গত ৩ অক্টোবর নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন এক মহিলা
একটি খোলা ম্যানহোলের পাশে পড়েছিল তাঁর ব্য়াগ
তার থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে আরব সাগরের বুকে মিলল তাঁর দেহ
তাঁর মৃত্যু নিয়ে বড় রহস্য তৈরি হয়েছে
দারুণ বৃষ্টির দিনে ছেলেকে বাড়ি পাঠিয়ে দিযেছিলেন। কিন্তু, তারপর থেকে আর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না বছর ৩৫-এর এক মহিলার। মুম্বইয়ের ঘাটকোপার এলাকায় বাড়ির কাছ থেকেই উধাও হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। দুদিন পর তাঁর নিথর দেহ ভাসতে দেখা গেল আরব সাগরে। নিখোঁজ হওয়ার স্থান থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে হাজি আলি এলাকায়। ঘটনার পর ফের বিএমসি অর্থাৎ মুম্বই পুরসভার গাফিলতির দিকে আঙুল উঠতে শুরু করেছে। মৃতার স্বামী সরাসরি বিএমসি-র বিরুদ্ধে হত্য়ার অভিযোগ এনেছেন।
ঘটনাটির সূত্রপাত গত ৩ অক্টোবর। ভারী বর্ষণের আশঙ্কায় ছেলেকে আগেভাগেই বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিলেন শীতল দামা। তারপর বেশ কয়েকঘন্টা কেটে যাওয়ার পরও তিনি বাড়ি না ফেরায়, তাঁর বাড়ির লোকজন তাঁর খোঁজ করতে শুরু করেছিলেন। ওই এলাকায় ব্যাপক তল্লাশির পর ঘাটকোপার এলাকার একটি খোলা ম্যানহোলের কাছে তাঁর ব্যাগটি পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই পুলিশ সন্দেহ করেছিল, শীতল দামা ম্যানবহোলে পড়ে গিয়েছেন। মাহিম, তান্ডেও, বান্দ্রা-কুর্লার নিকটবর্তী অঞ্চলে তারা তন্নতন্ন করে খোঁজে কিন্তু জীবিত বা মৃত কোনও অবস্থাতেই তাঁকে পাওয়া যায়নি। প্রায় ৩৩ ঘন্টা পর হাজি আলির সমুদ্র থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার হয়।
তাতেই মনে করা হচ্ছে ওই খোলা ম্যানহোলে পড়ে নর্দমা দিযে তাঁর দেহ ২২ কিলোমিটার ভেসে গিয়েছিল। ময়নাতদন্তের নিশ্চিত হয়েছে শীতল দামার জলে ডুবেই মৃত্যু হয়েছে। সেই সঙ্গে তিনি কোভিড পজিটিভও সনাক্ত হয়েছেন। তবে, বিএমসির কর্মকর্তারা এই বিষয়ে বেশ বিভ্রান্ত। তাঁরা বলছেন, ঘাটকোপার এলাকার নিকাশী লাইনের নকশা এমনভাবে করা, তাতে কোনও মানবদেহ নিকাশী পথের মাঝখানে কোথাও না আটকে গিয়ে ২২ কিলোমিটার পথ গিয়ে হাজি আলিতে পড়ার কথা নয়। কীভাবে সেখানে গেল দেহটি তা নিয়ে ধাঁধায় তারা।
বিএমসির আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই এলাকায় নিকাশী লাইনে ৩ টি চোকপয়েন্ট রয়েছে, যেখানে শরীর আটকে থাকা উচিত ছিল। ঘাটকোপার থেকে মরদেহটি হাজি আলির দিকে ভেসে যাওয়ার কোনও উপায় নেই। বিএমসির কর্মকর্তাদের আরও দাবি, নিকাশী লাইনের প্রবাহটি মাহিমের দিকে, ভারলি নুল্লার দিকে নয়। পুলিশ আধিকারিকরা এখনও তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে তদন্তের জন্য স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
তবে শীতলের পরিবার তাঁর মৃত্য়ুতে প্রায় পথে বসেচে। তাঁর স্বামী অসুস্থ, সে একাই সংসারের রোজগেরে ছিল। শীতলের স্বামী সরাসরি একে বিএমসির হত্যা বলেছেন। তাঁর অভিযোদ তারা নিম্নমানের নির্মাণ উপাদান ব্যবহার করেছিল এবং দুর্নীতি করেছিল বলেই তাঁর স্ত্রীকে মরতে হয়েছে। ভারি সিমেন্টের প্রচ্ছদের পরিবর্তে ম্যানহোল ঢাকতে একটি নিম্নমানের ফাইবারের কভার ব্যবহার করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।