অর্থনীতিতে কেন বাংলাদেশের থেকেও পিছিয়ে পড়ছে ভারত, কোথায় ভুল হচ্ছে

আইএমএফ-এর সাম্প্রতিক পূর্বাভাস চমকে দেওয়ার মতো

২০২০ সালে মাথাপিছু জিডিপি-তে বাংলাদেশও এগিয়ে থাকতে পারে ভারতের থেকে

অথচ বাংলাদেশের স্বাধীনতায় সহায়তা করেছিল ভারত

কোথায় ভুল হচ্ছে ভারতের

 

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের বা আইএমএফ-এর সাম্প্রতিক পূর্বাভাস চমকে দিয়েছে সারা বিশ্বকে। বিশেষ করে জোর ঝাঁকুনি খেয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আইএমএফ জানিয়েছে, ২০২০ সালে মাথাপিছু মোট দেশীয় পণ্য উৎপাদনে ভারত পিছিয়ে পড়তে চলেছে প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের থেকেও। স্বাভাবিকভাবেই ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে এই পূর্বাভাসে প্রভাবিত না হওয়ার প্রচার শুরু হয়েছে। কিন্তু কোভিড পরবর্তী সময়কে সুযোগ হিসাবে কাজে লাগিয়ে আত্মনির্ভর ভারত গড়ে যে অর্থনীতিতে চিনকে পাল্লা দেওয়ার একটা প্রচার চলছিল, সেই প্রচারের পক্ষে এই পূর্বাভাস অত্যন্ত ক্ষতিকর তা বলাই বাহুল্য।

কিন্তু, গন্ডোগোলটা হচ্ছে কোথায়? বিশ্বব্যাংকের প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু জানিয়েছেন পাঁচ বছর আগেও পার ক্য়াপিটা জিডিপি-তে অর্থাৎ মাথাপিছু মোট দেশীয় পণ্য উৎপাদনে বাংলাদেশের থেকে ভারত ২৫ শতাংশ এগিয়ে ছিল। পাঁচ বছরের মধ্যে কীভাবে এতটা পিছিয়ে পড়ল ভারত?

Latest Videos

অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনভাইরাস মহামারির একটা বড় প্রভাব অবশ্যই রয়েছে। চলতি বছরের জুন মাসের মাঝামাঝি সময়েই বাংলাদেশের দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যা শীর্ষে পৌঁছেছিল। অন্যদিকে ভারতের করোনা দৈনিক কোভিড রোগী বৃদ্ধির রেখচিত্রটা বলতে গেলে সবে মাত্র নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে। সাড়ে ১৬ কোটি জনসংখ্যার দেশ বাংলাদেশে কোভিড -১৯ এখনও পর্যন্ত কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ৫,৬০০-র কম। ভারতের জনসংখ্যার বাংলাদেশের আট গুণ, কিন্তু কোভিডে প্রাণহানির সংখ্যা ২০ গুণ বেশি। সবচেয়ে বড় কথা, আইএমএফ-এরই মতে, ভারতে দীর্ঘদিনের লকডাউনে স্বাভাবিক উত্পাদনের ১০.৩ শতাংশ ক্ষতি হয়েছে।

তবে, পেনসিলভেনিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির অর্থনীতিবিদ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং ভারতের প্রাক্তন প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রমনিয়ন-এর একটি নতুন গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে এই মহামারি ছাড়াই ভারত পার ক্যাপিটা জিডিপির বিষয়ে বাংলাদেশের কাছে দৌড়ে পিছিয়ে পড়তে পারত। তাঁরা জানিয়েছেন আসলে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম - দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই দেশই গত কয়েক বছরে এই বিষয়ে দুর্দান্ত উন্নতি করে চলেছে। আর তাদের এই উন্নতির কারণ দুই দেশই এই বিষয়ে চিন-কে অনুসরণ করেছে। চিনের মতোই এই দুই দেশ তাদের তাদের শ্রমশক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে স্বল্প দক্ষ পণ্য উত্পাদন ও রফতানিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে।

অন্যদিকে, ভারত জুতো কিংবা পোশাক তৈরির স্বল্প দক্ষ পণ্যের কারখানা তৈরির চেয়ে বেশি মনোযোগ দিয়েছে সফ্টওয়্যার-এর মতো শিল্পের উন্নয়নে, যেখানে দক্ষ শ্রমিকের প্রয়োজন। অথচ, তৃতীয় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতের শ্রমশক্তিরও অধিকাংশটাই অদক্ষ বা স্বল্পদক্ষ। ফলে পার ক্যাপিটা জিডিপির যুদ্ধে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে ভারত।

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সবচেয়ে বড় বিপদটি হল এই অবস্থায় সংশোধনমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার পরিবর্তে আমাদের রাজনীতিবিদ তথা নীতি নির্ধারকরা অতীতের ভুলগুলিকেই বাড়িয়ে তুলছেন। সমস্যাটাকে স্বীকার না করে তাকে বাড়িয়ে তুলছেন। আমদানিতে কমিয়ে দেশীয় অর্থনীতির জন্য পণ্য তৈরি করে আত্মনির্ভর হওয়ার ডাক ভারতে গত শতাব্দীর ৬ ও ৭-এর দশকেও দেওয়া হয়েছিল, সেই স্লোগানই ফের শোনা যাচ্ছে। ১৯৯০-এ অর্থনীতি মুক্ত করার সময় থেকেই ভারতের স্বপ্ন ছিল চিনা অর্থনীতির দ্রুত সম্প্রসারণ ধরা। তিন দশক পর বাংলাদেশের পিছনে পড়ে গেলে চিনকে ধরা তো দূর সার্ক অঞ্চলেও প্রতিপত্তি হারাতে পারে ভারত, এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

 

Share this article
click me!

Latest Videos

'উনি মুখ্যমন্ত্রী উনি যা মনে করবেন তাই করবেন' হিডকোর চেয়ারম্যান পদ যেতেই এ কী বললেন ফিরহাদ?
দেখুন কামুক প্রতিবেশীর কাণ্ড! একলা পেয়ে নাবালিকাকে নিশানা! তারপর যা হলো | Ranaghat News Today
Live : শেষ বিদায় ড. মনমোহন সিং | Last Rites of Former PM Dr. Manmohan Singh
'সোমবারই সব তথ্য ফাঁস করবো!' বিস্ফোরক Suvendu Adhikari #shorts #shortsvideo #shortsfeed #shortsviral
কীভাবে তৃণমূল ভোটে জিতেছে মানুষ এবার বুঝতে পারছে, জঙ্গি যোগ নিয়ে রাজ্য সরকারকে ধুয়ে দিলেন শুভেন্দু