
নয়াদিল্লি। বিহারের রাজনীতিতে আজ আরও একবার একটি বড় দিন। নীতিশ কুমার আজ দশমবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিতে চলেছেন, কিন্তু এবার পরিস্থিতিটা একটু অন্যরকম। বাইরে থেকে সবকিছু শান্ত মনে হলেও, ভেতরে ভেতরে টানাপোড়েন এবং ক্ষমতার লড়াই চরমে উঠেছে। পাটনার গান্ধী ময়দানে অনুষ্ঠিত হতে চলা শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান (Gandhi Maidan Patna Oath Ceremony) নিয়ে জোরদার প্রস্তুতি চলছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং এনডিএ-র বড় নেতারা এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন, যা এই অনুষ্ঠানের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এনডিএ-তে কি সবকিছু ঠিকঠাক আছে, নাকি পর্দার আড়ালে কোনও বড় বিতর্ক দানা বাঁধছে?
নির্বাচনে এনডিএ দুর্দান্ত জয় পেয়েছে। ২৪৩টি আসনের মধ্যে ২০২টি আসন জিতে জোট আবার ক্ষমতা দখল করেছে। বিজেপি এবার ৮৯টি আসন নিয়ে বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছে, যেখানে জেডি(ইউ) ৮৫টি আসন জিতেছে। এলজেপি (আরভি) ১৯টি আসন পেয়েছে এবং এইচএএম ও আরএলএম-ও জোটকে শক্তিশালী করেছে। এই পরিস্থিতিতে, বুধবার অনুষ্ঠিত এনডিএ বিধায়ক দলের বৈঠকে নীতিশ কুমারকে সর্বসম্মতিক্রমে জোটের নেতা নির্বাচিত করা হয়। বৈঠকে চিরাগ পাসওয়ান, উপেন্দ্র কুশওয়াহা এবং জিতন রাম মাঝির মতো বড় নেতারা নীতিশের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন। মাঝি এমনকি এও বলেন যে, “বিশ্বে এমন নেতা হয়তো আর কেউ নেই, যিনি ২০ বছর ধরে অ্যান্টি-ইনকাম্বেন্সি ছাড়া সরকার চালিয়েছেন।” কিন্তু গল্পটা এখানেই শেষ নয়...
বৈঠকের পরেই নীতিশ কুমার রাজভবনে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং একই সাথে নতুন সরকার গঠনের দাবিও পেশ করেন। এই পদক্ষেপটি લોકોને অবাক করে দিয়েছে যে, আসলে এমন কী ঘটল যে জয়ের পরপরই এমন একটি রাজনৈতিক চাল দেওয়া হল? রাজনৈতিক মহলে আলোচনা চলছে যে মন্ত্রিসভায় আসন বণ্টন এবং স্পিকার (Speaker) পদ নিয়ে উত্তেজনা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে পরিস্থিতি অস্বস্তিকর হয়ে উঠছিল। তাই শপথ গ্রহণের ঠিক আগে সবকিছু আবার নতুন করে সাজানো হয়েছে।
সবচেয়ে বড় বিতর্ক স্বরাষ্ট্র দপ্তর (Home Portfolio) নিয়ে। জেডি(ইউ) এটি ছাড়তে চায় না এবং বিজেপি এটিকে নিজের কাছে রাখতে চায়, কারণ তারা বৃহত্তম দল হিসেবে উঠে এসেছে। এছাড়া স্পিকার পদ নিয়েও দুই দলের মধ্যে সংঘাত চলছে। গতবার এই পদটি বিজেপির কাছে ছিল, তাই বিজেপি আবার তা পেতে চায়। অন্যদিকে, জেডি(ইউ) এটিকে সমতার অধিকার হিসেবে দেখছে। এই টানাপোড়েন নিয়ে বৈঠকের পর বৈঠক চলছে, কিন্তু ভেতরের খবর বলছে যে “শেষ মুহূর্তের বাধা” এখনও রয়ে গেছে।