লাদাখ সেক্টরে ভারত চিন সংঘর্ষ, চিনা আগ্রাসন ছিল মারাত্মক একটি ভুল সিদ্ধান্ত

  • পূর্ব লাদাখ সেক্টরে চিনা আগ্রাসন 
  • ফিরে দেখে একবছর আগের সেই ঘটনা 
  • চিনা আগ্রাসনের একাধিক কারণ রয়েছে 
  • ভারতের উত্থানে ত্রস্ত হয়েই যুদ্ধের পথে চিন 

লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আটা হাসনাইন, দেখতে দেখতে এক বছর হতে চলল। কিন্তু এখনও অব্যাহত রয়েছে পূর্ব লাদাখ সেক্টরে চিনের পিপিলস লিবারেশন আর্মির অগ্রাসন নিয়ে কাটাছেঁড়া। লাদাখে চিন-ভারত স্ট্যান্ডঅফের সেই দিকগুলি পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের এটাই সঠিক সময়। যেগুলি নিয়ে এখনও পর্যন্ত তেমন আলোকপাত করা হয়নি। 

এটাই লক্ষ টাকার প্রশ্ন, যে চিন কেন এজাতীয় পদক্ষেপ নিয়েছিল। কারণ চিন প্রথম থেকেই জানত লাদাখ অভিযান করলেনও চিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরোপুরি তা নিয়েন্ত্রণ করা কখনই সম্ভব নয়। তাই এই প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক যে গোটা বিষয়টির মধ্যে একটি বৈদেশিক নীতি ও কৌশলগত ত্রুটি রয়েছে। তবে এটি যাচাই করার মত অনুমান চিনের মত বৃহৎ শক্তির ছিল না বলেও মনে করা হচ্ছে। কারণ চিনের স্বৈরাচারী ব্যবস্থার প্রভাব সবক্ষেত্রেই বিদ্যমান। চিনার প্রেসিডেন্ট শি জিংপিংএর সাম্প্রতিক একটি অভিব্যক্তির পরিপ্রেক্ষিতে এটি আরও আকর্ষনীয়। কারণ সম্প্রতি চিন আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যোগাযোগ বাড়ানোর ওপরেই জোর দিয়েছিল। 

Latest Videos

চিনকে একটি সময় কুখ্যাত করেছিল 'উলফ ওয়ারিয়র ডিপ্লমেসি' বা নেকড়ে যোদ্ধা কূটনীতি। সেখান থেকে চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিংপিং বার হতে পারেননি। ৩০ বছর ধরে চিন এই কূটনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল। বাড়াতে চেয়েছিল আন্তর্জাতিক যোগাযোগ। আর সেটাইক মূলধন করতে চেয়েছিল চিন। 

১৯৯৩ সাল থেকেই চিন 'ওয়ার আন্ডার ইনফরসেনাইজড কনডিশন' এর ওপর জোর দিয়ে আসছিল। ১০ বছর পর ২০০৩ সালে  সাইবার, মিডিয়া ও আইনি  - তিনটি যুদ্ধ কৌশল গ্রহণ করেছিল। যার সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে ছিল চিনের সেনা বাহিনীও। আর সাম্প্রতিক বছরে যেভাবে চিনের ভাবমূর্তি উত্থান হয়েছে বা পরিবর্তিত হয়েছে তা নিয়ে শি জিংপিং-এর মধ্যে একটা অত্যাধিক সন্তোষ লক্ষ্য করা গেছে।  যদিও এর অনেক আগে চিন শক্তি, প্রভাব, প্রতিপত্তি, বিস্তার করে বিশ্বে আধিপত্য কায়েম করতে চাইছিল। একই ছবি ধরা পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতেও। ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির দিকেও রীতিমত নজর রয়েছে চিনের। ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলিকে কব্জা করতে একাধিক পদক্ষপও গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের মধ্যেই হস্তক্ষেপ করেছিল চিন। চিনের মূল উদ্দেশ্যই ছিল ভারতকে দুর্বল ও নিরপেক্ষ করে রাখা। 


