'৩০ বছরের ভুয়ো ষড়যন্ত্রের অভিযোগের পরে শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার' - রাজীব চন্দ্রশেখর

প্রায় তিন দশক ধরে চলা বাবরি মামলার রায় দিয়েছে আদালত

অভিযুক্ত ৩২ জনকেই বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে

রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব চন্দ্রশেখর অভিযোগ করলেন আসল ষড়ষন্ত্র করেছিল কংগ্রেস

বাবরি মামলার রায় নিয়ে কী লিখলেন তিনি

 

Asianet News Bangla | Published : Sep 30, 2020 5:30 PM IST / Updated: Sep 30 2020, 11:06 PM IST

রাজীব চন্দ্রশেখর, রাজ্যসভার সাংসদ, বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র : প্রায় তিন দশক আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় কংগ্রেস, নরসিমা রাও সরকারকে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে সিবিআই মামলা দায়ের করার জন্য চাপ দিয়েছিল।

বাবরি মসজিদ ধ্বংস যে উন্মত্ত জনতার স্বতঃস্ফূর্ত কাজ তা নিয়ে কখনও সন্দেহ ছিল না। আদবানিজির মতো বিজেপির বেশিরভাগ নেতাই মসজিদটি ভেঙে ফেলার জন্য উৎসাহি জনতাকে থামানোর জন্য কঠোর চেষ্টা করেছিলেন।

কংগ্রেস সরকার এবং সিবিআই-র এই অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করাটাই আসল ষড়যন্ত্র। পরবর্তী তিন দশক ধরে এটি নিয়ে ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করায় জন্য তা করেছিল কংগ্রেস। এই ইস্যুতে কংগ্রেস কত ভোট ও নির্বাচন জিতেছে বলুন তো? কত জন মুসলমান তাদের সম্প্রদায়ের উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করার পরিবর্তে এই মিথ্যার ভিত্তিতে কংগ্রেসকে অন্ধভাবে ভোট দিয়েছে। কংগ্রেসের উদ্দেশ্য সর্বদা পরিষ্কার ছিল - বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব মীমাংসার জন্য বাবরির করুণ ঘটনাটিকে ব্যবহার করা এবং বিজেপির এই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক বিবরণ দিয়ে ভারতীয় মুসলমানদের ভয় দেখিয়ে এবং আরও অবিশ্বাস ও বিভাজন সৃষ্টি করে কয়েক দশকের জন্য তাদের ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতিকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলা।

আদালত রায় দিয়েছে যে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের কোনও প্রমাণ নেই এবং সংবাদপত্রের কাটিং-এর মতো সিবিআই-এর পেশ করা প্রমাণ অগ্রহণযোগ্য। ভারতীয় ফৌজদারী আইনে একজন অভিযুক্ত দোষী প্রমাণিত না হওয়া অবধি নির্দোষ এবং অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র এবং অপরাধ প্রমাণের জন্য প্রমাণাদি এবং উপাদানসমূহ উপস্থাপন করা সিবিআই-এর দায়িত্ব ছিল। তারা তা করতে পারেনি কারণ ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণ করার পক্ষে কোনও প্রমাণ ছিল না। সরকারের চাপে সিবিআই সম্ভবত মামলাটি চেপে দিয়েছে বলে যাঁরা অভিযোগ করছেন, তাদের জন্য বলি, এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে সিবিআই যে মামলাটি করেছিল এবং প্রমাণাদি উপস্থাপন করেছিল, তা তারা ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতা গ্রহণের আগেই করেছিল।

অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে টানার ফলে আদবানিজি, এমএম জোশী, কল্যাণ সিং-এর মতো নেতাদের এই অভিযোগগুলি নিয়ে বেঁচে থাকার যন্ত্রনা ভোগ করতে হয়েছে। একই সঙ্গে এই মামলাটি নেতা এবং আইনের বিষয়ে বিজেপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে পার্থক্যকে তুলে ধরে। বিজেপি আইন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাসে অবিচল ছিল এবং ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত অটলজি সরকার থাকা সত্ত্বেও সিবিআই মামলায় কখনও হস্তক্ষেপ করেনি বা এটা প্রত্যাহারের কোনও চেষ্টা করেনি। এটি কংগ্রেস এবং তার আচরণের সম্পূর্ণ বিপরীত। পারিবারিক বন্ধু বোফর্স কোয়াত্রোচি থেকে ভোপাল গ্যাস ট্র্যাজেডি ইউনিয়ন কার্বাইডের ওয়ারেন অ্যান্ডারসন থেকে সম্প্রতি টুজি এবং অন্যান্য কেলেঙ্কারীতে, বহু অভিযুক্তকে কংগ্রেস আইন হাত থেকে পালিয়ে যেতে দিয়েছিল।

কংগ্রেস সরকার সত্যি সত্যি কখনই এই মর্মান্তিক ধ্বংসকাণ্ডের তদন্তের জন্য কঠোর প্রচেষ্টা করেনি। পরিবর্তে তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল তড়িঘড়ি এই বিজেপি নেতাদের উপর সন্দেহজনক প্রমাণের ভিত্তিতে একটি মিথ্যা ফৌজদারী ষড়যন্ত্রের মামলা দায়ের করা - বিজেপির উত্থানকে স্তিমিত করার এবং তার নেতাদের ফাঁদে ফেলার চেষ্টা এবং মুসলমানদের বিচ্ছিন্ন ও ভীত রাখার জন্য বিভাজনমূলক রাজনৈতিক কৌশল অব্যাহত রাখার চেষ্টা।

হ্যাঁ, তিন দশক আগে এখানে একটি ফৌজদারি ষড়যন্ত্র হয়েছিল - এটি ছিল কংগ্রেসের রাজবংশ এবং নেতৃত্বের অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, সত্য অনুসরণের পরিবর্তে এটিকে একটি ভুয়ো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে তোলা - এইভাবে এর পরে বহু বছর ধরে ভারতে হিংসা ও সন্ত্রাসবাদের হিংস্র উপাদান সরবরাহ করেছে। এখন সময় এসেছে কংগ্রেস এবং অন্যান্য দলগুলির এই বিভাজনমূলক রাজনীতি বন্ধ করে শক্তিশালী সংযুক্ত ভারত গড়ার জন্য নিরাময় ও পুনর্মিলনকে উৎসাহ দেওয়ার।

Share this article
click me!