ডিএসপি যখন জঙ্গি, শীর্ষ হিজবুল নেতার সঙ্গে ধৃত খোদ সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশকর্তাই

  • জম্মু কাশ্মীরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান
  • ধৃত দুই শীর্ষ জঙ্গি নেতা
  • তাদের সঙ্গে আটক এক সন্ত্রাসবিরোধী পুলিশ কর্তাও
  • এই ঘটনায় হতবাক জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ

amartya lahiri | Published : Jan 12, 2020 8:58 AM IST

জম্মু কাশ্মীরে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে বড় সাফল্য পেল জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। তবে একই সঙ্গে এই অভিযান উদ্বেগও বাড়াল। কারণ দক্ষিণ কাশ্মীরে এই অভিযানে দু'জন হিজবুল মুজাহিদিন এবং লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গির সঙ্গে গ্রেফতার হয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশেরই একজন ডেপুটি সুপার।

শনিবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগাম-এর মীর বাজার এলাকার এক পুলিশ ব্যারিকেডে একটি গাড়ি আটক করা হয়। সেই গাড়িতেই দুই জঙ্গির সঙ্গে ছিলেন ডিএসপি দেবিন্দর সিং। অপর দুই জঙ্গি রফি আহমেদ ও হিজবুল মুজাহিদিন-এর অন্যতম শীর্ষ নেতা নাভিদ আহমেদ শাহ। এই নাভিদ আহমেদ শাহ ওরফে নাভিদ বাবু-ও একজন প্রাক্তন পুলিশ কর্তা। দক্ষিণ কাশ্মীরের ডিআইজি অতুল গয়াল এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন।

পুলিশ জানিয়েছে, এটা কাশ্মীরে সন্ত্রাস বিরোধী অভিযানে অত্যন্ত বড় সাফল্য। কারণ এই নাভিদ বাবুকে তারা দীর্ঘদিন ধরে ধরার চেষ্টা করছিল। তার অধীনে অন্তত ৩০ জন সন্ত্রাসবাদী কাশ্মীর উপত্যকায় সক্রিয় রয়েছে বলে পুলিশের ধারণা। তাঁর বিরুদ্ধে উপত্যকায় ডজনখানেক নিরাপত্তাকর্মী হত্যার অভিয়োগ রয়েছে। তবে তাঁর গ্রেফতারির ঘটনাকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে ডিএসপি দেবিন্দর-এর গ্রেফতারির ঘটনা।

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই অবশ্য তার উপর গোনে নজর রাখা হচ্ছিল। শনিবার বিকেলে একটি আই১০ গাড়িতে শ্রীনগর থেকে জম্মুর পথে যাচ্ছিল ওই জঙ্গিরা। আগে থেকেই খবর পেয়ে ওই রাস্তায় চেকপয়েন্ট বসিয়েছিল পুলিশ। তাতেই সাফল্য আসে। ওই তিনজনের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে গাড়ির চালক ইরফান-কেও। সে জঙ্গিদের নানাভাবে সহায়তা দিত বলে পুলিশের সন্দেহ। গাড়িটি থেকে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্রশস্ত্রও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

এর থেকে পুলিশের ধারণা প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে এই গোষ্ঠী উপত্যকায় বড় ধরণের সন্ত্রাসবাদী হামলার পরিকল্পনা করেছিল। এমনিতেই এই সময় উপত্যকার শান্তি বিঘ্নিত করতে হিজবুল, লস্করের মতো জঙ্গি গোষ্ঠীগুলি উঠে পড়ে লেগেছে, বলে খবর রয়েছে পুলিশের কাছে।

তবে, ডিএসপি দেবিন্দর সিং-এর ভূমিকা নিয়েই আপাতত ধন্দে পুলিশ। গাড়িটিতে করে জঙ্গিদের শোপিয়ান এলাকা থেকে সম্ভবত উপত্যকার বাইরে পৌঁছে দিচ্ছিলেন ওই ডিএসপি এমনটাই ধারণা করা হচ্ছে। ডিএসপি দেবিন্দর সিং-এর দাবি, তিনি হিজবুলের ওই দুই জঙ্গিকে আত্মসমর্পণ করতে রাজি করেছিলেন। তবে জঙ্গিরা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের বিষয়ে কোনও কথাই বলেনি।

উল্লেখ্য, ১৯৯০ থেকেই জম্মু-কাশ্মীরের ত্রালের বাসিন্দা, এই দুঁদে পুলিশকর্তা সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের অন্যতম  মুখ। তাঁর গ্রেফতারি পুলিশের কাছে অত্যন্ত বড় ধাক্কা। গ্রেফতারির পরেই এই শিখ পুলিশ অফিসারের শ্রীনগরের ইন্দ্রনগর ও ত্রাল-এর বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে ৫ টি গ্রেনেড এবং ৩টি একে-৪৭ রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে বলে খবর। এই ঘটনায় কাজীগুন্ড থানায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে। ধৃতদের আলাদা আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

 

Share this article
click me!