ছিল না লাইসেন্স, কুকীর্তির ৪৮ ঘণ্টা আগেও পালিয়েছিল মূল অভিযুক্ত আরিফ

  • হায়দরাবাদ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত মহম্মদ আলি ওরফে আরিফ
  • দু' বছর ধরে লাইসেন্স ছাড়াই ট্রাক চালাচ্ছিল সে
  • ঘটনার আগেও সরকারি আধিকারিকদের চোখে ধুলো দেয় অভিযুক্ত
     

হায়দরাবাদে নির্যাতিতা পশু চিকিৎসক নিখোঁজ হওয়ার পরে যে পুলিশ তাঁকে খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে দায়সারা মনোভাব দেখিয়েছিল, তা আগেই প্রমাণিত হয়েছিল। এবার সামনে এল আরও এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। হায়দরাবাদে পশু চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত মহম্মদ আলি ওরফে আরিফ প্রায় দু' বছর ধরে লাইসেন্স ছাড়াই ট্রাক চালাচ্ছিল। এমন কী ওই তরুণীর উপরে নির্যাতনের আটচল্লিশ ঘণ্টা আগে সরকারি আধিকারিকরা তাকে ধরলেও ট্রাক নিয়ে পালিয়ে  গিয়েছিল ধূর্ত আলি। 

একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকের খবর অনুযায়ী, মহম্মদ আলি  ওরফে আরিফের ট্রাকটি গত ২৫ নভেম্বর মেহবুব নগরে আটকায় ভিজিল্যান্স এবং পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরা। আলির কাছে সেই সময় কোনও লাইসেন্স ছিল না। পুলিশের দাবি, ট্রাক ধরা পড়তেই সেটির সেলফ স্টার্ট কেবল খুলে দেয় আরিফ। ফলে ট্রাকটি আর স্টার্ট নেয়নি। বেশ কিছুক্ষণ ধরে চেষ্টার পরেও ট্রাকটিকে নড়াতে না পেরে অন্যত্র চলে যান সরকারি আধিকারিকরা। সেই সুযোগেই ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায় আরিফ। এর ঠিক দু' দিন পরেই ২৭ নভেম্বর রাতে নিজের তিন সঙ্গীকে নিয়ে ওই পশু চিকিৎসকের উপরে নির্যাতন চালায় সে।

Latest Videos

পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৪ নভেম্বর আরিফ এবং ট্রাকের খালাসি জোল্লু শিবা ট্রাকে ইট বোঝাই করে কর্নাটক থেকে হায়দরাবাদের দিকে আসছিল। মাঝপথে ধর্ষণ এবং খুনে অভিযুক্ত জোল্লু নবীন এবং চিন্তাকুন্তা চেন্নাকেশভুলুকে তেলেঙ্গানার গুড়িগান্দলা গ্রামের কাছে ডেকে নেয় আরিফ। নিয়ম বহির্ভূতভাবে বেশ কিছু স্টিলের সামগ্রী ট্রাকে ওভারলোড করে হায়দরাবাদ নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তার। 

আরও পড়ুন- 'আমারও মেয়ে রয়েছে', ছেলের ঘৃণ্য অপরাধে স্তম্ভিত মা

আরও পড়ুন- মেয়ের মতোই পুড়িয়ে মারা হোক ধর্ষকদের, দাবি হায়দরাবাদের নির্যাতিতার মায়ের

এর পরেই ২৫ নভেম্বর ভোরবেলা মেহবুবনগরের কাছে ট্রাকটিকে আটকান সরকারি আধিকারিকরা। কিন্তু ট্রাকটি বিকল করে দিয়ে তাঁদের চোখে ধুলো দিয়ে ট্রাক নিয়ে পালায় আরিফ। একটি পেট্রোল পাম্পে গিয়ে ট্রাকটি পার্ক করে সে। সেখানে ফের তার সঙ্গে যোগ দেয় চেন্নাকেশভুলু এবং নবীন। বেআইনিভাবে যে স্টিল ট্রাকে তোলা হয়েছিল, রাইকাল টোল প্লাজার কাছে সেগুলি চার হাজার টাকায় বেচে দেয় অভিযুক্তরা। 

২৬ নভেম্বর রাত ন'টা নাগাদ শামসবাদ পৌঁছয় ওই ট্রাকটি। সেখানেই রাস্তার পাশে ট্রাক রেখে চার অভিযুক্ত ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন সকাল ৯টা নাগাদ পুলিশ এসে ট্রাকটি সেখান থেকে সরিয়ে নিতে বলে। কিন্তু শামসবাদ থেকে চলে না গিয়ে থোন্ডুপল্লি ওআরআর টোল প্লাজার কাছে গিয়ে ট্রাকটি দাঁড় করায় আরিফরা। সেখানেই মদ্যপান করার সময় ওই তরুণী পশু চিকিৎসকে দেখে তারা। এর পরেই তৈরি হয় ঘৃণ্য অপরাধের ছক। 

পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতনের সময় অচেতন করতে জোর করে ওই তরুণীর মুখে মদ ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। নির্যাতিতার সংজ্ঞা ফেরার পরে তিনি চিৎকার শুরু করতেই তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আরিফই। 

নির্যাতিতার দেহ ট্রাকে তুলে ছাত্তনপল্লির কাছে কালভার্টের নীচে ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয় অভিযুক্তরা। নষ্ট করে দেওয়া হয় তাঁর দু'টি সিম কার্ডও। পশু চিকিৎসকের স্কুটারটি নিয়ে কোঠুর এলাকায় রেখে আসে অভিযুক্তরা। এর পর ২৮ নভেম্বর ট্রাক নিয়ে তারা আরামগড় পৌঁছয়। সঙ্গীরা চলে যাওয়ার পরে ট্রাক পার্ক করে বাড়ি চলে যায় আরিফ। প্রশ্ন উঠছে, সরকারি আধিকারিকরা যদি একটু সতর্ক হতেন এবং ২৫ তারিখ ধরা পড়ার পরে যদি ট্রাক নিয়ে আরিফ পালাতে না পারত, তাহলে হয়তো তার খপ্পরেই পড়তে হতো না নির্যাতিতাকে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

'রোহিঙ্গারা মমতার ভোট ব্যাঙ্ক তাই তিনি বিএসএফকে জমি দিচ্ছে না' বিস্ফোরক মন্তব্য অগ্নিমিত্রার
Suvendu Adhikari Live: বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে মহা মিছিল শুভেন্দুর, দেখুন সরাসরি
'কলকাতার ম্যাডাম আমাকে হারাতে সংখ্যালঘুদের ভুল বুঝিয়েছে' নাম না করে মমতাকে তোপ শুভেন্দুর
পুলিশি অভিযানে বড়সড় সাফল্য! উত্তেজনা রানাঘাটে, দেখুন | Ranaghat News Today
‘তৃণমূল কেমিক্যাল দিয়ে আমায় মারার প্ল্যান করছে’ তৃণমূলের চক্রান্ত ফাঁস করলেন অর্জুন সিং! দেখুন