
দিল্লির গ্যাস লিকের রহস্য: দিল্লির দক্ষিণপুরী এলাকা থেকে এক ভয়াবহ ও রহস্যময় ঘটনা সামনে এসেছে, যা শুধু রাজধানীকেই নয়, বরেলির চারটি পরিবারকেও শোকে আচ্ছন্ন করেছে। শুক্রবার রাতে এসি মেরামতের কাজ করতে আসা চার যুবক সন্দেহজনক অবস্থায় ফ্ল্যাটের ভেতরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে দম বন্ধ হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে, তবে আসল কারণ এখনও তদন্তাধীন।
মোহসিন নামের এক মিস্ত্রীর ভাই ফারুক যখন বারবার ফোন করেও কোনো জবাব পেল না, তখন সে দিল্লিতে থাকা আত্মীয়দের খবর দেয়। শনিবার সকালে জিশান নামের এক আত্মীয় ঘটনাস্থলে পৌঁছালে দেখে ফ্ল্যাটটি ভেতর থেকে বন্ধ। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। দরজা ভাঙা হয় এবং ভেতরের দৃশ্য দেখে সবার রক্ত হিম হয়ে যায়। চার যুবক - ইমরান ওরফে সালমান (৩০), মোহসিন (২০), হাসিব (২৫) এবং কপিল ওরফে অঙ্কিত রাস্তোগী (১৮) - মৃত অবস্থায় পড়ে ছিল। তিনজনের দেহ শক্ত হয়ে গিয়েছিল, আর চতুর্থ জনের শ্বাসপ্রশ্বাস চলছিল, কিন্তু চিকিৎসারত অবস্থায় সেও মারা যায়।
ফ্ল্যাটে এসি চালু ছিল এবং বেশ কয়েকটি গ্যাস সিলিন্ডার ছিল, যার মধ্যে নাইট্রোজেন, এলপিজি, অক্সিজেন এবং এসির সাথে সম্পর্কিত গ্যাস যেমন R-22, R-32 এবং R-410A ভর্তি ছিল। পুলিশ এবং ফরেনসিক টিম কোন গ্যাস লিক হয়েছে এবং কিভাবে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে। রসায়ন বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছে।
ইমরান বহু বছর ধরে বরেলি থেকে দিল্লিতে এসে এসি মেরামতের কাজ করত। প্রতি বছর গরমে সে অন্য ছেলেদেরও সঙ্গে নিয়ে আসত। সাত মাস কাজ করে তারা ফিরে যেত। কিন্তু এবার আর বাড়ির দোরগোড়ায় নয়, শ্মশানঘাটেই তাদের শেষ যাত্রা।
চারজনের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ইমরানের পরিবারে সাত ভাইবোন, আর কপিলের বাবা আগেই মারা গেছেন। মোহসিন এবং হাসিবের পরিবারের অবস্থাও বেশ কষ্টদায়ক। এই দুর্ঘটনা শুধু চারটি প্রাণই নয়, বহু পরিবারের আশাও চিরতরে ভেঙে দিয়েছে।
এখন পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং গ্যাস সিলিন্ডারের তদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষা। এটা কি শুধুই একটা দুর্ঘটনা ছিল নাকি অবহেলার এক বড় উদাহরণ? এই প্রশ্নের উত্তর এখন শুধু বৈজ্ঞানিক তদন্তই দিতে পারবে।