছিল এই শিবিরগুলি আসলে একটি বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। সন্ত্রাসবাদের হুমকি প্রতিরোধ ও দারিদ্র্য মোচনের  লক্ষ্যেই এই পুনর্শিক্ষাকেন্দ্রগুলি তৈরি করা হয়েছে। গত বছর-ও চিন সরকারের এই পদস্থ কর্তা দাবি করেছিলেন, পুনর্শিক্ষাকেন্দ্রের বেশিরভাগ বাসিন্দায় সামাজিক জীবনে ফিরে গিয়েছে। তবে তারপরেও সেই ভবনগুলিতে সাংবাদিক, মানবাধিকারকর্মী এবং কূটনীতিকদের যেতে দেয় না জিনপিং সরকার।

610

শিনজিয়াং-এ ছিক কী ঘটে, সেই সম্পর্কে বহির্বিশ্বের কাছে বিশেষ তত্য াসে না। চিন সরকারের পক্ষ থেকে এি বিষয়ে কঠোর গোপনিয়তা রক্ষা করা হয়। এই শিবিরগুলি থেকে পালিয়ে বিদেশে আশ্রয় নেন উইঘুর সম্প্রদায়ের অনেকেই। তাঁদের বর্ণনা এবং কোনওভাবে ফাঁস হওযা কোনো নথিই এই বিষয়ে জানার একমাত্র উপায়। নয়া গবেষণায় চিনে এই ধরণের বন্দি শিবিরের উপস্তিতি সম্পর্কে নিশ্চিত প্রমাণ মিলল। 

710

কোরান পাঠ, শূকরের মাংস খাওয়া অস্বীকার করা মতো বিষয়কে অপরাধ হিসাবে দেখিয়ে তাদের আটক করা হয়। কারাবাসের সময় চলে অকথ্য নির্যাতন। জোর করে নামমাত্র বেতনে শ্রমদানে বাধ্য করা হয়। এমনকী বন্দিরা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের চিকিত্সাও করানো হয় না।

810

একইভাবে, উইঘুর পরিবারগুলির বাড়িতে চিনা কর্মকর্তাদের নিয়মিত হানা দেওয়া রয়েছে। সকল সরকারী এলাকা এবং জনসমক্ষে উইঘুর মুসলিমদের সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ করা হয়। এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদও হয়েছে। কিন্তু অবস্থাটা বদলায়নি।

 

910

এএসপিআই-এর গবেষণায় দেখা গিয়েছে অনেক জায়গাতেই মাত্র একটি ভবন নিয়েই এই জাতীয় শিবির গড়ে তোলা হয়েছে। এগুলির বেশিরভাগই নির্মিত হয়েছে গত ৫ বছরের মধ্যে। তবে গবেষণায় এও দেখা গিয়েছে বন্দি শিবির নির্মাণের সংখ্যা আগের থেকে অনেকটাই কমেছে। উরুমকি শহরের বাইরে সবচেয়ে বড় শিবিরটি রয়েছে দবানচেংয়ে। ২০১৮ সালেই, এক কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে কমপক্ষে ১০০ টি ভবন নিয়ে এই শিবির তৈরি করা হয়েছিল।

 

1010

কাশগর এলাকায় অতি সম্প্রতি ২৫ হেক্টর এলাকা জুড়ে একটি নতুন বন্দি শিবির তৈরি করা হয়েছে। ১৪ মিটার উঁচু দেয়াল এবং বহু ওয়াচটাওয়ারদিয়ে শিবিরটি ঘেরা। কর্তৃপক্ষের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করলে অবশ্য বন্দিদের আরও সুরক্ষিত এবং গোপন শিবিরে পাঠানো হয়। তাদের অনেকেরই আর কোনও খবর পাওয়া যায় না।

 

Share this Photo Gallery
click me!

Latest Videos