লাদাখ সীমান্ত উত্তাপের আঁচ পড়তে পারে সমুদ্রেও, চিনের গতিবিধির ওপর নজর রাখতে ভারতীয় নৌবাহিনীর কৌশল

নৌশক্তিতে এগিয়ে ভারত
চিনা জাহাজের ওপর টহলদারি মালাক্কা স্ট্রিপে
সতর্ক করা হয়েছে আন্দামানঘাঁটিকে 
 

পূর্ব লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা ক্রমশই বাড়ছে। ইতিমধ্যেই দুই দেশই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ সীমারেখা সংলগ্ন এলাকায় সৈন্য সংখ্যা বাড়িয়েছে। একে অপরকে টক্কর দিতে সীমান্ত বাড়ানো হচ্ছে যুদ্ধবিমান  আগ্নেয়াস্ত্রের সংখ্যাও। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দুই দেশের  বিবাদ হিমালয় থেকে নেমে সমুদ্র পর্যন্ত গড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সমর বিশেষজ্ঞরা। আর যদি তাই হত তাহলে ভারতকে এখন থেকেই রণকৌশল রচনা করতে হবে বলেও মনে করছেন তাঁরা। কারণ সমর বিশেষজ্ঞদের মতে সমর সজ্জা, স্থল বাহিনী ও ভূখণ্ডের দিক দিয়ে বিচার করলে ভারতের থেকে কিছুটা হলেও সুবিধেজনক অবস্থায় রয়েছে চিন। কিন্তু চিনের তুলনায় ভারতে নৌশক্তি অনেকটাই বেশি বলে দাবি করছেন তাঁরা। পাশাপাশি ভৌগলিক অবস্থানের কারণে নৌ যুদ্ধে চিনের থেকে এগিয়ে রয়েছে ভারত। 


একের পর এক পরিকল্পনা গ্রহণ করে সম্প্রতি বেশ কয়েক বছর ধরে ভারত সমুদ্রগুলিতে শক্তি একীকরণের চেষ্টা করেছে। ২০১৩ সাল থেকেই ভারতীয় যুদ্ধজাহাজগুলি উপকূলের ওপর নজর রেখে চলছে। ভারতীয় নৌবাহিনীর কড়া নজরে রয়েছে ভারতমহাসাগরের বেশ কয়েকটি এলাকায়। যেগুলি দিয়ে চিনা পণ্যবাহি জাহাজ চলা করে সেই সব রাস্তাতেও নজরদারী চালাচ্ছে ভারত। পূর্বভারত মহাসাগরে চিনা সাবমেরিনের ওপর নজর রাখার জন্য আন্দামান দীপপুঞ্জ থেকে পি-৪আই সামুদ্রিক টহল বিমানের মাধ্যমে নজরদারী চালান হচ্ছে। ভারতের উপকূলবর্তী রাডার স্টেশনগুলিকে সক্রিয়  রাখার পাশাপাশি সুশৃঙ্খলভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। চটজলদি তথ্য সরবরাহের ওপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। 

Latest Videos


চিনও উপকূলবর্তী এলাকায় টহলদারি বাড়িয়েছে। ২০১৩ সালেই পিপিলস লিবারেশন আর্জি শ্রীলঙ্কায় একটি সাবমেরিন পাঠিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক আধিপত্য বিস্তারের সূচনা করেছিল। তারপর থেকে তা অব্যাহত রেখে বেজিং। সূত্রের খবর সম্প্রতি চিন বেশ কয়েকটি গোয়েন্দা জাহাজ আন্দামান সাগরে পাঠিয়েছে, তাদের মূল উদ্দেশ্যই ছিল ভারতীয় নৌবাহিনী তৎপরতা ট্র্যাক করা। যদিও এখনও পর্যন্ত ভারতীয় নৌবাহিনীকে কোনও রকম চ্যালেঞ্জ জানায়নি চিন । কিন্তু ভারতীয় নৌকর্তারা জানিয়েছেন তাঁরা সবরকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছেন। 


তবে নৌসেনা সূত্রের খবর ১৯৯৯ সালে ভারতীয় নৌবাহিনী অপারেশন তলওয়াল ও ২০০১ সালে অপারেশন পরাক্রম চালিয়ে আরব সাগরের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পাকিস্তানের ওপর অবরোধ তৈরি করেছিল। কিন্তু চিনের ক্ষেত্রে তা করা কিছুটা হলেও সমস্যার। কারণ পূর্ব মাল্লাকার পরে ভারতের তেমন কোনও অস্তিত্ব নেই। সেক্ষেত্র প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমেরিকা, জাপান আর ভিয়েতনামের সঙ্গে হাত মিলিয়েই কাজ করতে হবে ভারতকে। তাই সমর বিশেষজ্ঞদের কথায় অত ঝক্কি না নিয়ে এই পরিস্থিতিতে চিনা জাহাজের ওপর কড়া নজরদারি চালানোই ভালো। কারণ মালাক্কা স্ট্রাইপ দিয়ে চিনের কার্গো ও তেলবাহী জাহাজগুলি চলাচল করে। ভারতমহাগরের চেকপোস্টগুলিতে অগ্রাসী টহল চিনা জাহাজ চলাচল কমাতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। এক্ষেত্রেও বেশি অগ্রাসী ভূমিকা গ্রহণ করা ঠিক নয়। কারণ আন্তর্জাতিক সমুদ্র নীতি মেনেই সতর্কতার সঙ্গে চিনা পণ্যবাহি জাহাজগুলিকে ট্র্যাক করতে পারে ভারত। 


দ্বিতীয় ভারতীয় নৌবাহিনীকে নিকটবর্তী একটি কৌশলগত স্থানের ওপর নজর দিতে হবে। সূত্রের খবর সেই কারণেই ইতিমধ্যেই আন্দামানঘাঁটিতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে নৌবাহিনীকে। যুদ্ধ বিমান ও যুদ্ধ জাহাজও মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সাবমেরিনও নিয়ে যাওয়া হয়েছে। 


ভারতের উচিৎ দক্ষিণ এশিয়ায় চিনের নৌঘাঁটিগুলির সক্রিয়তা হ্রাস করার কৌশল গ্রহণ করা। ইতিমধ্যেই শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা ও বাংলাদেশের চট্টোগ্রামে চিনা নৌঘাঁটি তৈরি হয়েছে। মায়ানমারের সিটওয়েতেই চিনা যুদ্ধ জাহাজের অবস্থান প্রত্যক্ষ করা যায়। সেক্ষেত্র এই একালাগুলি থেকে চিনে সক্রিয়তা কমানোর কূটনৈতিক কৌশল গ্রহণ করাও জরুরি। 
 

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari Live : বিধানসভার বাইরে বিস্ফোরক শুভেন্দু অধিকারী, সরাসরি | Bangla News
'তৃণমূলের শান্তির ছেলেরা...মমতা-বিনীতকে জেলে ঢোকাবই' RG Kar কাণ্ডে বিস্ফোরক Suvendu Adhikari
এ যেন লুকোচুরি খেলা! ক্ষণে ক্ষণে স্থান পরিবর্তন, এখনও অধরা বাঘিনী যমুনা | Jhargram Tiger News
'কেন্দ্র যদি একটু দয়া দেখায় তাহলে হুগলিতেও মেট্রো চলবে', আশাবাদী Rachana Banerjee
'তৃণমূলের শান্তির ছেলেরা প্রমাণ লোপাট করেছে' | Suvendu Adhikari | #shorts #suvenduadhikari #rgkar