
India vs Pakistan: পাকিস্তানের জন্য সিন্ধুর (Indus River) জল বন্ধ, আকাশসীমা ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার মতো নানা পদক্ষেপের পর এবার আন্তর্জাতিক মহলেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দরবার করছে ভারত। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার (Pahalgam Terrorist Attack) পর বিভিন্ন দেশের পক্ষ থেকে ভারতের পাশে থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের মুখোশ খুলে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের আর্থিক অনুদান বন্ধ করার চেষ্টাও করছে ভারত। পাকিস্তানের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের (International Monetary Fund) ঋণ ও আর্থিক সাহায্যের উপর অনেকাংশে নির্ভর করে পাকিস্তান। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিনের মতো দেশও দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য করে এসেছে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন সাহায্যের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে আর্থিকভাবে বিকল করে দেওয়ার জন্য জোড়া ফলা নিয়ে আক্রমণ করছে ভারত।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলিকে মদত দেওয়ার অভিযোগ বহু পুরনো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদ দমনের নামে পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য করে এসেছে। কিন্তু পাকিস্তান সেই অর্থ সন্ত্রাসবাদীদের লালন-পালনেই ব্যয় করেছে বলে অভিযোগ। এঅ বিষয়েই এবার আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে ভারত। আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করছে ভারত। আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডার থেকে ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার সাহায্য পাচ্ছে পাকিস্তান। গত বছরের জুলাইয়ে এ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। তিন বছরে পাকিস্তানকে এই আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে জানানো হয়েছে। পাকিস্তান সরকার এই অর্থ দিয়ে সন্ত্রাসবাদীদের সাহায্য করছে বলে অভিযোগ ভারতের। এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডারের পদক্ষেপের দাবি জানাচ্ছে ভারত। এছাড়া ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সেও (Financial Action Task Force) পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সুর চড়াচ্ছে ভারত। এই সংস্থা সারা বিশ্বে অর্থপাচার এবং সন্ত্রাসবাদীদের আর্থিক সাহায্যের বিষয়ে নজরদারি চালায়। ২০১৮ সালের জুনে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাভুক্ত করে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স। এরপর নিজেদের মুখরক্ষা করতে সন্ত্রাসবাদীদের অর্থসাহায্য করবে না বলে জানায় পাকিস্তান। বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা, জরিমানা, কারাবন্দি করার মতো পদক্ষেপও করে পাকিস্তান। এরপর ২০২২ সালের অক্টোবরে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকা থেকে বাদ দেয় ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স। এবার ধূসর তালিকায় ফের পাকিস্তানের নাম যোগ করার দাবি জানাচ্ছে ভারত।
পাকিস্তান আর্থিকভাবে ক্রমাগত পিছিয়ে পড়লেও, সন্ত্রাসবাদে মদতের নীতি থেকে সরে আসেনি। সে কথা উল্লেখ করেই আন্তর্জাতিক মহলে পাকিস্তানের উপর চাপ তৈরি করতে চাইছে ভারত। আন্তর্জাতিক অর্থভাণ্ডারের ঋণ ও আর্থিক সাহায্য বন্ধ হলে এবং ফের ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের ধূসর তালিকায় জায়গা পেলে পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়বে। সেক্ষেত্রে পাকিস্তানের যে কোনও আর্থিক পরিকল্পনা, চুক্তি এবং লেনদেনের উপর নজর রাখতে পারবে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স। পাকিস্তানে বিদেশি সংস্থার বিনিয়োগের উপরেও নিয়ন্ত্রণ জারি করা হবে। ঠিক সেটাই চাইছে ভারত। দেশজুড়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের দাবি উঠছে। হয়তো ভারতীয় সেনা বড় কোনও পদক্ষেপ নেবে। তবে তার আগে পাকিস্তানকে নানা দিক থেকে কোণঠাসা করার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। ভারত-পাকিস্তান বাণিজ্য বন্ধ, পাকিস্তানের সব উড়ানের জন্য ভারতের আকাশসীমা বন্ধ এবং সিন্ধুর জল বন্ধ পাকিস্তানের উপর চাপ তৈরি করেছে। এই চাপ বাড়ানোর জন্য আন্তর্জাতিক মহলকে কাজে লাগাতে চাইছে ভারত।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক ভালো। কিন্তু পাকিস্তানকেও হাতে রাখতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর দুই দেশের সঙ্গেই যোগাযোগ রাখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভারতকে সংযত থাকার বার্তা দেওয়া হয়েছে। তবে পাকিস্তান যে সন্ত্রাসবাদে মদত দিচ্ছে, সে কথা স্বীকার করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ফলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আর্থিক পদক্ষেপে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে পেতে পারে ভারত।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।