বিজ্ঞান গবেষণায় দেশের সর্বোচ্চ সম্মান ভাটনগর পুরস্কার। আর সেই পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় বাংলার জয়-জয়কার। একজন বা দু'জন নন, এবার ১২ জন ভাটনগর প্রাপকের মধ্যে ছজনই বাঙালি। এরমধ্যে রয়েছেন বেঙ্গালুরুর জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চের বিজ্ঞানী তাপসকুমার মাজি। কার্বন ডাই-অক্সাইড বা মিথেন পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকারক। জলবায়ু বদলের ক্ষেত্রেও তা অন্যতম উপাদান। এই ক্ষতিকর গ্যাসগুলিকে কী ভাবে ধাতু দিয়ে শুষে নিয়ে তাকে পুনরায় ব্যবহার করা যায়, তারই পথ বাতলেছেন এই তরুণ বাঙালি বিজ্ঞানী।
শক্ত মাটিকে নরম করা, জল বিশুদ্ধকরণ সহ একাধিক বিষয়ে কাজ করেছন বিজ্ঞানী তাপসকুমার মাজি। তাঁর গবেষণাপত্রগুলি নিয়মিত প্রকাশিত হয় বিশ্বের তাবর তাবর বিজ্ঞান পত্রিকাগুলিতে। ২০০৬ সাল থেকে বেঙ্গালুরুর জওহরলাল নেহরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তিনি। যা বিশ্বের প্রথম দশে থাকা বিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম।
তাপসকুমার মাজির ছোটবেলাটা কেটেছ বাঁকুড়া গ্রামে। সেখানকার শ্যামপুর হাইস্কুল থেকেই মাধ্যমিক। এরপর কমলপুর নেতাজি হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে রানিগঞ্জে যান বিএসসি করতে। রসায়নে এমএসসি করেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। পিএইচডি ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অফ সায়েন্স থেকে। গবেষণার কাজে জাপানেও পাড়ি দিয়েছিলেন। স্বল্প সময়ের জন্য অধ্যাপনা করেছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়েও। গ্রাম থেকে উঠে আসা তাপসবাবু আজ দেশের বিজ্ঞান গবেষণা ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য নাম। প্রতিভা থাকলে যে কোনও বাধাই বাধা নয় তারও এক জ্বলন্ত উদাহরণ তাপসবাবু।
আগামীবছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করবেন তাপসবাবু সহ ১২ জন বিজ্ঞানী। এদেশে বিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্রে নতুন নতুন দিক উন্মোচিত হচ্ছে , বাড়ছে গবেষণার পরিসর। তাই বিদেশ নয় আগামী প্রজন্ম এদেশে থেকেই যে বিশ্বমানের গবেষণা করতে পারে তারই পথ দেখাচ্ছে তাপসকুমার মাজিদের মত প্রতিভারা।