রাজনৈতিক নেতাদের কাছ থেকে উদ্ধার ২৪০ কোটিরও বেশি টাকা। কর্ণাটকে ভোটের আগে ধরপাকড় করতে চূড়ান্ত তৎপর হয়েছে নির্বাচন কমিশন। একের পর এক ভিডিও ভাইরাল।
কর্ণাটকের নির্বাচনী মরসুমে রাজ্যের রাজনীতিতে শিরোনামে রয়েছে দুর্নীতির ধরপাকড়, যা নিয়ে দক্ষিণী রাজনীতিতে এই মুহূর্তে শুরু হয়েছে চূড়ান্ত ডামাডোল। রাজনৈতিক নেতাদের সম্পত্তির পরিমাণের হিসেবনিকেশ নিয়ে তৎপর হয়ে উঠেছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা। নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হওয়ার পর থেকে নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা প্রায় ২৪০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ বাজেয়াপ্ত করেছেন।
নগদ টাকা থেকে শুরু করে মদ, সোনা, রুপো, এমনকি মাদকদ্রব্য পর্যন্ত বাদ পড়েনি দুর্নীতি থেকে। নগদ টাকা পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে, নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন যে, প্রায় ৮০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। প্রায় ৭৮ কোটি টাকার মূল্যবান ধাতু এবং ৫০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, ভোটের আগে বিভিন্ন বিধি লঙ্ঘনের জন্য সারা রাজ্য জুড়ে মত ১৭১৪ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং রাজ্যে জামিন অযোগ্য ধারায় প্রায় সাড়ে এগারোশোরও বেশি ওয়ারেন্ট কার্যকর করা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা সন্দেহজনক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে বেশ কয়েকটি দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন, যেগুলির খবরে সমগ্র রাজ্য জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।
শিবমোগায় সাগরার বিজেপি প্রার্থী হরতালু হালাপ্পার সহযোগী মহেশের একটি চাঞ্চল্যকর ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে নেট দুনিয়ায়। দেখা যাচ্ছে, একটি ঘরের ভেতর একটি লাল রঙের ব্যাগে ভর্তি করে বান্ডিল বান্ডিল নোট রাখছেন মহেশ। রং দেখে অধিকাংশ নোটই পাঁচশো, দুশো এবং দুই হাজার টাকা বলে বোঝা যাচ্ছে। কী প্রয়োজনে অত টাকা তিনি ওই ব্যাগের মধ্যে ভরছিলেন, তার কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। ভাইরাল হয়ে যাওয়া ভিডিওটির উপর ভিত্তি করে সাগারা ফ্লাইং স্কোয়াডের অফিসার দানাপ্পা একটি অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে মহেশের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়। মহেশ সাগারা পৌরসভার সহ-সভাপতি পদে নিযুক্ত রয়েছেন।
অপর একটি ঘটনাও ঘটেছে এক বিজেপি প্রার্থীকে কেন্দ্র করেই। কর্ণাটকের বগালাকোট জেলায় মুধোলায় প্রায় হাজারখানেক রুপোর প্রদীপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। নির্বাচনী আধিকারিকরা দেখতে পান যে, প্রদীপগুলিতে বিজেপি প্রার্থী মুরুগেশ নিরানির ছবি লাগানো রয়েছে। একটি বাড়ির ভেতর তল্লাশি চালিয়ে অন্তত ১০ বাক্স রুপোর প্রদীপ উদ্ধার করা হয়েছে। বাক্সগুলি থেকে প্রায় ৯৬৩টি প্রদীপ উদ্ধার করা গেছে, যার মোট আনুমানিক মূল্য প্রায় ২১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬৭২ টাকা।
তৃতীয় ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের কংগ্রেস নেতাকে কেন্দ্র করে। এখানকার কেপিসিসি সভাপতি ডি কে শিবকুমারের স্ত্রী ঊষা, ছেলে, মেয়ে এবং জামাই হেলিকপ্টারে চড়ে দক্ষিণের কন্নড় জেলার ধর্মস্থানে গিয়েছিলেন। তাঁরা ম্যাঙ্গালোর পর্যন্ত হেলিকপ্টার ব্যবহার করেছিলেন। নির্বাচন কর্মকর্তারা হেলিকপ্টারটি পরীক্ষা করতে গেলে পাইলট রাম দাসের সাথে তাঁদের বেশ অনেকক্ষণ ধরে তর্কবিতর্ক হয়। ‘ব্যক্তিগত বিমান’ বলে উল্লেখ করে পাইলট মোটেই হেলিকপ্টারের দরজা খুলতে চাইছিলেন না। তবে, বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তার পর নির্বাচন কর্মকর্তাদের হুঁশিয়ারিতে অবশেষে তিনি কপটারের দরজা খুলে দেন এবং কমিশনের আধিকারিকরা তখন নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হন।
আরও পড়ুন-
এপ্রিলের শেষদিকে কোন শহরে ঊর্ধ্বমুখী জ্বালানির দাম? দেখে নিন রবিবারের পেট্রোল-দর
New Town Kolkata: কলকাতার নিউ টাউনকে স্মার্ট সিটির স্বীকৃতি, তিনটি বিভাগে শীর্ষে রাখল কেন্দ্র সরকার
এক ধাক্কায় অনেকটা কমে গেল সোনা-রুপোর দাম, দেখে নিন রবিবারের লেটেস্ট আপডেট