ফের নৃশংসতার সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেল পাক সেনা। শুক্রবার জম্মু-কাশ্মীরের পুঞ্চ জেলায় নিয়ন্ত্রণরেখা-র কাছে যে দুই অসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে একজনের মাথা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছে জম্মু কাশ্মীর পুলিশ। পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী, 'বর্ডার অ্যাকশন টিম' বা 'ব্যাট'-এর সদস্যরাই ওই মালবাহকের মৃত্যুর পর তাঁর মাথা কেটে নিয়ে গিয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
এর আগেও উরি হামলার সময় সেনা জওয়ানদের সঙ্গে একই রকম বর্বরোচিত কাজ করেছিল পাক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা জঙ্গিরা। কিন্তু এই প্রথম কোনও অসামরিক নাগরিক-এরও মুন্ডচ্ছেদ করল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। এক পদস্থ পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, ২৮ বছরের মহম্মদ আসলাম-এর ধরের সঙ্গে মাথা তো ছিলই না, দেহও ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই পুলিশ অফিসার বলেছেন, আইনি প্রয়োজনিয়তা সাড়ার জন্য যখন পুলিশের হাতে মরদেহ দুটি তুলে দেওয়া হয়, তখন আসলামের দেহ মস্তকহীন ছিল। পুলিশ তার কাজ সম্পন্ন করে দুই মালবাহকের মরদেহই তাঁদের পরিবারের হাতে তুলে দেয়। শুক্রবার সন্ধ্যাতেই গ্রামে তাঁদের শেষকৃত্য করা হয়েছে। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত তিন মালবাহক মহম্মদ সালেম (২৪), মহম্মদ শওকত (২৮) এবং নওয়াজ আহমেদ (৩৫)-এর অবস্থা 'স্থিতিশীল' বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) প্রতিরক্ষা বিভাগের এক মুখপাত্র জানিয়েছিলেন, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ছোড়া মর্টার শেলের আঘাতে গুলপুর সেক্টরের কাসালিয়ান গ্রামের বাসিন্দা আসলাম ও আলতাফ হুসেন (২৩) নিহত হয়েছেন। সেইসঙ্গে আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েথিল। এঁরা প্রত্যেকেই নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি একটি ভারতীয় সেনা ঘাঁটিতে মাল বয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন।
পাকিস্তানের এই হত্যার বিষয়ে সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নারভানে বলেছেন কোনও পেশাদার সেনাবাহিনী কখনই এরকম 'বর্বর' কাজ করে না। এর জবাব ভারত 'যথাযথ সামরিক পদ্ধতি'তেই দেবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী শুধু নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবরই নয়, সর্বত্রই পেশাদার ও নৈতিকতার সঙ্গে কাজ করে। 'পেশাদার সেনাবাহিনী' হিসেবে তারা যে কখনই এইরকম বর্বর আচরণের আশ্রয় নেবেন না তাও স্পষ্ট করে দেন তিনি।