গত এক বছরের সমস্ত ঘটনার পুনরাবৃত্তি করতে গোটা ছবিটাই স্পষ্ট কবে। চিন লক্ষ্য করেছে নরেন্দ্র মোদীর অধীনে ভারতের রূপান্তর।  সৌম্য ও প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্র থেকে কৌশলগতভাবে আরও আত্মবিশ্বাসী ও প্রকটিভ একটি দেশে স্থানান্তরিত হয়েছে ভারত। যা চিনের স্বার্থকে আঘাত করেছে। ডোকলাম সঞ্চাল ট্রান্স-এলওসি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, বালাকোট বিমান হামলা, কাশ্মীর অপারেশন অল আউট আর কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রোধ। ২০১৬-২০১৯ ভারতের এই একাধিক পদক্ষেপ প্রমান করে ভারত আত্মবিশ্বাসী হয়েছে। আর ভারত এগিয়ে চলেছে। যা সীমান্ত ইস্যু ছাড়িয়ে চিনের সামগ্রিক স্বার্থের কাছে রীতিমত বিপজ্জনক হতে শুরু করেছিল। 

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তাব দিতে পারে যা তারা চিনকে স্থল, সমুদ্র- সবক্ষেত্রেই চিনর বিরুদ্ধে ফ্রন্ট নিযুক্ত রাখতে পারে। ভারত মহাসাগরে আধিপত্য বজায় রাখতে চাইছিল চিন। আর সেক্ষেত্রে তাদের কাছে সবথেকে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিল ভারত। বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভে যোগ দিতে ভারত অস্বীকার করেছিল। তাতেই অস্বস্তি বাড়তে শুরু করেছিল চিনের। 

  ২০১৯ সাল। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়েছিল। গোটা বিশ্বেরা ধারণা চিনের উহান প্রদেশ ছেকেই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছিল। মোট কথা গোটা বিশ্বের ফোকাস গিয়ে পড়েছিল চিনের ওপর। গোটা ইউরোপ করোনাভাইরাসের প্রথম তরঙ্গে বেসামাল ছিল। তারা নিশানা করেছিল চিনকে। পাশাপাশি ভারতও এক বছর আগে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যস্ত ছিল। আর সেই সময়ই চিন লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় পিপিলস  লিবারেশন আর্মি মোতায়েন করেছিল। এটি কোনও কাকতালীয় ঘটনা ছিল না বলেই মনে হয়। কারণ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতীয় সেনাদের ওপর জোর জবরদস্তি চালানোর আর ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ার জন্য অপেক্ষা করা হয়েছিল। কিন্তু তার আগে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল না চিন। আগেও এটি দেখা গেছে যারা আগ্রাসনে জড়িত তার যখনও কোনও গুরুতর পদক্ষেপ গ্রহণ করে বা পরিকল্পনা করে তখন সর্বদা নিজেদের কিছু লক্ষ্য স্থির করে রাখে আগে থেকে। লক্ষ্য ছাড়া তারা কোনও পদক্ষেপ করে না। 

ভারতের ক্রান্তিকালীন উত্থান ও অগ্রগতি রূপান্তরের ধারনা দ্বারা পরিচালিত, লক্ষ্যটি হতে পারে  তার আত্মবিশ্বাসকে লক্ষ্য করা। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের কয়েক বছর পূর্বে সেটাকে স্থাপন করে একটি সর্বোচ্চ উৎসাহী হওয়া থেকে বায়ঁচিয়ে যুদ্ধ পরিচালনার সম্ভাবনাটি কমিয়ে দেওয়া যাতে প্রকাশ পেয়েছে চিনের দুর্বলতা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইন্দো অংশকে ইন্দো প্যাসিফির অংশ হিসেবে এখনও গন্য করে যা মেনে নিতে নারাজ চিন। 

তবে ২০২০ সালের আগ্রাসন চিনের কাছে রীতিমত ভুল ছিল। কারণ চিনা সেনা বাহিনী নিশ্চিত ছিল না যে কেবল ওয়াক ইন অভিযানের মাধ্যমে লক্ষ্য অর্জন করা যেতে পারে। উল্টে বিগত দশ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে এই পদ্ধতিতে অভ্যস্ত ছিল ভারতীয় সেনা। তাই ভারতীয় সেনার একাধিক পদক্ষেপ নিজস্ব প্রতিক্রিয়ার ছাপ ছিল অনেক স্পষ্ট। 


