করোনাভাইরাসের উৎস মহাকাশে, চাঞ্চল্যকর তত্ত্বে সাড়া ফেলে দিলেন দুই অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট

প্রায় এক বছর হতে চলল নভেল করোনাভাইরাস মহামারি সঙ্গে ঘর করছে গোটা বিশ্বের মানুষ। কিন্তু, এখনও ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেউ কেউ দাবি করেছেন, চিনের উহানের গবেষণাগারে এটি 'নকশা' করা হয়েছে, আবার কেউ কেউ বলেছেন, বাদুরের দেহ থেকে এসেছে এই ভাইরাস। অথচ, মহামনারির একেবারে শুরু থেকেই এই ভাইরাসটির উৎস সন্ধান করছেন গবেষকরা। মহামাকরি নিয়ন্ত্রণে এবং টিকা তৈরিতে এই তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি সাম্প্রতিক গবেষণা অবশ্য ভাইরাসটির উৎস হিসাবে একটি অবিশ্বাস্য দাবি করেছে, তাদের মতে এই ভাইরাস পৃথিবীরই নয়, এসেছে মহাকাশ থেকে। তার জন্যই কি বিজ্ঢানীরা এদত চেষ্টা করেও এই ভাইরাসের প্রতিষেধক তৈরি করতে পারছেন না বিজ্ঞানীরা?

 

amartya lahiri | Published : Oct 13, 2020 10:29 PM IST / Updated: Oct 30 2020, 04:16 PM IST
18
করোনাভাইরাসের উৎস মহাকাশে, চাঞ্চল্যকর তত্ত্বে সাড়া ফেলে দিলেন দুই অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট

গবেষণাপত্রটিতে শুধু কোভিড-১৯ নয়, ক্যানডিডা আউরিস নামে একটি ছত্রাকজনিত মহামারি রোগের উৎসও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তাদের দাবি এই দুটি মহামারির ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে তারা স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যযুক্ত। যা পৃথিবীর আগের কোনও সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে দেখা যায়নি। তাই তাঁদের মতে এই ভাইরাস এবং ছত্রাকের উৎস ধূমকেতূ বা উল্কাপিণ্ড বা ধূমকেতূ ও উল্কার ধূলিকণা হতে পরে।

 

28

গবেষণাটির নেতৃত্ব দিয়েছেন দুই অ্যাস্ট্রোবায়োলজিস্ট এডওয়ার্ড জে স্টিয়েল এবং এন চন্দ্র বিক্রমাসিংঘে। তাঁদের দাবি, ২০১৯ সালের ১১ অক্টোবর একটি উল্কাপিণ্ড পড়েছিল উত্তর-পূর্ব চিনে। তার থেকেই সম্ভবত প্রথমে উহান ও পড়ে বাকি চিনে এই মহামারি ছড়িয়ে পড়েছিল।

38

গবেষক দলটি দাবি করেছে ওই দিন উত্তর পূর্ব চিনের আকাশে 'একটি ব্যতিক্রমী উজ্জ্বল ফায়ারবল ইভেন্ট' দেখা গিয়েছিল। অর্থাৎ ওই দিন কোনও উল্কা বা ধূমকেতূ উত্তর পূর্ব চিনের আকাশে বাতাসের সঙ্গে ঘর্ষণে জ্বলে গিয়েছিল। নতুন গবেষণাটিতে অনুমান করা হয়েছে, ওই মহাজাগতিক বস্তুর ধ্বংসস্তূপগুলি সম্ভবত একটা বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে জমা হয়েছিল। পরের এক থেকে দেড় মাসে ধীরে ধীরে সেই ধ্বংসস্তূপের ধূলিকণা উহান এবং সংলগ্ন অঞ্চলগুলিতে নেমে আসে।

 

48

গবেষকরা আরও বলেছেন, ২০১৯ সালের নভেম্বরের শেষ এবং ডিসেম্বরের শুরুর দিকে যেভাবে উহান অঞ্চলে ভাইরাল নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়েছিল, তাতে মনে হতে পরে উহানের কাছাকাছি বা তার ওপরে একটি বিশাল 'ভাইরাল বোমা বিস্ফোরণ' হয়েছিল। আর এই বিস্ফোরণটিই ওই ফায়ারবল ইভেন্ট বলে মনে করছেন তাঁরা।

 

58

করোনা উৎসের এই তত্ত্বটি আষাঢ়ে মনে হতে পরে। তবে, জ্যোতির্বিজ্ঞান বলছে, দ্রুতগতিতে চলমান গ্রহাণু এবং ধূমকেতুর মাধ্যমে প্রাণ সারা মহাবিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। একে বিজ্ঢানের পরিভাষায় বলে 'প্যানস্পার্মিয়া'। বস্তুত, পৃথিবীতেও প্রাণ অন্য কোনও স্থান থেকে কোনও ধূমকেতূ বা উল্কার মাধ্যমেই এসেছিল বলে মনে করেন বিজ্ঞানী মহলের একটা বড় অংশ। কাজেই তত্ত্বটি উড়িয়ে দেওয়া যায় না।    

 

68

তবে কি করোনাভাইরাস কোনও বাদুরের দেহ থেকে আসেনি? মহাকাশ তত্ত্বের সমর্থকরা বলছেন, প্রাথমিকভাবে, অনুসন্ধানে বলা হয়েছিল, চিনের উহান শহরের এক সামুদ্রিক খাবারের বাজারে করোনাভাইরাস মহামারি প্রথম দেখা দিয়েছিল। তবে রবর্তী গবেষণায় দেখা গিয়েছে, চিনের প্রাথমিক রোগীদের প্রায় ৩০ শতাংশেরই উহানের ওই সামুদ্রিক খাবার এবং মাংসের বাজারের সঙ্গে কোনও সংযোগ ছিল না। কাজেই বাদুরের দেহ থেকে করোনা সাপ বা প্যাঙ্গোলিন হয়ে মানুষের দেহে ছড়িয়েছে এই তত্ত্বের সঙ্গে বর্তমান তথ্যের দ্বন্দ্ব রয়েছে।

 

78

জ্যোতির্বিজ্ঞানী গ্রাহাম লউ বলেছেন, তত্ত্বটি 'অসাধারণ' এবং 'আকর্ষণীয়' হলেও, এখনই তা গ্রহণ করার মতো যথেষ্ট কারণ নেই। তাঁর যুক্তি, ভাইরাসটির মধ্যে পার্থিব প্রাণীদের থেকে আলাদা রকমের বায়োমলিকুল বা জৈব-অনু নেই। তাই এটির উৎস পৃথিবীর বাইরে এমনটা ভাবার মতো কারণ নেই।

 

88

অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ধরণের তত্ত্ব সম্পর্কে মন্তব্য না করতে না চেয়ে জানিয়েছে, নতুন করোনভাইরাসটির উৎস একেবারে 'প্রাকৃতিক'। তবে তারাও তদন্তের পর বলেছে, ভাইরাসটির উৎস চিনের উহান নাও হতে পারে। প্রায় একই সময়ে বিশ্বের আরও বেশ কয়েকটি দেশে অস্বাভাবিক নিমোনিয়া-র রোগীর সন্ধান মিলেছিল। সেইসব রোগীরাও করোনা আক্রান্ত হয়েছিলেন, এমনটাও হতে পারে।

 

Share this Photo Gallery
click me!

Latest Videos