এক ভাইরাল ভিডিও (Viral Video)-তে, মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) ভোপালের (Bhopal) এক মদের দোকানে ভাংচুর চালাতে দেখা গেল, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি (BJP) নেত্রী উমা ভারতীকে (Uma Bharti)। তিনি রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ করতে চাইলেও, শিবরাজ সিং চৌহানের (Sivraj Singh Chauhan) সরকার রাজ্যে মদ সস্তা করেছে।
রবিবার একটি মদের দোকানে তুমুল ভাংচুর চালালেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেত্রী উমা ভারতী (Uma Bharti)। দীর্ঘদিন ধরেই মধ্যপ্রদেশে (Madhya Pradesh) মদ নিষিদ্ধ (Liquar Ban) করার দাবি জানিয়ে আসছেন উমা। এর আগে তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ না করা হলে, তিনি মদের দোকানের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করবেন। এদিন, ভোপালের (Bhopal) একটি মদের দোকানে তাঁকে ভাংচুর চালাতে দেখা যায়। স্বাভাবিকভাবেই সেই ভিডিও নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওতে, কয়েকজন অনুগামী ও নিরাপত্তা রক্ষীদের নিয়ে ভোপালের এক মদের দোকানে হানা দিতে দেখা গিয়েছে উমা ভারতীকে। করোনার কারণে, মদের দোকানের সামনে দড়ি দিয়ে বেড়া দেওয়া ছিল, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তার তলা দিয়ে গলে, দোকানে ঢুকে পড়েন। তাঁর হাতে ছিল একটি আধলা ইট। এরপরই, দোকানের মালিককে স্তম্ভিত করে, তিনি সেই আধলা ইটটি মদের বোতল লক্ষ্য করে ছুড়ে মারেন। বেশ কিছু মদের বোতল ভেঙে গুড়িয়ে যায়। পিছন থেকে তার অনুগামীরা 'ভারত মাতা কি জয়' বলে স্লোগান দেয়।
দেখে নিন ভাইরাল ভিডিওগুলি -
২০২১ সালেই উমা ভারতী বলেছিলেন, তিনি চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারির মধ্যে রাজ্যে মদ নিষিদ্ধ করবেন। তবে, তাঁর সেই অজ্ঞীকারের সম্পূর্ণ বিপরীতে হেঁটেছে তাঁরই দল বিজেপি পরিচালিত মধ্যপ্রদেশ সরকার। যে সময়সীমা দিয়েছিলেন উমা, তার দুই দিন পর, অর্থাৎ গত ১৭ জানুয়ারি শিবরাজ সিং চৌহানের সরকার, নতুন আবগারি নীতি ঘোষণা করেছিল। যার ফলে রাজ্যে মদ বিক্রি বন্ধ তো দূর, বরং মদ আরও সস্তা হয়েছে।
এই নীতি অনুসারে, মধ্যপ্রদেশে, বিদেশী মদের উপর আবগারি শুল্ক ১০ থেকে ১৩ শতাংশ কমেছে। প্রতিটি মদের দোকানে একইসঙ্গে দেশি ও বিদেশি মদ বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মদ উৎপাদনকারীদের সাধারণ আঙ্গুরের পাশাপাশি কালো আঙ্গুরের থেকেও ওয়াইন তৈরি করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। নয়া নীতিতে রাজ্যের মানুষ আগের থেকে চারগুণ বেশি মদ ঘরে মজুত করার অনুমতি পেয়েছেন। বার্ষিক আয় ১ কোটি টাকা বা তার বেশি হলে, বাড়িতেই বার খোলার অনুমতি পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে।
স্বাভাবিকভাবেই নিজের দলের সরকারেরই এই সকল পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন উমা ভারতী। গত জানুয়ারি মাসেই বলেছিলেন, তিনি যতদিন 'গঙ্গা অভিযানে' যুক্ত ছিলেন, মধ্যপ্রদেশে মদ ও নেশার দ্রব্য সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার বিষয়ে বেশ কিছু অসুবিধা ছিল। সেই অসুবিধাগুলির মধ্যে কিছু কিছু এখনও থেকে গিয়েছে।
বিজেপি নেত্রী আরও বলেন, করোনা মহামারির জন্য এই বিষয়ে জনগণ অংশগ্রহণ করতে পারছেন না। তাই এই বিষয়ে, রাজনৈতিকভাবে জোট নির্বিশেষে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের এই প্রচারে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। সেই সময়ই মধ্যপ্রদেশের এই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ১৪ ফেব্রুয়ারির পর তিনি রাজ্যে মদ-বিরোধী প্রচার শুরু করবেন। এদিন উমার রুদ্রমূর্তি দেখা গেল।