চিনের এই আগ্রাসন গোটা জাতির সম্মানকে ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছে। কারণ লাদাখ জয় চিনের কাছে রীতিমত কঠিন ছিল। কারণ অতি উচ্চতায় বেশি ওজন নিয়ে চলাফেরা করা খুবই কঠিন। একটি নির্দিষ্টি সময়সীমার মধ্যে সামরিক বিজয়ের গ্যারান্টি দেওয়া যায় না। আর এই অঞ্চলে এমন কিছু ছিল না যা দখল করতে পেরে চিন লাভফবান হতে পারে। কিছু বিরোধ সর্বদাই অমীমাংসিত থেকে যায়। সামান্ত সমস্যাও থেকে যায় দীর্ঘদিন ধরে। সেক্ষেত্রে কৌশলগত অবস্থানকেই মান্যতা দেওয়া সুবিধেজনক। সম্ভাব্য সামরিক কৌশল বের করার জন্য চিনা নেতৃত্ব  রাজনীতি কৌশলগত লক্ষ্যকে একটি কর্যক্ষম সামরিক উদ্দেশ্যে রূপান্তির করতে বেশ কয়েকটি বিপল্প যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা খেলতে পারে। যদিও চিন ভারতের বিরুদ্ধে সর্বদা বায়লজিক্যাল ওয়ারফেয়ারেই বিশ্বাসী। তবে পিএলএ কতটা এগিয়ে আসবে সেটাই একটি মূল প্রশ্ন। 

প্রথমে মনে করা হয়েছিল যে ভারতের বিরুদ্ধে চিন যুদ্ধ ঘোষণা করলেও ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রাখতে। চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ত্যাগ করবে না। কিন্তু সেই সময় ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য মিত্র দেশগুলির সঙ্গে কৌশলগতভাবে অংশীদারিত্বের খেলাকে অব্যাহত রাখলে আরও নেচিবাচব দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে। পূর্ব লাদাখ সেক্টরে স্ট্যান্ড অফের সমই চিনের পিপিলস লিবারেশন আর্মির সদস্যরা পাকি সেনাবাহিনীকে অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। চিন আর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাই লড়াই চালিয়ে গিয়েছিল ভারত। 

করোনাভাইরাসের কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপ ও ভারত চিনের বিরোধিতা করলেও চিনের সঙ্গে কিন্তু একাই যুদ্ধ করেছিল ভারত। কিন্তু চিন একটি কঠোর পরিকল্পনা করেছিল। কূটনৈতিক ও আর্থিক সমস্যা তৈরি করতে চেয়েছিল। আর এটিকে মহামারি পরিস্থিতিতে কেবল একটি সীমিত স্ট্যাডঅফ বলা যেতে পারে। প্রথম দিকে কিছু অনিশ্চয়তা ছিল ভারতের মধ্যে। পরবর্তীকালে দ্রুততার সঙ্গে তা কাটিয়ে ওঠে ভারত। কিন্তু পিএলএ কেন গ্যালওয়ান সংঘর্ষে জড়িয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। কারণে চিনের কোনও প্রয়োজন ছিল না। সম্ভবত তারা ইচ্ছে করেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল। 

