
ভারতে বিবাহবিচ্ছেদের হার মোটামুটি ১% হলেও, পুরুষদের উপর এর আর্থিক প্রভাব বেশ মারাত্মক। ফাইন্যান্স ম্যাগাজিনের একটি ২০২৫ সালের সমীক্ষা অনুযায়ী, ১,২৪৮ জন উত্তরদাতার মধ্যে প্রায় ৪২% ডিভোর্সড পুরুষ খোরপোশ বা আইনি খরচ মেটাতে লোন নিয়েছেন, যার মধ্যে প্রায় অর্ধেকই ৫ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করেছেন। ভারতে ডিভোর্স এখন আর শুধু সম্পর্ক ভাঙার গল্প নয়, এটি ক্রমশ ভেঙে পড়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং বাড়তে থাকা আর্থিক অস্থিতিশীলতার কাহিনী হয়ে উঠছে।
প্রায় ৪২% পুরুষ খোরপোশ বা আইনি খরচ মেটাতে লোন নেওয়ার কথা জানিয়েছেন। এই ঋণ কেবল স্বল্পমেয়াদী অসুবিধা নয়, প্রায়শই বছরের পর বছর ধরে থেকে যায়, যা বিবাহবিচ্ছেদের পরবর্তী জীবনে একটি দীর্ঘ ছায়া ফেলে।
প্রায় ৪৯% পুরুষ ৫ লক্ষ টাকার বেশি খরচ করেছেন, যেখানে মাত্র ১৯% মহিলা এই পরিমাণ খরচ করেছেন।
প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ডিভোর্সড পুরুষ বিবাহবিচ্ছেদের পরে তাদের সম্পদ নেতিবাচক হওয়ার কথা জানিয়েছেন। লোন, সেটেলমেন্ট এবং আইনি খরচের সম্মিলিত বোঝা অনেককে ঋণের ফাঁদে ফেলে দেয়, যার ফলে তারা আর্থিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধারের জন্য সংগ্রাম করতে থাকে।
শহুরে কেন্দ্রগুলিতে বিবাহবিচ্ছেদের হার ৩০-৪০% বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে আর্থিক সংকট সেই শহরগুলিতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে যেখানে উচ্চ জীবনযাত্রার খরচ এবং প্রত্যাশা অর্থনৈতিক ধাক্কাকে আরও তীব্র করে তোলে।
দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া এবং খোরপোশের বিতর্ক মাস বা এমনকি বছর ধরে চলতে পারে। পুরুষরা প্রায়শই এই দীর্ঘ লড়াইয়ের সময় আর্থিকভাবে সচ্ছল থাকার জন্য একাধিক উচ্চ-সুদের লোন নেন।
পুরুষরা, বিশেষ করে উচ্চ আয়ের স্তরের ব্যক্তিরা, হঠাৎ করে সম্পদ পুনর্বণ্টনের সম্মুখীন হন। বিবাহবিচ্ছেদ প্রায়শই পুরুষদের আর্থিকভাবে দুর্বল করে দেয়, এমনকি যদি তারা আগে স্থিতিশীলও থাকে, যেখানে মহিলাদের আর্থিক নিরাপত্তাকে নিষ্পত্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
ভারতে, বিয়ে কেবল একটি মানসিক বন্ধন নয়, এটি একটি সম্ভাব্য আর্থিক দায়ও হতে পারে, বিশেষ করে ডিভোর্সের সম্মুখীন পুরুষদের জন্য। লোন, খোরপোশ, আইনি খরচ এবং নেতিবাচক সম্পদ হাজার হাজার মানুষকে আর্থিক ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিচ্ছে, যা একটি দীর্ঘস্থায়ী অর্থনৈতিক সংগ্রামে পরিণত হচ্ছে।