কীভাবে সিনেমার জগতে পা রাখলেন ঐশ্বর্য, জেনে নিন বচ্চনবধূর জীবনের এমনই কিছু তথ্য
দেখতে দেখতে পঁয়তাল্লিশ বছরে পা রাখলেন ঐশ্বর্য রাই। মিস ওয়ার্ল্ড হয়ে বিশ্বের নজরে পড়া ঐশ্বর্য এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঝুলিতে পুরেছেন এক একটি সাফল্য়। মডেলিং-এর জগত থেকে তিনি কেরিয়ার শিফট করে অভিনয় জগতকেই নিজের আইনডেন্টিটি হিসাবে মেলে ধরেছেন। অথচ, আশ্চর্যের বিষয় হল, বিশ্ব-সুন্দরীর খেতাব জয়ী ঐশ্বর্য রাই বচ্চন কখনও-ই চাননি চলচ্চিত্র জগতে পা রাখতে। স্কুল-কলেজের অন্যতম মেধাবী ছাত্রী হিসেবে তিনি নজর কেড়েছিলেন। শিক্ষকের অনুপ্রেরণাতেই তিনি চলে আসেন বিনোদন জগতে।
Jayita Chandra | Published : Apr 28, 2019 11:53 AM IST / Updated: Apr 29 2019, 11:38 AM IST
কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোর-এ ১ নভেম্বর ১৯৭৩ সালে ঐশ্বর্য রাই-এর জন্ম। আর্য বিদ্যামন্দিরের ছাত্রী ছিলেন তিনি। ক্লাসে বরাবরই প্রথম হতেন। তবলা ও ভরতনাট্যমেও ছোট্ট বয়সে শিক্ষিত হন ঐশ্বর্য। তার নৃত্য শিক্ষকের দাবী, কোনও একটা জিনিস তিনি করতে সক্ষম না হলে বারবার সেটা চেষ্টা করতেন, এরপরও যদি সেটা তার মনপূতঃ না হত, তাহলে তিনি কেঁদে ফেলতেন।
দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ভালো ফল করতে পারেনিন ঐশ্বর্য। অষ্টম স্থান দক্ষল করেন তিনি। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম করে দশম শ্রেণীর পরীক্ষায় ৯০ শতাংশ নম্বর পান তিনি। স্কুলে পড়ার সময়ই বিজ্ঞাপনে মডেল হিসাবে নাম লেখান তিনি। নবম শ্রেণিতে থাকার সময় তিনি ক্য়ামেলিন পেনসিল-এর অ্য়াড-এ মডেল হয়েছিলেন।
পড়াাশোনায় মেধাাবী ঐশ্বর্য প্রথমে অভিনয়ে আসতেই চাননি। কিন্তু সমানে সুযোগ আসতে থাকায় তিনি মত বদলান। রাজাহিন্দুস্তানী ছবির জন্য ধর্মেশ দর্শন প্রস্তাবও তিনি ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।
১৯৯৪-সালে মিস ইন্ডিয়া ওয়ার্ল্ড খেতাব জেতেন ঐশ্বর্য রাই। সকলেই আশা করেছিলেন তিনি মিস ইউনিভার্স হবেন। সেই বছর মিস ইন্ডিয়া হয়েছিলেন সুস্মিতা সেন। এর ফলে তিনি মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পান। অন্যদিকে ঐশ্বর্য রাই মিস ইন্ডিয়া-য় দ্বিতীয় স্থান পেয়ে অংশ নেন মিস ওয়ার্ল্ড প্রতিযোগিতায়। মিস ওয়ার্ল্ড অনুষ্ঠানের উপস্থাপক রিচার্ড তাঁকে ডেট করার আমন্ত্রণ জানালেও অতি বিনয়ের সঙ্গে না বলেছিলেন ঐশ্বর্য।
মিস ওয়ার্ল্ড খেতাব জেতার পর পড়াশুনো ছেড়ে দিয়েছিলনে নায়িকা। তবে ঐশ্বর্য রাই ক্যামেরার সামনে মোটেই সাচ্ছন্দ বোধ করতেন না প্রথমে। আমির খানের সঙ্গে এক বিজ্ঞাপনে মোটের ওপর ২০টি টেক দিয়েছিলেন তিনি। ঐশ্বর্য রাই-এর চলচ্চিত্র জগতে হাতেখড়ি কিন্তু তামিল ছবির মাধ্যমে, যার নাম ছিল উর্বর। বলিউডে তার প্রথম ছবি অর পেয়ার হো গ্যায়া । তবে সে ছবি সেভাবে জায়গা করতে পারেনি মানুষের মনে।
ঐশ্বর্য রাই-এর তৃতীয় ছবি হাম দিল দে চুকে সনম-এ প্রথম বিস্তর সাফল্যের মুখ দেখেছিলেন নায়িকা। আর তারপরই রাতারাতি হয়ে ওঠা সুপারস্টার। একে একে ছবির প্রস্তাব আসতে থাকে তার কাছে। একটি সাক্ষাৎকারে ঐশ্বর্য রাই জানিয়েছিলেন, তিনি আস্তিক। ভগবান সর্বদা তার জীবনের ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছেন। অনেক আশির্বাদ আছে বলে আবার এমনটাও নয় যে কোনও সমস্যার সন্মুখীন তিনি হননি। ঐশ্বর্য রাই প্রথম জীবনে মডেল থাকা অবস্থায় প্রথম সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছিলেন মডেলার রাজিব মুলচন্ডানীর সঙ্গে। কিন্তু এবিষয়টিকে ঐশ্বর্য রাই সবসময়ই প্রকাশ্যে অস্বীকার করেছেন।
বলিউড জগতে প্রীতি জিন্টা ঐশ্বর্য রাই-এর খুব ভালো বন্ধু বলেই পরিচিত। রানি মুখ্যোপাধ্যায়ও ছিলেন সেই তালিকায়। কিন্তু চলতে চলতে ছবিতে ঐশ্বর্য রাই-এর পরিবর্তে পরিচালক রানিকে বেছে নেওয়ায় ঘটে বিপত্ঐতি। নায়িকার মতে যোগাযোগ থাকা সত্বেও তাকে কিছুই জানাননি রানি। ফলে সৃষ্টি হয় দুরত্ব। অথচ কুছ কুছ হোতা হ্যায় ছবিতে রানি মুখ্যোপাধ্যায় অর্থাৎ টিনার চরিত্রের জন্য পরিচালকের কিন্তু প্রথম পচ্ছন্দ ছিল ঐশ্বর্য রাই, তার হাতে সময়ের অভাবে রানির কাছে আসে ছবির প্রস্তাব।
পরিচালক করণ জোহর ঐশ্বর্য রাই-এর উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, তিনিই একমাত্র অভিনেত্রী যিনি, কোনও ছবি করতে না পারলে নিজেই ফোন করে জানান। বাকিরা তো সেই কর্তব্য টুকুও পালন করেন না।বিশ্বমানের এই নায়িকার খ্যাতি এতই বিশাল যে, নেদারল্যান্ডের একটি টিউলিপ বাগান রয়েছে ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের নামে।
বচ্চনবধূর জীবনে অন্যতম গোপন তথ্য হল ঐশ্বর্য রাই বচ্চনকে কেউ অ্যাস বলে ডাকলে রীতিমতন অসন্তোষ প্রকাশ করেন অভিষেক বচ্চন ও তার মা জয়া বচ্চন। তবে অপর একটি বিষয় না উল্লেখ করলেই নয়, মাত্র ২০ বছর বয়সে নিজের চক্ষুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রেখেছেন এই বলিকুইন।