সিআইডির কাছে তল্লাশি অভিযান চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ মজুত ছিল। তা সত্ত্বেও কেন তাদের তল্লাশি চালাতে দেওয়া হল না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
আদালতের ওয়ারেন্ট থাকা সত্ত্বেও তল্লাশিতে বাধা পেল সিআইডি আধিকারিকদের টিম। ঝাড়খন্ডের কংগ্রেস বিধায়কদের গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ঘটনায় তদন্তভার হাতে নিয়েছে সিআইডি। দিল্লিতে এই ঘটনায় অভিযুক্ত একজনের বাড়িতে তল্লাশি ও অভিযান চালাতে গিয়ে বাধা পেল সিআইডি। দিল্লি পুলিশের ডিসিপি (দক্ষিণ পশ্চিম) এই তল্লাশিতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। অথচ সিআইডির কাছে তল্লাশি অভিযান চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ মজুত ছিল। তা সত্ত্বেও কেন তাদের তল্লাশি চালাতে দেওয়া হল না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
এদিকে, দুদিন আগেই হাওড়ার পাঁচলা থেকে রাশি রাশি টাকা সমেত গ্রেফতার হওয়া তিন কংগ্রেস বিধায়ককে সাসপেন্ড করেছে দল। মঙ্গলবার গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সিআইডির একটি দল লালবাজারের ঠিক উল্টোদিকে একটি বাড়িতে তল্লাশি শুরু করে। বাড়িটির নাম বিকানের ভবন। এই অভিযানে সিআইডির হাতে এসেছে কয়েক লক্ষ টাকা। সিআইডির আইজি ১ প্রণব কুমারও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। বাড়িটি থেকে একাধিক নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টা নাগাদ বিকানের ভবনের তিনতলার একটি অফিসে তল্লাশি শুরু করে সিআইডির অফিসারেরা। তবে অফিসটির তালা বন্ধ থাকায় প্রথমে ভিতরে ঢুকতে পারেননি সিআইডির গোয়েন্দারা। প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষার পর চাবিওয়ালা ডেকে দরজার লক ভাঙা হয়। সিআইডি সূত্রে খবর, এই টাকা কংগ্রেসের বিধায়কদের হাতবদল হওয়ার আগে রাখা ছিল এই বিকানের ভবনেই। এমনকি ওই টাকা এই লালবাজারের বাড়িটিতেই হাতবদল হয়ে থাকতে পারে বলে অনুমান।
এই ঘটনায় নাম জড়িয়ে পড়েছে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার। ঝাড়খণ্ডের বারমোর কংগ্রেস বিধায়ক কুমার জয়মঙ্গল সিংহ রবিবারই রাঁচীর আরগোরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগপত্রে তিনি লিখেছেন, হাওড়া পুলিশের হাতে ধৃত তিন কংগ্রেস বিধায়ক তাঁকে কলকাতায় আসতে বলেছিল। সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল অসমের গুয়াহাটিতে। হেমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে দেখা করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ঝাড়খণ্ডে ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার- কংগ্রেসের জোট সরকার ফেলে দিয়ে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠা করা।
হেমন্ত বিশ্বশর্মা তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন ২২ বছর ধরে কংগ্রেস করেছেন তিনি। তাই কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতাদের সঙ্গে এখনও তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে কেন অভিযোগ দায়ের করা হল তা তিনি বুঝতে পারছেন না বলেও জানিয়েছেন।
শনিবার বিকেলে হাওড়ার পাঁচলা থেকে প্রচুর টাকা সমেত তিন ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস বিধায়ককে গ্রেফতার করে পুলিশ। ইতিমধ্যেই তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে। রাজ্য সরকার তদন্তের ভার সিআইডি-র হাতে দিয়েছে। কোথা থেকে টাকা এল আর কোথায় তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।