গ্রামীণ ভারতে করোনাভাইরাসের করুণ ছবি দেখালেন চিকিৎসক, বললেন অধিকাংশ মানুষই রোগের বাহক

  • গ্রামীণ ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ে আশঙ্কা 
  • আশঙ্কা প্রকাশ করেন বিহারের ভাগলপুরের এক চিকিৎসক
  • তিনি বলেন অধিকাংশ মানুষই করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য বাহক 
  • তিনি ভাগলপুর হাসপাতালের সর্বশেষ চিকিৎসক
     

 গ্রামীণ ভারতে করোনাভাইরাসের করুণ ছবি তুলে ধরলেন এক চিকিৎসক। তাঁর দাবি  বিহারের ভাগলপুর ও সংলগ্ন গ্রামগুলির অধিকাংশ বাসিন্দাই করোভাইরাস রোগের সম্ভাব্য বাহক। ভাগলপুর হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক কুমার গৌবর বলেছেন, ভাগলপুর আর তার পাশ্ববর্তী গ্রামগুলিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পর্যবেক্ষণের জন্য গিয়েছিলেন তিনি। তখনই গ্রামের বাসিন্দাদের করুণ ছবিটি তিনি দেখতে পান। তিনি আরও জানিয়েছেন, ভাগলপুর হাসপাতালে দায়িত্ব গ্রহণের পর তাঁর বেশ কয়েকজন সহকর্মীও মারাত্মক ছোঁয়াছে রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে কেউ-ই আর হাসপাতালের দ্বায়িত্ব  গ্রহণ করতে রাজি হয়নি। কিছুটা মানবিক তাড়নায় তিনি ভাগলপুর হাসপাতালের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন বলেও জানিয়েছেন। এই করোনা-কালে তিনি হাসপাতালের সর্বশেষ ডাক্তার বললে খুব একটা ভুল হবে না। 

বর্তমান ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত তিরিশ লক্ষেরও বেশি মানুষ। গত তিন সপ্তাহের মধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা কুড়ি লক্ষ বেড়ে গেছে। করোনা আক্রান্ত দেশগুলির মধ্যে ভারত রয়েছে তৃতীয় স্থানে। ভারতের আগে রয়েছে ব্রাজিল আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। আর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দাবি বর্তমান ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যায় শহরের সঙ্গে রীতিমত পাল্লা দিচ্ছে গ্রামগুলি।

Latest Videos

চিকিৎসক কুমার গৌরবের কথায়, দেশের দুই তৃতীয়াংশ মানুষই বাস করেন গ্রামীণ ভারতে। তাই গ্রামীণ ভারতে মহামারীর বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করতে চেয়েছিলেন তিনি। সেই কারণে তিনি পূর্ব বিহারের গ্রামাঞ্চলকেই বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর কথায় বর্ষার এই মরশুমে প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে পৌঁছানো ছিল রীতিমত কঠিন। সংক্রমণের ঝুঁকি আর বন্যা পরিস্থিতির কারণে গণপরিবহণ ব্যবস্থা পুরোপুরি বিপর্যস্ত।

ভাগলপুর হাসাপাতালে চিকিৎসা করতে গিয়ে তিনি রীতিমত হতাশ হন বলেও জানিয়েছেন কুমার গৌরব। কারণ হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই কম ছিল। চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাবও তাঁকে সমস্যায় ফেলেছিল। কিন্তু তাই নিয়েই তিনি গ্রামীণ ভারতের করোনা আক্রান্তদের পরিষেবা দেওয়ার মরিয়া চেষ্টা করে গিয়েছিলেন বলেও দাবি করেছেন। 

চিকিৎসকের  কথায় ভাগলপুর হাসপাতালের ওপর ভরসা করে থাকেন প্রায় ১০ মিলিয়ন মানুষ। কারণ এই হাসপাতালের থেকে ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে আর কোনও হাসপাতাল নেই যেখানে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হয়। কিন্তু এই হাসপাতালে একটি সমস্যাও ছিল, সেটি হল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের কিছুতেই দূরে রাখা যাচ্ছিল না তাঁদের আত্মীদের। কারণ খাবার দেওয়া বা জল দেওয়ার নাম করে তাঁরা প্রায়ই রোগীদের কাছে চলে যেতেন। এই সমস্যা দেখা গিয়েছিল আইসিইউতেও। হাসপাতালে আসা রোগীর আত্মীদের বারবার সাবধান করা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও কোনও লাভ হয়নি। কারণ অধিকাংশ মানুষই ফেস মাস্ক ব্যবহার করেননি। নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ও তাঁরা ছিলেন উদাসীন। এই ছবি ছিল যখন গোটা দেশের সঙ্গে বিহারেও কঠোরভাবে লকডাউন জারি করা হয়েছিল। আর গ্রামীণ ভারতের বাসিন্দাদের সচেতনার অভাবের জন্যও তাঁরা করোনাভাইরাসর রোগের বাহকে পরিণত হতে পারেন বলেও আশঙ্কা করছেন চিকিৎসক।  

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari: 'পুলিশ গরু প্রতি ২০০০ টাকা তোলা তোলে' বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দু অধিকারীর
বাজার থেকে ফেরার পথেই ঘটলো অঘটন! আতঙ্কের ছায়া শান্তিপুরে, দেখুন | Nadia News Today
'ভাইপোর চাকর পুলিশ কেন বিজেপি পোলিং এজেন্টদের গ্রেফতার করল?' গর্জে উঠে প্রশ্ন তুললেন শুভেন্দু
'কত বড় সাহস! পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলেছে ভোট দিতে যাবে না' এ কী অভিযোগ করলেন শুভেন্দু
Live: সাংবাদিক সম্মেলনে শমীক ভট্টাচার্য, কী বললেন তিনি, দেখুন সরাসরি