 পিপিলস লিবারেশন আর্মির কাছে একটি একটি মারাত্মক ভুল পদক্ষেপ ছিল। পিএলএ পরিস্থিতি হাতছাড়া করে। উভয় পক্ষের প্রাণহানির দিকেও নজর দেয়নি। ১৯৭৫ সালের পর এটি ছিল এই এলাকার সবথেকে বড় সংঘর্ষ। চলনি কোনও গুলিও। সম্ভবত এটি একটি অর্ডার. দুর্বল প্রশিক্ষণ আর মৃত্যুদণ্ডের মিশ্রণ। চিন যদি বুদ্ধমত্তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিত তাহলে ততক্ষণাৎ পুরো এলাকা খালি করত। কিন্তু তা করেনি চিন। দোপসাং, গোগরা, হটস্প্রিং, ফিঙ্গার্স পয়েন্ট কঠোর অবস্থার করে ছিল। ডুংটি, ডেমচেকের দিকে কৈলাশ রেঞ্জের দৈর্ঘ্যের সঙ্গে ভারতের কুইড প্রো কোয়ের ভিত্তি ছিল। কিন্তু এই এলাকাগুলি দখলের জন্য চিনকে অতিরিক্ত বাহিনী নিয়ে আসতে হয়। কিন্তু মোন্ডো থেকে তা করা কিছুটা হলেও কঠিন ছিল। ২০২০ সালের অগাস্ট মাস থেকে ভারত লাদাখ সীমান্ত রক্ষা করতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দ্রুততার সঙ্গে সমর সজ্জা ও বাহিনী মোতায়েন করে। একই সঙ্গে দ্রুততার সঙ্গে ভারতের দিকে থাকা পাহাড় চূড়াগুলিও দখল করে। যদিও চিন একাধিকবার উস্কানি মূলক আচরণ করেছিল। কিন্তু ভারতীয় সেনারা নিজের অবস্থান বজায় রাখার আর সীমান্ত রক্ষায় মরিয়া প্রয়াস চালিয়ে গিয়েছিল। 

চুসুল অপারেশন অনুমান করতে ব্যর্থকার  পিএলএর জন্য একটি বড় ধাক্কা ছিল। তবে একই সঙ্গে এটি চিনের কাছে একটি বড় ধাক্কাও ছিল। কারণ লাদাখের কারণে বিশ্বের সঙ্গে সংযোগ আর সমীকরণগুলির একটি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছিল। ১০৯০-৯১ কোল্ড ওয়ারের পরবর্তী অনিশ্চয়তার সঙ্গে এই ঘটনার মূল ছিল। ভারতের পক্ষে উচ্চ উচ্চতার কৌশল বিকাশ করা আর নিজের পক্ষে বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করা -দুটিতেই ভারত সক্ষম হয়েছে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে ভাবে আন্তর্জাতিক অগ্রগতি অর্জন করতে চান তার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে। 

দিনের শেষে লাদাখের ব্যস্ততা সম্ভবত চিনকে শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে আত্ম উপলব্ধি করিয়েছে। পাশাপাশি চিনা আগ্রাসন নিয়ে বিশ্বকেই স্বস্তি দিয়েছে। একই সঙ্গে ভারত প্রমাণ করেছে কী ভাবে জবরদস্তির মোকাবিলা করা যায়। তবে এখনও খেলা শেষ হয়নি। সমস্টিগত হুমকির পরিবেশে ভবিষ্যতের স্ট্যান্ডঅফের জন্য প্রস্তুতি বিশ্বের বাকি অংশের জন্য চূড়ান্ত মূল্য প্রমাণ করবে। সত্যি মহামারির এই সময়ও বিশ্রাম পাওয়া যায় না। তা আরও একবার দেখা গেল লাদাখ সীমান্তে। 

(লেখকঃ লেফটেন্যান্ট জেনারেল সৈয়দ আটা হাসনাইন (অবসরপ্রাপ্ত) শ্রীনগরের ১৫ কর্পসের প্রাক্তন কমান্ডার এবং বর্তমানে কাশ্মীরের কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর )
 

Share this article
click me!

Latest Videos

মমতা হারবে, DA ন্যায্য অধিকার, জয় আপনাদের দোরগোড়ায়, ঐক্যবদ্ধ থাকুন : শুভেন্দু | Suvendu Adhikari
শীতের রাতে যমুনার আতঙ্ক! একের পর এক জঙ্গল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাঘিনী | Bandwan Tiger News
নওশাদ সিদ্দিকীকে জঙ্গি আখ্যা Saokat Molla-র, পাল্টা বড় পদক্ষেপ Naushad Siddiqui-র
Suvendu Adhikari Live : নবান্নের সামনে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ধর্না অবস্থান মঞ্চে শুভেন্দু
এ যেন লুকোচুরি খেলা! ক্ষণে ক্ষণে স্থান পরিবর্তন, এখনও অধরা বাঘিনী যমুনা | Jhargram Tiger News