হাল ছাড়ার পাত্র নন তাঁরা। অল্পের জন্য় হাতছাড়া হয়েছে চন্দ্রায়ন ২ এর সফল অবতরণ। এবার ফের চাঁদের মাটিতে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন(ইসরো)। ২০২০ সালের নভেম্বরের মধ্যেই চাঁদের মাটিতে চন্দ্রযান ৩ পাঠাবে ভারত।
ইসরোরর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, নতুন চ্ন্দ্রযানের জন্য আলাদা করে ল্যান্ডার ও রোভার ডিজাইন করা হবে। অরবিটার-এর ক্ষেত্রেও আনা হচ্ছে নতুনত্ত্ব। মূলত অরবিটারের মধ্য়ে ইঞ্জিন ও জ্বালানি থাকায় চন্দ্রযান উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে একটা বড় ভূমিকা পালন করে এই যন্ত্র। পৃথিবীর কক্ষপথ ছাড়িয়ে চন্দ্রযানের কক্ষপথ পর্যন্ত বড় ভূমিকা নেয় এই অরবিটার। চ্ন্দ্রযান তিনের ক্ষেত্রে আলাদা অরবিটার-এর ব্য়বস্থা করছে ইসরো। যেখানে মূল যান আলাদা করার সুবিধা থাকছে নতুন অরবিটারে। ইসরোর এক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, চন্দ্রযান ৩-এ পুরোনো অভিযান থেকে শিক্ষা নেওয়া হয়েছে। এবার চন্দ্রযান-এর ল্যান্ডারের পা আরও বেশি শক্ত করা হবে। চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়লেও ল্য়ান্ডারে যাতে ক্ষতি না হয় সেদিকেই মূল নজর রাখবে ইসরো।
তবে ইসরোর এই উদ্যোগ যে খুব একটা সহজ হবে না তা ভালোভাবেই জানে সংস্থা। ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে এই ধরনের গবেষণামূলক কাজ অনেক সময়ই আর্থিক ভাণ্ডারে টান ধরায়। গতবার চন্দ্রযান ২-এর উৎক্ষেপণে ৬০০ কোটি টাকা খরচ করেছিল ভারত। যার বাইরেও ৩৭৫ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল জিএসএলভি এমকে থ্রি রকেট লঞ্চ করতে। তাই আগামী বছরের চন্দ্রযানের উৎক্ষেপণ ঘিরে সতর্ক থাকছে ইসরো।
চলতি বছরের ২২ জুলাই ইসরোর চন্দ্রযান মিশন শুরু হয় । অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে চন্দ্রযানকে নিয়ে আকাশপথে পাড়ি দেয় জিওসিঙ্ক্রোনাস রকেট। ২৩ দিন পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে ১৪ অগাস্ট ভোর রাতে চন্দ্রযান লাফ দেয় চাঁদের দিকে। ২৫ দিন চাঁদের চারিদিকে পাক খেয়ে অবশেষে অবতরণ। ৬ সেপ্টেম্বর মাঝরাতে চাঁদের নামতে গিয়েই বিপত্তি গটে। হঠাৎ হারিয়ে যায় বিক্রম। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ২.১ কিলোমিটার দূরে। বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় হতাশ হয়ে যায় দেশবাসী। স্বয়ং স্পেস সেন্টারে সেদিন উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কে শিবনের চোখে জল দেখে তাঁকে ভরসা জোগান প্রধানমন্ত্রী।
সম্প্রতি শিবন জানিয়েছেন, চন্দ্রযানের পাশাপাশি সোলার মিশন, এবং গগণযান প্রকল্পেও সমানভাবে এগিয়ে চলেছে ইসরো। তবে চন্দ্রযান ২ এর অবতরণ ঠিক না হলেও অরবিটার এখনও সফলভাবে কাজ করছে। যা থেকে বেশকিছু অতি মূল্যবান তথ্য পাওয়া গেছে। যা আগামীদিনে চাঁদের মাটিতে সফল ল্যান্ডিংয়ে সহযোগিতা করবে।