অসংখ্য মন্দিরের উপস্থিতির জন্য ঐতিহাসিক বারানসী শহর পরিচিত মন্দির-নগরী হিসেবে। আর সেইসব মন্দিরের মধ্যে নতুন ও ব্যতিক্রমী সংযোজন হতে চলেছে নেতাজি মন্দির। সুভাষ চন্দ্র বসুর ১২৩তম জন্মবার্ষিকী-তে অর্থাৎ বৃহস্পতিবারই এই মন্দিরের শুভ উদ্বোধন করবেন বিশিষ্ট আরএসএস নেতা ইন্দ্রেশ কুমার। মন্দিরটি গড়া হয়েছে বারানসীর আজাদ হিন্দ মার্গের সুভাষ ভবনে।
এই নেতাজি মন্দিরটি নির্মিত হয়েছে, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাজীব। তিনি জানিয়েছেন, মন্দিরের প্রধান পুরোহিত হিসাবে নিযুক্ত হবেন একজন দলিত মহিলা। তিনিই প্রতিদিন ভোর ভারত মাতার প্রার্থনার সঙ্গে সঙ্গে নেতাজি মূর্তির আরতী করবেন। মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছে সুভাষ ভবনের সামনের লনে। মন্দিরের ভিতরে সুভাষচন্দ্র বসুর একটি পূর্ণাবয়ব কালো গ্রানাইট পাথরের মূর্তি রয়েছে। মন্দিরের সিঁড়িগুলি লাল এবং সাদা রঙে রাঙানো হয়েছে।
অধ্যাপক রাজীব বলেছেন, লাল রঙটি বিপ্লবের প্রতীক এবং সাদা রঙ শান্তির। আর নেতাজি মূর্তিটি কালো গ্রানাইট পাথরে তৈরি করা হয়েছে কারণ ভারতীয় মতে কালো রঙ শক্তির প্রতীক। মন্দিরটির উদ্দেশ্য ছিল মানুষের দেশপ্রেমের অনুভূতি জাগ্রত করা এবং নেতাজির স্মৃতিকে ধরে রাখা। বারাণসী-তে বরাবরই বহু সংখ্যক বাঙালি বসবাস করেন। যে কারণে অনেকসময়ই বারানসীকে 'মিনি-বেঙ্গল' বলা হয়। কাজেই এই শহরে বাহালীর আদি ও অকৃত্রিম এই নেতার মন্দির বেশ সাড়া ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে এর পিছনে রাজনীতিও দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই। প্রথম মোদী সরকারের সময় থেকেই নেতাজি ও তাঁর তৈরি আজাদ হিন্দ বাহিনীকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে মোদী সরকার। জাতীয় কংগ্রেস-কে নেহরু-গান্ধীরা কীভাবে পরিবারতান্ত্রিক করে তুলেছেন, তা দেখানোর জন্য বল্লভভাই প্যাটেলের পাশাপাশি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকেও তুলে ধরা হচ্ছে। আর তারই অংশ এই মন্দির বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এমনকী স্বয়ং নেতাজি-ও কোনওদিন ভারতে তাঁর 'মন্দির' তৈরি হোক, এমনটা চাইতেন কিনা সেই প্রশ্নও তোলা হচ্ছে।