২৫ মার্চ লকডাউন শুরু হয়েছিল। তারপর থেকেই কাজ হারিয়ে, থাকার জায়গা হারিয়ে রীতিমত অসহায় হয়ে ওঁরা বেরিয়ে পড়েছিলেন রাস্তায়। তারপর কেটে গেছে ৪০ দিনেরও বেশি সময়। নূন্যতম সম্বল হারিয়ে পথে নেমেছেন অভিবাসী শ্রমিকরা। কেউ মাইলের পর হেঁটে চলেছেন। কেউ আবার শেষ সম্বলটুকু খরচ করে গাড়ির ব্য়বস্থা করতে পেরেছেন। কেউ আবার সাইকেলে চড়েই রওনা দিয়েছেন। সকলেরই গন্তব্য একটাই বাড়ি ফেরা। যেমন করে হোক ফিরতে হবে বাড়িতে। লকডাউনের মাঝে অবিবাসী শ্রমিকদের ভিড় ছিল রাজপথের পরিচিত ছবি। রাজপথে বাধা পেয়ে ওঁরা রেল লাইনের ওপর দিয়েই বাড়ির পথ ধরেছিলেন। দুর্ঘটনার মত্যুও হয়েছে বহু শ্রমিকের। এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে এতদিন পর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য একগুচ্ছ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করলেন। তবে প্রথমেই তিনি বলেছেন লকডাউন ঘোষণার পরই নাকি অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য ১১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রত্যেকটি রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল প্রবাসী শ্রমিকদের সেল্টার হোমে রাখতে। পাশাপাশি ৩ বেলার খাবার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু আগামী দিনে অভিবাসীদের পাশে দাঁড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন আগামী ২ মাসের জন্য প্রবাসী শ্রমিকদের বিনামূল্য রেশন দেওয়া হবে। কার্ড থাকুক আর না থাকুক প্রত্যেকেই মাসে ৫ কিলো চাল অথবা আটা সঙ্গে ১ কিলো গম পাবেন। পাশাপাশি যেসব প্রবাসী শ্রমিক রাজ্যে ফিরে গেছেন তাঁদের ১০০ দিনের প্রকল্পের মাধ্যমে কাজের ব্যবস্থা করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য গুলিকে। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার হকার,ফুটপাথ ব্যবসায়ীদেরও পাশে দাঁড়িয়েছে। আগামী দিনে প্রবাসী মজদুরদের সুবিধের জন্য এক দেশ এক রেশন কার্ডের পরিকল্পনাও গ্রহণ করা হচ্ছে।
লকডাউনের কারণে অনেক প্রবাসী শ্রমিকই ভাড়া বাড়ির আশ্রয় হারিয়েছিলেন। সেই কারণে আগামী দিনে প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। পিপিপি মডেলে এই বাড়ি তৈরি হবে। যেখানে খুব কম টাকার বিনিময় থাকতে পারবেন শ্রমিকরা।
এদিন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন বলেন দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে আরও সক্রিয় করা হয়েছে। করোনা সংকটের সময়ই এই গোষ্ঠীগুলি ৩ কোটি মাস্ক ও ১.২০ লক্ষ লিটার স্যানিটাইজার সরবরাহ করেছে। আগামী দিনে এই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধির দিকে নজর দেওয়া হবে। এই গোষ্ঠীগুলি পয়সা পোর্টালের মাধ্যমে আর্থিক সাহায্য পেয়ে থাকেন।