নববধূদের আশীর্বাদ নিতে হয় মহাত্মার,এই গ্রামে গান্ধী-নামেই সমাধান হয় সব সমস্যার

গোটা গ্রামেই মহাত্মা গান্ধীই ঈশ্বর। রয়েছে জাতির জনকের মন্দিরও। নবধূদের আশীর্বাদ নিতে হয় গান্ধী মন্দিরে। কোনও দিন পুলিশ ডাকতে হয়নি গ্রামে।

 

amartya lahiri | Published : Jan 30, 2020 4:24 PM IST

বিয়ের পর নববধুরা শ্বশুরবাড়িতে এসে বাড়ির বয়জ্যেষ্ঠদের নয়, আশীর্বাদ নেন গ্রামের গান্ধী মন্দিরে গিয়ে। এটাই ওড়িশায় রায়পুর জেলার ভাটরা গ্রামের রীতি। না, শুধু নববধূদের আশীর্বাদ নয়, এই গ্রামের প্রতিটি মানুষের হৃদয় জুড়ে, গ্রামের আকাশ-বাতাস জুড়ে বিরাজ করছেন একজনই - মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী। সব সমস্যার সমাধান হয় এই গ্রামে জাতির জনকের নামেই।  

১৯৭৩ সালে ভাটরা গ্রামে তখনকার বিধায়ক অভিমন্যু কুমার মহাত্মা গান্ধীর নামে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই থেকে গত ৪৬ বছর ধরে নিত্য পূজা করা হয় মহাত্মার। গ্রামে দিনের শুরুটা হয় 'রঘুপতি রাঘব রাজা রাম...' ভজন দিয়ে। তারপর থেকে ঘুমোতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত প্রতি ঘন্টায় একবার করে বেজে ওঠে এই ভজন।

আসা যাক গান্ধী মন্দিরের কথায়। মন্দিরের ভিতরে  মহাত্মার একটি বসে থাকা মূর্তি রয়েছে। ঢোকার মুখে হাতে তেরঙ্গা নিয়ে বসে থাকা অবস্থায় ভারত মাতার একটি মূর্তি রয়েছে। দেওয়াল ভর্তি সব ধর্মের দেবদেবীর ছবি ও মূর্তিতে। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেও মহাত্মা গান্ধীর ছবি রয়েছে। তবে গান্ধীর ছবি বা মূর্তি রাখা, পুজো করার থেকেও তাঁর দর্শনগুলি নিয়ে চর্চা করাতেই বেশি আগ্রহী এই গ্রাম।

গ্রামের দুই প্রবীণ বাসিন্দা তিকেশ্বর চুরিয়া এবং বনমালী পত্তের জানিয়েছেন তাঁদের গ্রামে সকলেই গান্ধীজি-কে মানব রূপে ঈশ্বর বলে মনে করে। এই গ্রামের যুব সম্প্রদায়ও গান্ধীর ধারণাতেই বিশ্বাসী। কেউ কখনও মদ্যপান করে না। কোনও বৈষম্য বা অস্পৃশ্যতার মতো সমস্যা নেই। কারোর সঙ্গে কারোর বিরোধও হয় না বললেই চলে। হলেও, পুলিশে ডাকার দরকার পড়ে না, গান্ধীর নামে শপথ নিয়েই ঘরোয়া বিবাদ থেকে শুরু করে যে কোনও কলহ মিটে যায়।

 

Share this article
click me!