মধ্য়প্রদেশে এবার অনলাইনে দিলেই মিলবে মদ। সেইসঙ্গে দেওয়া হবে ঢালাও মদের লাইসেন্স। সৌজন্য়ে রাজ্য়ের কমলনাথ সরকার। মদের ওপর বসানো শুল্ক থেকেই বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় হয় রাজ্য়গুলির। পশ্চিমবঙ্গ গত দু-বছর ধরে রেকর্ড পরিমাণ আয় করেছে। অন্য় রাজ্য়গুলিও পিছিয়ে নেই। তাই রাজ্য়গুলির এখন লক্ষ্য় হল, যথাসম্ভব মদ বিক্রি বাড়ানো। আর, এর একমাত্র ব্য়তিক্রম হল বিহার। যেখানে নীতিশ কুমারের সরকার রাজ্য়ে মদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে বিহারকে অপরাধের তকমা থেকে মুক্ত করতে পেরেছেন।
জানা গিয়েছে, রাজ্য়ে মদ বিক্রি বাড়িয়ে আরও বেশি রাজস্ব ঘরে তোলার লক্ষ্য়েই এবার অনলাইনে মদ বিক্রির অনুমতি দিয়েছে মধ্য়প্রদেশের কমলনাথ সরকার। আর সেই প্রসঙ্গেই কংগ্রেস সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করেছে রাজ্য় বিজেপি। তাদের কথায়, মধ্য়প্রদেশকে ইতালি বানাতে চাইছে কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, সোনিয়া গান্ধি জন্মেছিলেন ইতালিতে।
ইনদোরের বিজেপি বিধায়ক রমেশ মেনডোলা শনিবার কংগ্রেস সরকারকে আক্রমণ করে বলেন, যে রাজস্ব নীতিতে রাজ্য় চলছে, তাতে করে শাসকদল মধ্য়প্রদেশকে ইতালিতে পরিণত করতে চাইছে। মেনডোলা একটি টুইট বার্তায় লেখেন, "কংগ্রেস সরকার অনলাইনে মদ বিক্রি শুরু করে দিল। মনে হচ্ছে, ইতালির কিছু লোকজনের স্বার্থেই এই উদ্য়োগ নেওয়া হল। মধ্য়প্রদেশকে ইতালিতে পরিণত করতে চাইছে কংগ্রেস। বিশ্বের তিনটি বৃহত্তম মদ প্রস্তুতকারী দেশের মধ্য়ে ইতালি অন্য়তম। কমলনাথ, রাহুল গান্ধি, প্রিয়াঙ্কা গান্ধি, আপনারা কি মধ্য়প্রদেশের এই পরিবর্তন চেয়েছিলেন?"
রাজ্য়ের নতুন রাজস্বনীতি অনুযায়ী মধ্য়প্রদেশে সরকার ২০২০-২১ অর্থবর্ষ থেকে এই অনলাইনে মদ বিক্রির অনুমতি দিয়েছে। একই সঙ্গে আড়াই হাজারের বেশি দেশি মদের দোকান আর এক হাজারের বেশি বিদেশি মদের দোকানকেও লাইসেন্স হয়েছে বলে খবর। অবশ্য়ই রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্য়ে।
সরকারি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাজস্ব আদায় বাড়াতেই এই অর্থবর্ষে অনলাইনে মদ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে, ২,৫৪৪টি দেশি মদের দোকান ও ১০৬১টি বিদেশি মদের দোকানকে লাইসেন্স দেওয়া হবে। যা থেকে গতবছরের তুলনায় আরও ২৫ শতাংশ বেশি রাজস্ব ঘরে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গত দু-বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ মদ বিক্রি করে যে পরিমাণ রাজস্ব ঘরে তুলেছে, তা অতীতের সব রেকর্ডকে ভেঙে দিয়েছে। অন্য় রাজ্য়গুলোও এইবার সেই পথেই হাঁটছে। অন্য়দিকে বিহারের দৃষ্টান্ত দিয়ে অনেকেই বলছেন, মদ বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর সেই রাজ্য়ে অপরাধে হার উল্লেখযোগ্য়ভাবে কমেছে। তাই খুন, ধর্ষণের মতো অপরাধ কমাতে মদ বিক্রির ওপর রাশ টানা উচিত ছিল যেখানে, সেখানে রাজ্য় সরকারগুলি রাজস্ব আদায়ের কথা ভেবে ঢালাও মদের লাইসেন্স দিচ্ছে। এমনকি অনলাইনেও মদবিক্রি চালু করে দিচ্ছে। যার ফলে এক ঘোরতর নেশার মধ্য়ে ডুবে যাচ্ছে গোটা সমাজ।