১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর আরএসএসের করসেবকদের হাতে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল ইতিহাস। ৬ ঘন্টার চেষ্টায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল মোগল সম্রাট বাবর প্রতিষ্ঠিত ঐতিহাসিক মসদজিদটি। তারপর ২৭ বছর কেটে গিয়েছে। বর্তমানে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সারা দেশ উত্তপ্ত। তার আঁচ আরও বাড়িয়ে দিল আরএসএস-এর একটি নক্কারজনক কাজ। যে বাবরি মসজিদ ধ্বংস-কে সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা রায় ঘোষণার সময় 'জঘন্য অপরাধ' বলে উল্লেখ করেছিল, সেই কাজেরই পুনরাভিনয় করানো হল আরএসএস পরিচালিত এক স্কুলের শিশুদের দিয়ে।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাতে বিজেপি শাসিত দক্ষিণ ভারতের একমাত্র রাজ্য কর্নাটকের ম্যাঙ্গলোরের কাছে কল্লাড়কা-র শ্রী রাম বিদ্যা কেন্দ্র-এ। 'ক্রীড়োৎসব' নামে ওই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেই ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, সাদা ও গেরুয়া পোশাকে সজ্জিত শিশুরা 'শ্রী রামচন্দ্রের জয়' ও 'ভারত মাতার জয়' স্লোগান দিতে দিতে মঞ্চের মাঝখানে রাখা বাবরি মসজিদের একটি বিশাল পোস্টারের দিকে ছুটে যাচ্ছে। নেপথ্যে একটি কন্ঠে ১৯৯২ সালের ঘটনার বর্ণনা করা হচ্ছে। তারপরই 'জয় হনুমান' ও 'বজরংবলীর জয়' শ্লোগান দিতে দিতে ওই শিশুরা অযোধ্যার বাবরি মসজিদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলছে।
'ক্রীড়োৎসব'-এ কিন্তু প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় রাসায়নিক ও সার মন্ত্রী, ডিভি সদানন্দ গৌড়া, এবং পুদুচেরি-র লেফটেন্যান্ট গভর্নর কিরণ বেদী।
স্কুলটি সরাসরি আরএসএস পরিচালিত না হলেও, কর্ণাটক আরএসএসের অত্যন্ত প্রভাবশালী নেতা তথা দক্ষিণ-মধ্য অঞ্চলের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য প্রভাকর ভাট-এর একটি ট্রাস্ট স্কুলটি চালায়।
ভারতীয় যুব কংগ্রেসের জাতীয় প্রচার ইনচার্জ শ্রীবৎস ওয়াই বি টুইট করে বলেন, আরএসএস-বিজেপি ভারতের সমাজ পুরোপুরি অধিগ্রহণ করলে এটাই দেশের শিক্ষার ভবিষ্যত হবে। এই কারণেই বিজেপি-আরএসএস'এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ করা প্রত্যেক ভারতবাসীর কর্তব্য বলে দাবি করেছেন তিনি। কংগ্রেস মুখপাত্র ভিএস উগ্রাপ্পা বলেছেন, এই কর্মসূচির অ্যাজেন্ডা ছিল 'হিন্দুদের খুশি করা'।
পরে অতিথি হিসবে থাকা কিরণ বেদীও ওই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিও টুইট করেন। সেখানে অবশ্য ভাঙতে নয়, স্কুলের বাচ্চাদের অযোধ্যায় প্রস্তাবিত রাম মন্দির তৈরি করতে দেখা গিয়েছে।