বুধবার রাতে আইএনএক্স মিডিয়া মামলায় নাটকীয়ভাবে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। গ্রেফতারির পর তাঁকে আনা হয় সিবিআই-এর সদর দফতরে। ২০১১ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালীন এই ভবনটির উদ্বোধন করেছিলেন চিদম্বরমই। রাতে সিবিআই-এর পক্ষ থেকে তাঁকে খেতেও দেওয়া হয়। সেই খাবার অবশ্য মুখে তোলেননি চিদম্বরম।
বুধবার রাত থেকে দুই দফায় তাঁকে জেরা করা হয়েছে। প্রথম দফার জেরা শুরু হয় রাত ১২টা থেকে। পরের দফার জেরা হয়েছে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে। মোট ২০টি প্রশ্ন করা হয়েছে তাঁকে। দেখে নেওয়া যাক কী কী প্রশ্নের মুখে পড়লেন প্রাক্তন অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রথমেই জানতে চাওয়া হয় তিনি কেন লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করেছিলেন? এই সময়ে তিনি কোনও মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিলেন কিনা? দিল্লি হাইকোর্ট তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করার পর থেকে তিনি কার কার সঙ্গে দেখা করেছিলেন?
মঙ্গলবার তাঁকে বাড়িতে না পেয়ে হাজিরা দেওয়ার নোটিশ ঝুলিয়ে দিয়ে এশেছিল সিবিআই। তা মেনে তিনি কেন তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি তাও জানতে চাওয়া হয়।
এরপরই মূল মামলাটি নিয়ে প্রশ্নে ঢোকে সিবিআই। জানতে চাওয়া হয় আইএনএক্স মিডিয়ায় দুই প্রতিষ্ঠাতা ইন্দ্রাণী ও তাঁর প্রাক্তন স্বামী পিটার মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর কীভাবে আলাপ হয়েছিল।
এরপর জানতে চাওয়া হয়, ইন্দ্রাণীর সঙ্গে কোনও সাংবাদিক এসেছিলেন কিনা। টাকা পয়সার লেনদেনে কোথাও কোনও সাংবাদিকের ভূমিকা ছিল কিনা।
আইএনএক্স মিডিয়াকে ৩০৫ কোটি টাকার বিদেশী লগ্নির অনুমোদন পাইয়ে দেওয়ার বদলে তাঁর পুত্র কার্তিকে কী কী সুবিধা দেওয়া হয়েছিল সেই সম্পর্কেও জানতে চাওয়া হয়।
একই সঙ্গে জানতে চাওয়া হয়, আইএনএক্স মিডিয়া যে সংস্থাগুলিতে টাকা পাঠিয়েছিল, সেই সংস্থাগুলি তাঁর অথবা তাঁর পুত্রের নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা। তাঁদের কটি করে শেল কোম্পানি রয়েছে, সেই প্রশ্নও করা হয়।
সিবিআই ও ইডির অভিযোগ কার্তি চিদম্বরমকে যে অর্থ দেওয়া হয়েছিল, তা ব্যবহার করে তিনি ইউরোপ ও ভারতে বেশ কিছু স্থাবর সম্পত্তি ক্রয় করেছেন। এই নিয়েও চিদম্বরমকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে। কার্তিকে কেন ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড থেকে অর্থ পাঠানো হয়, তা জানতে চাওয়া হয়। একই সঙ্গে কার্তির বার্সেলোনার টেনিস ক্লাব ও ইংল্যান্ড, স্পেন ও মালয়েশিয়ার অন্যান্য সম্পত্তির অর্থ কোথা থেকে এল সেই প্রশ্ন করা হয়।
এখানেই রাতের প্রশ্নপর্ব শেষ হয়। এরপর সকাল ৮ট থেকে আইএনএক্স মামলা নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রস্ন করা হয় চিদম্বরমকে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী 'অস্পষ্ট', এবং 'দ্ব্যর্থবোধক' উত্তর দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সিবিআই কর্তারা। এই অবস্থায় তাঁকে আরও কিছুদিন হেফাজতে রাখতে চাইছে তারা। এদিন সিবিআই আদালতে সেই দাবিই জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা।