লকডাউন নয়, বেশি করে করোনা আক্রান্ত হতে হবে তরুণদের, মহামারি বিশেষজ্ঞ দিলেন অভিনব দিশা

লকডাউনকেই করোনার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত একমাত্র অস্ত্র বলা হচ্ছে
কিন্তু ভারতের শীর্ষস্থানীয় মহামারি বিশেষজ্ঞ অন্য কথা বলছেন
তার মতে তরুণদের নিয়ন্ত্রিতভাবে বের হতে দেওয়া উচিত
সেই ক্ষেত্রে গোটা ভারতে করোনার বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে উঠবে

 
করোনাভাইরাসকে রুখতে ভারত সরকার লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে। সেইসঙ্গে আইসিএমআর, যারা এই যুদ্ধে দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, সমালোচনার মুখে পড়ে তারা পরীক্ষা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যত বেশি সম্ভব কোভিড-১৯ রোগীকে চিহ্নিত করে তাদের বিচ্ছিন্ন করার পথে হাঁটছে। কিন্তু, যাই করা হোক না কেন, এভাবে করোনার কিছুটা ডানা ছাটা যাবে, কিন্তু তাকে একেবারে পরাস্ত করা যাবে না বলেই মত ভারতের শীর্ষস্থানীয় মহামারী বিশেষজ্ঞদের অন্যতম ডাক্তার জয়প্রকাশ মুলিয়িল-এর। বরং তিনি বলছেন, ভারতের উচিত লকডাউনে যুবদের বাইরে বের হতে দিয়ে নাগরিকদের 'হার্ড ইমিউনিটি' গড়ে তোলা, অর্থাৎ করোনাভাইরাস-এর বিরুদ্ধে ভারতীয়দের শরীরে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে তোলা।

কেন লকডাউন-এ হারবে না করোনা?
 
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে ডাক্তার মুলিয়িল জানিয়েছেন, দেশব্যাপী এই লকডাউন সম্প্রসারিত হওয়ায় এমনিতেই ভারতের অর্থনৈতিক বিরাট ক্ষতি হবে। কিন্তু তারপরেও লকডাউন কোভিড-১৯ সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার গতিকে স্লথ করতে পারলেও পুরোপুরি থামাতে পারবে না। যাদের দেহে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা যায় না, তাদের দেহে ঘাপটি মেরে থাকবে নভেল করোনাভাইরাস। যদি সকলের পরীক্ষা কর সম্ভব হয়, তবেই এদের ধরা সম্ভব হবে। নাহলে একবার লকডাউন উঠে গেলেই লোকেরা একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করবে আর ভাইরাসটি ফের স্বমূর্তি ধারণ করবে।

তাহলে উপায়?

মুলিয়িল-এর মতে যতদিন না টিকা তৈরি হচ্ছে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়ার অন্যতম উপায় হতে পারে 'হার্ড ইমিউনিটি', অর্থাৎ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেশি সংখ্যক নাগরিকদের অর্জিত রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে পুরো জনসংখ্যার একটি সাধারণ রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা গড়ে তোলা। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, যতক্ষণ সংক্রামিত হওয়ার মতো সংবেদনশীল জনগোষ্ঠী রয়েছে ততক্ষণই ভাইরাসেরা টিকে থাকতে পারে। যত বেশি লোক সংক্রামিত হয় তত বেশি করে তাদের বিরুদ্ধে মানব দেহে অ্যান্টিবডির বিকাশ ঘটে। আর এভাবেই পুরো সমাজেই একটি রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়। জনসংখ্যার ৫০ শতাংশ-ও সংক্রামিত হয়ে অ্য়ান্টিবডি তৈরি করতে পারলে তারাই ভাইরাসের প্রতিবন্ধক হিসাবে বাকি ৫০ শতাংশকে সুরক্ষা দিতে পারে।

একসঙ্গে পাঁচটি নমুনার পরীক্ষা, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় আইসিএমআর'এর নয়া কৌশল 'পুল টেস্টিং'

ভারতের এক চতুর্থাংশ জেলার রঙই 'লাল', 'সাদা' হল করোনা-ধ্বস্ত আরও ২০৭টি

ভারতেও এবার বাদুড় আতঙ্ক, আইসিএমআর-এর গবেষণায় করোনা মিলল দুই প্রজাতির দেহে

কীভাবে করোনাভাইরাস-এর বিরুদ্ধে এই পদ্ধতি কাজে লাগানো যেতে পারে?

ডাক্তার মুলিয়িল বলছেন বৃদ্ধদের জন্য একরকম এবং তরুণদের জন্য আরেকরকম কৌশল গ্রহণ করতে হবে। 'হার্ড ইমিউনিটি' অর্জন করতে গিয়ে মৃত্যুর হার যাতে বেড়ে না যায় সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। তাই, একসঙ্গে বেশি সংখ্যক জনগণকে সংক্রামিত হতে দেওয়া যাবে না। বিশাল জনসংখ্যা একসঙ্গে সংক্রামিত হলে হাসপাতালে জায়গা দেওয়া যাবে না। তাই প্রবীণরা যাদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি, তাদের বাড়িতে রেখে তরুণদের বাইরে বের হওয়ার অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। তবে তাদেরও মানতে হবে শর্ত।

তরুণরা যারা বাইরে যাবেন, তাদের বিশেষত বয়স্কদের থেকে নিজেদের দূরে রাখতে হবে। রাস্তায় বা অন্য যে কোনও জায়গায় দায়িত্ব নিয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো শিক্ষিত হতে হবে। বড় কোনও সমাবেশ করা যাবে না। জিম এবং শপিং সেন্টারগুলিকেও সামাজিক দূরত্বের নিয়ম মেনে নতুন নকশায় খোলা যেতে পারে। সেই ক্ষেত্রে বিশেষ কোনও ব্যয় ছাড়াই সমাজে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতা তৈরি হয়ে যাবে। তবে এতে কিছু মানুষের মৃত্যু হবে তা মেনে নিয়েছেন ডাক্তার মুলিয়িল। তবে তা এখন যেভাবে চলছে, তা অনুযায়ী যে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াবে, তার তুলনায় নগন্য হবে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, ইসরাইল এবং সুইডেন-এ ইতিমধ্যেই এই কৌশল সফল হয়েছে। ব্রিটেন এই পদ্ধতিতে অবশ্য ব্যর্থ হয়েছে। কারণ, হাসপাতালের উপর কী পরিমাণ রোগীর বোঝা চাপতে চলেছে, তা তারা আন্দাজ করতে পারেনি।
 

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari Live: এগরায় জনসভা শুভেন্দুর, কী বার্তা, দেখুন সরাসরি
Dev Adhikari : এবার কী আসছে খাদান ২? খাদান সাফল্য পেতেই বড়সড় ঘোষণা দেব-যীশুদের
‘Bangladesh-কে মারতে হবে না চোখ দেখালেই যথেষ্ঠ’ বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন Dilip Ghosh | Bangladesh News
'একটা আস্ত অশিক্ষিত...গোটা রাজ্যটাই জঙ্গিদের হাতে' কড়া বার্তা শুভেন্দুর | Suvendu Adhikari
Narendra Modi : 'কুয়েত যেন মিনি হিন্দুস্তান', কুয়েত সফরে এসে কেন বললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী?