“বাংলোটিতে প্রচুর বাঁদর ঢুকে পড়েছিল এবং প্রায় ৫০-৬০টি বাঁদরের একটা দল বাড়ির চত্বরের মধ্যে ঘোরাঘুরি করছিল এবং বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল।” প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু বার্ষিকীতে স্মৃতিচারণ করলেন মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায়।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের অবসর-পরবর্তী বাংলোটি একবার ‘বাঁদর দ্বারা আক্রান্ত’ হয়েছিল, কিন্তু তিনি সেই অনুপ্রবেশকে বাধা দেননি এটা বলে যে, মানুষ তাদের (বাঁদরদের) প্রাকৃতিক স্থান দখল করেছে, স্মরণ করলেন তাঁর মেয়ে শর্মিষ্ঠা মুখার্জি। বুধবার তাঁর বাবার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি অনলাইন ইভেন্টের সময় তিনি এই স্মৃতিটি শেয়ার করেছেন।
ভারাক্রান্ত হৃদয়ে স্মৃতিচারণা করে শর্মিষ্ঠা বলেন, "আমার বাবা একজন পশুপ্রেমী ছিলেন। রাষ্ট্রপতি হিসাবে অবসর নেওয়ার পর আমরা ১০ নম্বর রাজাজি মার্গের বাংলোতে চলে আসি। একবার বাংলোটিতে প্রচুর বাঁদর ঢুকে পড়েছিল এবং প্রায় ৫০-৬০টি বাঁদরের একটা দল বাড়ির চত্বরের মধ্যে ঘোরাঘুরি করছিল এবং বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল। তারা আম এবং বাদবাকি সবকিছু নষ্ট করে দিচ্ছিল, কিন্তু যখন এই কথাটা আমাদের বাবাকে বলা হল, বাবা বললেন, 'আমরাই ওদের জায়গা নিয়ে নিয়েছি।"
প্রণব মুখোপাধ্যায় ছেলেমেয়েদের এটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, "আমরা সবজি কিনতে পারি, কিন্তু বাঁদররা কি বাজার থেকে সবজি কিনতে পারে?"
২০১২ সালের ২৫ জুলাই, ভারতের ১৩ তম রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় এবং ২০১৭ সালের জুলাই মাসে ৮১ বছর বয়সে তিনি অবসর গ্রহণ করেন। এর তিন বছর পর তাঁর প্রয়াণ ঘটে।
অবসর গ্রহণের পরে, প্রণব মুখোপাধ্যায় রাজাজি মার্গে ১১,৭৭৬ বর্গফুট জায়গা জুড়ে বিস্তৃত বাড়িটিতে চলে গিয়েছিলেন। সেটির একতলায় একটি লাইব্রেরি এবং প্রণববাবুর জন্য একটি সংযুক্ত পড়ার জায়গা ছিল, কারণ তিনি বরাবরই একজন আগ্রহী পাঠক ছিলেন।
রাজাদের আমলের দ্বিতল বাংলো, ঢালু লাল-টাইলযুক্ত ছাদ এবং চিমনি লাগানো বাড়িটি নয়াদিল্লির কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত, ২০১৫ সালে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত এ পি জে আবদুল কালাম তাঁর মৃত্যুকাল পর্যন্ত এই বাড়িটিতেই বসবাস করতেন। প্রণব মুখোপাধ্যায় থাকাকালীন তাঁর বাড়িতে বাঁদরের উৎপাতের স্মৃতি ভাগ করে নিয়ে মেয়ে শর্মিষ্ঠা শোকের মুহূর্তকে খানিকটা হালকা করে তুললেন।