বিহারের নয়া মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সামনে ৯টি বড় চ্যালেঞ্জ! কীভাবে মোকাবিলা?

Published : Nov 17, 2025, 06:27 PM IST
বিহারের নয়া মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের সামনে ৯টি বড় চ্যালেঞ্জ! কীভাবে মোকাবিলা?

সংক্ষিপ্ত

২০২৫ সালের বিহার নির্বাচনে এনডিএ-র জয়ের পর, নতুন নীতীশ সরকারকে ৯টি বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। এর মধ্যে বেকারত্ব, ধীরগতির শিল্প উন্নয়ন এবং আইন-শৃঙ্খলা প্রধান। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে উন্নয়ন করাই হবে সরকারের আসল পরীক্ষা।

২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল বিহারের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায় লিখেছে। এনডিএ জোট রেকর্ড-ভাঙা জয় পেয়েছে এবং নীতীশ কুমার আবারও মুখ্যমন্ত্রীত্বের দায়িত্ব নিতে চলেছেন। এই জয় যতটা বড়, ততটাই বড় দায়িত্বও তাঁর কাঁধে এসে পড়েছে। এখন প্রশ্ন শুধু ক্ষমতা संभालने নয়, বরং বিহারকে কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং শিল্প বিকাশের পথে সত্যিকার অর্থে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।

নির্বাচনী ভাষণ এবং প্রতিশ্রুতির বাইরে গিয়ে এখন মাঠে নেমে কাজ করার সময়, এবং এই ফ্রন্টেই সরকারের আসল পরীক্ষা শুরু হয়। আসুন দেখে নেওয়া যাক সেই ৯টি বড় চ্যালেঞ্জ, যা নীতীশ সরকারকে আগামী পাঁচ বছরে সমাধানের জন্য দৃঢ়ভাবে মোকাবিলা করতে হবে।

বেকারত্ব এবং তরুণদের রাজ্যত্যাগ

বিহারের সবচেয়ে বড় সমস্যা আজও কর্মসংস্থানের। লক্ষ লক্ষ যুবক প্রতি বছর পড়াশোনা শেষ করে অন্য রাজ্যে চাকরির খোঁজে পাড়ি দেয়। এটি শুধু প্রতিভার ক্ষতিই নয়, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষতিও বটে। সরকারের প্রথম লক্ষ্য হওয়া উচিত স্থানীয় স্তরে তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়ানো।

শিল্প বিকাশের ধীর গতি

বিহারের কাছে সম্পদ এবং জনসংখ্যার ক্ষমতা দুটোই আছে, কিন্তু শিল্প এখনও রাজ্যে বিনিয়োগ করতে দ্বিধা বোধ করে। শিল্পের অভাব কর্মসংস্থান থেকে শুরু করে উৎপাদন এবং রাজ্যের আয়—সবকিছুর উপর প্রভাব ফেলে। এখন ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোর, এমএসএমই হাব এবং স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমকে শক্তিশালী করা সময়ের দাবি।

আইন-শৃঙ্খলা ও অপরাধের চ্যালেঞ্জ

ক্রমবর্ধমান অপরাধমূলক ঘটনা এবং অস্ত্রের সহজলভ্যতা রাজ্যের ভাবমূর্তির উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। কঠোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, পুলিশি সম্পদের উন্নতি এবং সামাজিক ব্যবস্থায় ভারসাম্য না আনা পর্যন্ত বিনিয়োগ এবং উন্নয়ন উভয়ই ব্যাহত হবে।

শিক্ষা ব্যবস্থার পুনর্গঠন

স্কুলের মৌলিক সুবিধা, প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অভাব এবং দক্ষতা-ভিত্তিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা—এই তিনটির উপরই মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বিহারে শিক্ষাকে শুধু ডিগ্রি এবং পাশের হারের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে ক্যারিয়ার-ভিত্তিক করতে হবে।

স্বাস্থ্য পরিষেবার দুর্বলতা

গ্রামীণ এলাকায় ডাক্তার, নার্স, চিকিৎসা সুবিধা এবং আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব উন্নয়নের সবচেয়ে গুরুতর বাধাগুলোর মধ্যে একটি। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে শক্তিশালী না করে বিহারের আগামী যাত্রা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে।

কৃষি ক্ষেত্রে সীমিত লাভ

কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তি, উপযুক্ত বাজার, কোল্ড স্টোরেজ এবং উন্নত এমএসপি-র সুবিধা দেওয়া এনডিএ-র জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। বিহারের অর্থনীতির প্রধান ভিত্তি কৃষি, কিন্তু কৃষকরা উৎপাদকের চেয়ে বেশি সংগ্রামী হিসেবেই পরিচিত।

মহিলাদের কল্যাণ ও সামাজিক ক্ষমতায়ন

বিহারে মহিলাদের অংশগ্রহণ ভালো, কিন্তু কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা এবং নেতৃত্বে বিকাশের ক্ষেত্রে এখনও বড় ব্যবধান রয়েছে। সরকারের ಯೋಜನೆগুলোকে বাস্তবে কার্যকর করা গুরুত্বপূর্ণ।

অবকাঠামোর সম্প্রসারণ

রাস্তা, জল, বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট, ডিজিটাল সেন্টার, স্মার্ট গ্রাম—এই দশকের উন্নয়নের আসল পরিচয়। গ্রামীণ এবং শহুরে উভয় স্তরেই পরিকাঠামোকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

জোটের সমন্বয় ও স্থিতিশীলতা

এনডিএ-র ঐতিহাসিক জয় সত্ত্বেও, আসন এবং নেতৃত্বের সমীকরণ সবসময় রাজনৈতিক উত্থান-পতনের ঝুঁকির সঙ্গে জড়িত থাকে। একটি স্থিতিশীল সরকারই স্থিতিশীল উন্নয়ন দিতে পারে, তাই জোটের বোঝাপড়াও সরকারের একটি প্রধান পরীক্ষা।

বিহার ক্ষমতার উপর আস্থা রেখেছে, এখন সরকারকে তার ডেলিভারি মডেল দিয়ে নিজের ক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে। এটি শুধু জয়ের সময় নয়, নীতি, পরিকল্পনা এবং তাদের বাস্তবায়নের সময়। যদি এনডিএ সরকার এই চ্যালেঞ্জগুলোকে সুযোগে রূপান্তরিত করতে পারে, তাহলে ২০২৫-২০৩০ সালের কার্যকাল বিহারের জন্য একটি সোনালী পরিবর্তনের সময় হতে পারে। অন্যথায়, এই জয় শুধু রাজনৈতিক ইতিহাস হয়ে থাকবে, উন্নয়নের ভবিষ্যৎ নয়।

PREV
Read more Articles on
click me!

Recommended Stories

Indian Railways: এবার তৎকাল টিকিট বুকিংয়ের নিয়মে বড়সড় রদবদল, জানিয়ে দিল রেল
রজস্বলা নাবালিকাকে একটা স্যানিটারি ন্যাপকিন দিতে ব্যর্থ ইন্ডিগো, বাবার কাতর আর্জির ভিডিয়ো ভাইরাল