ভারতের থেকে চিন পেতে চলেছে পাকিস্তানের মতো ব্যবহার
আর বন্ধুত্বের হাত বাড়ানো যে হবে না তা স্পষ্ট
চিনা নাগরিকদের ভিসা নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছেন মোদী
শিক্ষাক্ষেত্রেও চিনা প্রভাবে পড়তে পারে বড়সড় কোপ
একেবারে পাকিস্তান-এর দৃষ্টিতেই চিন-কে দেখা শুরু করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত কয়েক বছরে, বিশেষ করে ডোকলামের ঘটনার পর থেকে মোদী সরকার জিনপিং প্রশাসনের সঙ্গে বন্ধুত্বের অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু, গালওয়ান উপত্যকার প্রতারণার পর, একেবারে পাকিস্তান-দাওয়াইতেই চিনকে সবক শেখাতে চলেছে ভারত। জানা গিয়েছে, ভারতের ভিসা পেতে এখন চিনা নাগরিকদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলির সঙ্গে বেজিং-এর সংযোগের বিষয়েও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হচ্ছে।
ভারতের বিদেশমন্ত্রকের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, চিনা ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী বা শিক্ষক, শিল্প বিশেষজ্ঞ এবং বিভিন্ন অ্যাডভোকেসি গোষ্ঠীগুলিকে ভিসা দেওয়ার আগে তাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত ছাড়পত্রের প্রয়োজন হবে। যা দেবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। ভারতের বিসা পাওয়ার জন্য নিরাপত্তার ছাড়পত্র এতদিন শুধুমাত্র পাকিস্তানি নাগরিকদেরই প্রয়োজন হতো। এবার চিনা নাগরিকদের ক্ষেত্রেও সেই ব্যবস্থাই নেওয়া হল।
সেইসঙ্গে বিভিন্ন চিনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জোট বেঁধে ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যে পাঠক্রম চলে তাতেও বড়সড় কোপ পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আইআইটি, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিভিন্ন ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চিনা প্রতিষ্ঠানগুলির হওয়া ৫৪ টি সমঝোতা চুক্তি পর্যালোচনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিশেষ করে নজর রয়েছে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট-এর সঙ্গে হওয়া চুক্তিগুলির উপর। কারণ সরকার মনে করে তারা নীতি নির্ধারক, বিভিন্ন থিংক ট্যাঙ্ক, রাজনৈতিক দল, কর্পোরেশন এবং শিক্ষাবিদদের প্রভাবিত করে। এই অবস্থায় মনে করা হচ্ছে একমাত্র ম্যান্ডারিন ভাষার শিক্ষার পাঠক্রম বাদে, চিনা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে আর সবরকম শিক্ষা সংক্রান্ত আদানপ্রদান বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।
এই বিষয়ে অবশ্য সরকারিভাবে বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। তবে জানা গিয়েছে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চিনের উপর ভারতের অতিরিক্ত নির্ভরতা কমাতে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ প্রভাবের কমাতে এই ধরণের বিভিন্ন পদক্ষেপের নকশা করা হয়েছে। তবে সেগুলি বাস্তবে প্রয়োগ করার আগে বেজিংয়ের সম্ভাব্য কী প্রতিশোধ নিতে পারে এবং তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা ভারতের কতটা আছে, কীভাবেই তা করা যাবে, সেইসব বিষয় মূল্যায়ন করছেন নয়াদিল্লির আমলারা।