রিনিমা বোরা জানিয়েছেন, মাত্র ১৬ বছর বছর বয়সেই তিনি বেঙ্গালুরু চলে এসেছিলেন পড়াশুনা করার জন্য। প্রেমিক ও তাঁর পরিবারের হাতে দিনের পর দিন তিনি অত্যাচিরিত হয়েছেন।
নিজের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন রিনিমা রোরা। সদ্যই তিনি মিস ইন্ডিয়া গ্যালাক্সি ২০২৪এর সেরা সুন্দরী হয়েছেন। অবোধ বোরার আনটোল্ড পডকাস্টে নিজের অতীত অভিজ্ঞতার কথা শোনালেন। তিনি জানিয়েছেন, প্রেমিকের হাতে কীভাবে দিনের পর দিন তিনি নিপীড়িত হয়েছেন। রিনিমা অসমের বাসিন্দা। তাঁর প্রেমিক ছিল মুসলিম। প্রেমের সম্পর্কে তিনি যে কষ্ট পেয়েছে সেই কষ্টের কথাই বর্ণনা করেছে পডকাস্টে।
রিনিমা বোরা জানিয়েছেন, মাত্র ১৬ বছর বছর বয়সেই তিনি বেঙ্গালুরু চলে এসেছিলেন পড়াশুনা করার জন্য। প্রেমিক ও তাঁর পরিবারের হাতে দিনের পর দিন তিনি অত্যাচিরিত হয়েছেন। তাঁকে মারধর করা হত। তিনি জানিয়েছেন, ১৬ বছর ধরেই তিনি নির্যাতনের শিকার। এই দিনগুলি ভুলে যাওয়া তাঁর কাছে খুব কঠিন। এখনও তিনি ট্রমায় রয়েছেন। সেই অন্ধকার অতীতের কথা ভোলার চেষ্টা করেছেন বলেও জানিয়েছেন।
রিনিমা বোরা হলেন, 'সে আমার সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তার জন্য আমার তাকে মাঝে মাঝে তালিবান বলেও মনে হত। সে আমাকে নির্মমভাবে মারধর করত। আমাকে জোর করে গরুর মাংস খাওয়া হয়েছিল। আমার সেই দিনের কথা মনে আছে যেদিন জোর করে আমারে গোমাংস খেতে বাধ্য করা হয়েছিল। তার বাবা ও মা আমাকে জোর করে গরুর মাংস খাইয়ে দিয়েছিল। এটাই হল লাভ জিহাদ।'
রিনিমা জানিয়েছেন, তাঁর পরিচয়কেও নিয়ন্ত্রিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। বোরা নামের পরিবর্তন করে তাঁর নতুন নামকরণ হয়েছিল আয়েশা হুসেন। তিনি আরও বলেছেন, 'তারা আমাকে জোর করে নামাজ পড়িয়েছে। আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে আমাকে তাদের ধর্মাচারণ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।' রিনিমা জানিয়েছেন, সম্পর্ক তখন থেকেই ভাঙতে শুরু করে যখন তাঁর প্রেমিক তাঁর ওপর চড়াও হয়। রীতিমত হিংসাত্মক ভূমিকা নিয়েছিল। রিনিমা আরও জানিয়েছে, সঙ্গী রীতিমত হুঁশিয়ারি দিয়েছিল, রিনিমা যদি প্রেমিককে ছেড়ে চলে যায় তাহলে তাঁর ওপর অ্যাসিড ছোঁড়া হবে।
কিন্তু সেই ভয় দূর করে রিনিমা সেখান থেকে বেরিয়ে এসেছে। বছরের পর বছর মানসিক অত্যাচারের সঙ্গে লড়াই করে তিনি বর্তমানে নারীদের আশার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিসেস ইন্ডিয়া গ্যালাক্সি ২০২৪এর তিনি সেরা। তাঁর দৃঢ়সংকল্প প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠায় সহযোগিতা করেছে। রিনিমা বলেছেন, 'মিসেস ইন্ডিয়া গ্যালাক্সি ২০২৪ এর মুকুট পেয়ে আমি অবিশ্বাস্যভাবে সম্মানিত।' তিনি আরও জানিয়েছেন, এই কেবলমাত্র ব্যক্তিহত মাইলফলক নয়। এটি মহিলাদের অধিকারের পক্ষেও সওয়াল করার একটি পথ। অন্যদের স্বপ্নপূরণ করতে তাঁর এই পদক্ষেপ সাহায্য করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।