সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রাক্তন ক্রিকেটার তথা পূর্ব দিল্লির বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্বীরকে নিয়ে টিকাটিপ্পনি থামছেই না। এদিন সংসদের শীতকালীন অধিবেশন শুরুর দিনে ফের একবার দিল্লির দূষণ নিয়ে বৈঠকে তাঁর অনুপস্থিতির কারণ ব্যাখ্যা করলেন তিনি। টুইট করে সাংসদ হিসেবে নিজের কাজের ফিরিস্তিও দিলেন। কিন্তু তারপরেও নেটিজেনদের হাত থেকে মুক্তি পেলেন না। শেষে বিরক্ত হয়ে 'নিখোঁজ' বিজেপি সাংসদ বলে বসলেন, এবার জিলিপি খাওয়াই ছেড়ে দেবেন।
গত শুক্রবার দিল্লির দূষণ নিয়ে সংসদের স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক ছিল। যার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য পূর্ব দিল্লির সাংসদ গম্ভীর। কিন্তু সেই বৈঠকে তাঁকে দেখা যায়নি। তিনি সেই সময় ছিলেন ইন্দোরে, ভারত-বাংলাদেশ প্রথম টেস্টের ধারাভাষ্য দিচ্ছিলেন। গম্ভীর আরও সমস্যায় পড়েন সহধারাভাষ্যকার ভিভিএস লক্ষ্মণের একটি টুইটে, যেখানে হাসিমুখে তাঁকে জিলিপি খেতে দেখা গিয়েছিল।
এদিন সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে গম্ভীর জানান, তাঁর সঙ্গে একটি ক্রীড়া সম্প্রচারকারী সংস্থার ধারাভাষ্য দেওয়া নিয়ে চুক্তি হয়েছিল গত জানুয়ারি-তে। আর তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন গত এপ্রিল মাসে। গম্ভীরের দাবি, 'চুক্তিগত বাধ্যবাধকতা' থাকার জন্যই তিনি ওই 'গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে' যোগ দিতে পারেননি। বৈঠকের ই-মেল যেদিন তাঁর কাছে এসেছিল, ওই একই দিনে তিনি ইন্দোর রওনা হয়েছিলেন বলে জানান বিজেপি সাংসদ।
টুইট করেও একই কথা জানিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে সকাল ১১টা থেকে তিনি নিজের কার্যালয়ে বসে স্থানীয় মানুষদের সমস্যা সমাধান করেন। জানান, তাঁর লোকসভা কেন্দ্রে বড় বড় এয়ার পিউরিফায়ার লাগানো হচ্ছে। কিন্তু এইসব কথায় চিড়ে ভেজেনি। গম্ভীরের এই বিষয় আর সোশ্যাল মিডিয়ায় আটকে নেই। রবিবারই রাজধানীতে তাঁর নামে 'নিখোঁজ' পোস্টার পড়েছিল।
এদিন, নেটিজেনরা ফের প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর দায়বদ্ধতা নিয়ে। তাঁর কাজের যে ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন, তার জবাবে দিল্লিবাসী সাফ জানিয়েছেন ওইসব কাজ করার জন্যই তাঁকে সাংসদ করা হয়েছে। কাজেই বেশি কিছু তিনি করছেন না। কিন্তু গম্ভীরের ব্যাখ্যায় এটা স্পষ্ট তাঁর কাছে চুক্তির টাকাটা দিল্লির দূষণ নিয়ে বৈঠকের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অনেকেই বলেছেন, যদি দূষণ নিয়ে তাঁর চিন্তাই থাকত, তাহলে তিনি চুক্তি বাতিল করে, চুক্তির টাকাটা ফেরত দিয়ে দিতেন।
লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, জিলিপি কাণ্ডে প্রথম থেকে গৌতম গম্ভীর শুধুমাত্র নিজেকে লক্ষা করার চেষ্টা করে গিয়েছেন, নানা রকম ব্যাখ্যা, অযুহাত খাড়া করেছেন , আর আক্রমণ করেছেন দিল্লির আপ সরকারকে। একবারের জন্যও বৈঠকে উপস্থিত না থাকার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেননি। এদিনও সেই অবস্তান বজায় রেখেছেন তিনি। তাঁর মতে নেটিজেনরা মোটেই দূষণ নিয়ে ভাবিত নন, তাঁর জিলিপি খাওয়া নিয়ে ট্রোল করাতেই বেশি মন তাদের। যদি তাঁর জিলিপি খাওয়ায় দিল্লির দূষণ আরো বেড়ে থাকে তাহলে তিনি সারা জীবন আর জিলিপি এমন কথাও বলেছেন পূর্ব দিল্লির নিখোঁজ বিজেপি সাংসদ গৌতম গম্ভীর।