পুরনো সব রেকর্ড তছনছ করে বৃহস্পতিবার দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৯৫ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছিল। শুক্রবার পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হল। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছেন ৯৬ হাজার ৫৫১। যা যেকোন দেশে দৈনিক সংক্রমণের ক্ষেত্রে রেকর্ড। এর সঙ্গেই ভারতে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ লক্ষ ছাড়িয়ে গেল। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে এদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৫ লক্ষ ৬২ হাজার ৪১৫। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ৪ আগস্ট থেকে বিশ্বে দৈনিক সবচেয়ে বেশি কোভিড রোগী শনাক্ত হচ্ছে ভারতে। মোট রোগীর সংখ্যার দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরই ভারতের অবস্থান।
উদ্বেগ বাড়াচ্ছে মৃতের সংখ্যাও। গত কয়েকদিন দৈনিক মৃতের সংখ্যা ১,১০০ উপরে থাকছিল। এবার সেই সংখ্যা ১,২০০ ছাড়াল। গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১,২০৯ জন। ফলে এদেশে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৬, ২৭১।
এসবের মধ্যে অবশ্য আশার আলো দেখাচ্ছে সুস্থতার হার। দেশে এখনও পর্যন্ত করোনাজয়ীর সংখ্যা ৩৫ লক্ষ ৬২ হাজার ৪১৫ জন। ফলে ভারতে এখন সক্রিয় রোগী রয়েছে ৯ লক্ষ ৪৩ হাজার ৪৮০ । গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সুস্থ হয়েছেন ৭০,৮৮০ জন। ভারতে এখন সুস্থতার হার ৭৭.৬৫ শতাংশ। আর মৃত্যুহার ১.৬৭ শতাংশ। ভারতে এখন অ্যাকটিভ কেস ৯,৪৩,৪৮০।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী,বুধবার গোটা দেশে ১১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৫৪২ জনের কোভিড টেস্ট হয়েছে। ইতিমধ্যে ভারতে ৫ কোটির বেশি করোনার নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সব মিলিয়ে ভারতে এ পর্যন্ত ৫ কোটি ৪০ লক্ষ ৯৭ হাজার ৯৭৫ টি নমুনার কোভিড পরীক্ষা হয়েছে।
এদেশে করোনা ভাইরাসে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত রাজ্য মহারাষ্ট্র। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষে পৌঁছে গিয়েছে মারাঠা রাজ্যে। এই প্রদেশে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৯,৬৭,৩৪৯ জন। সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ২৭,৭৮৭ জনের। সংক্রমণ সারিয়ে সুস্থ হয়েছে ৬,৮৬,৪৬২ জন। মহারাষ্ট্রে এখন অ্যাকটিভ কেস ২,৫৩,১০০। এরপরই রয়েছে যথাক্রমে অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, তেলেঙ্গানা, উড়িষ্যা, আসাম ও গুজরাট।
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, গত দু'সপ্তাহে দেশে ১১ লক্ষের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে, এটাও ঠিক যে পরীক্ষার সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে। গত কয়েকদিনে তো দৈনিক টেস্টের সংখ্যা ১১ লক্ষ ছাপিয়ে গিয়েছে। এবার করোনা পরীক্ষা নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। উপসর্গ থাকলেও ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টে করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এলে ফের তাঁর কোভিড পরীক্ষা করাতে হবে। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে এমনই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে রাজ্য সরকারগুলির কাছে। দ্রুত সংক্রমিতকে খুঁজে বের করতেই ব়্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট চলছে দেশজুড়ে।