মণিপুরে মহিলাদের নগ্ন করে কুচকাওয়াজ করানোর ভিডিও নিয়ে রাহুল গান্ধী ও স্মৃতি ইরানির বার্তা। দুজনেই ঘটনার নিন্দা করেছেন।
মণিপুরের পুরনো ভাইরাল হওয়া ভিডিও নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে গোটা দেশে। দুই মহিলাকে গণধর্ষণের পর নগ্ন অবস্থায় হাঁটানো হয়। মহিলাদের ঘিরে রয়েছে প্রচুর পুরুষ। স্থানীয় আদিবাসী সংগঠন জানিয়েছে দুই জন নয়, তিন জনকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে প্রাণ দিতে হয় এক জনকে। যাইহোক এই ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছে দেশের শাসক বিরোধী দুই পক্ষই। বুধবার রাতেই সোশ্যাল মিডিয়া বার্তা দিয়ে গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন, কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি।
স্মৃতি ইরানির মন্তব্যঃ
সোশ্যাল মিডিয়া বার্তা দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি জানিয়েছেন, মণিপুরের দুই মহিলার যৌন নিপীড়নের ভয়াভহ ভিডিও নিন্দনীয়। এই ঘটনা সম্পূর্ণ অমানবিক। মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং এর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন বলেও জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মণিপুর প্রশাসন গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা করা হবে বলেও মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে আশ্বাস দিয়েছেন।
অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংও জানিয়েছেন, তিনি গোটা ঘটনার রিপোর্ট দিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে। দ্রুত তদন্তের বিষয়ও আশ্বাস দিয়েছেন।
রাহুল গান্ধীর মন্তব্যঃ
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী মণিপুরের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি চেয়েছেন। তিনি বলেছেন, 'প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা ও নিস্ক্রিয়তা মণিপুরকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে গেছে। মণিপুরে ভারতের আদর্শ আক্রমণের সময় ভারত চুপ করে থাকবে। ' তিনি জানিয়েছেন তিনি মণিপুররের বাসিন্দাদের পাশে রয়েছে। শান্তি এগিয়ে যাওয়ার একমাত্র পথ।
মণিপুরের হিংসা নিয়ে প্রথম থেকেই নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারপর মহিলা নিগ্রহের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। তাতেই রাহুল গান্ধী নিশানা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে।
মণিপুরের উপজাতীয় নেতাদের ফোরাম এই বিষয় নিয়ে একটি বিবৃতি জারি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে ঘটনাটি ঘটেছে গত ৪ মে। রাজধানী ইম্ফল থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে কাংপোকপি জেলায়। এই ঘটনায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছিল কাংপোকপি জেলায়। অভিযোগে বলা হয়েছে, স্থানীয় এক জননেতার সামনে তিন মহিলাকে নগ্ন করে হাঁটানো হয়েছে। এই ঘটনা পাঁচা জনের একটি দলকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। যারা মণিপুর হিংসার ঘটনাতেও জড়িত। মহিলাদের বিরুদ্ধে একজনকে অপরহণের অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ দুই মহিলাকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। যার মধ্যে এক জনের বয়স ১৯। তার ভাই মহিলাকে উদ্ধার করতে এলে তাকেও খুন করে ধর্ষকরা। পুলিশ জানিয়েছেন ৪ মে কাংপোকপি জেলায় এই ঘটনা ঘটেছে। ২১ জুন থৌবাল জেলায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ, গণধর্ষণ ও হত্যার মামলা দায়ের করা হয়েছে। এফআইআর-এ বলা হয়েছে তিন জন মহিলাকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করে তাদের কাপড় খুলতে বাধ্য করা হয়েছে। জনার সামনে দিয়ে উলঙ্গ অবস্থা হাঁটতে বাধ্য করা হয়েছিল।