
ফের প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পেহলগাঁও কাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড শেখ সাজ্জাদ গুলের সঙ্গে যোগসূচির মিলল কর্ণাটক ও কেরালা থেকে। কর্ণাটক ও কেরালা থেকে পড়াশোনা করেছে শেখ সাজ্জাদ গুলে। তারপর যোগ দেয় কাশ্মীরের লস্করর ই তৈয়হা (এলইটি) প্রক্সি, দ্য় রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিরএফ)।
গুল সাদ্দাদ আহমেহ শেখ নামে পরিচিত। দাবি করা হচ্ছে এলইটি-র সুরক্ষায় পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে লুকিয়ে আছে। জম্মু ও কাশ্মীরের বেশ কয়টি সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত আছে তার নাম। ২০২০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মধ্য ও দক্ষিণ কাশ্মীরের হামলা, ২০২৩ সালের মধ্য কাশ্মীরে গ্রনেড হামলা, বিজহেকা, গগাঙ্গিরে জম্মু ও কাশ্মীরে পুলিশের ওপর অত্য়াচার ও হামলা এবং গান্ডারবালের জেড-মোর টানেল-র মতো ঘটনায় জড়িত ছিল সে।
জাতীয় তদন্ত সংস্থা ২০২২ সালে এপ্রিলে সন্ত্রাসী হিসেবে খ্যাত গুলের জন্য ১০ লক্ষ টাকা পুরষ্কার ঘোষণা করেছে। এখনও চলছে খোঁজ। গণহত্যার দায় স্বীকারকারী টিআপএফ তার নির্দেশেই কাজ করেছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
কর্মকর্তাদের মতে, সন্ত্রাসীরা পর্যটকদের তাদের ধর্ম জেনে হত্যা করেছিল। টার্গেট ছিল শুধু হিন্দুরা। সেই ঘটনার নেপথ্যে ছিল গুলে।
সূত্রের খবর, গুল পাকিস্তানে গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর একজন গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ছিল। পঞ্জাবি নেতৃত্বাধীন এলইটি-র কাশ্মীরি ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করেছিল।শ্রীনগরে পড়াশোনা করেছিল সে। বেঙ্গালুরুতে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করে। তাপর কেরালায় ল্যাব টেকনিশিয়ান কোর্স করেছিল। কাশ্মীরে ফিরে ডায়াগনস্টিক ল্যাব স্থাপন করে। যা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে লজিস্টিক সহায়তা প্রদানের জন্য ব্যবহার করেছিলেন।
প্রসঙ্গত, ২২ এপ্রিল ঘটেছিল সেই ভয়ানক ঘটনা। ঘটনাটি ঘটে পেহলগাঁও-র বৈসরন উপত্যকায়। যা মিনি সুইৎজারল্যান্ড নামে খ্যাত। সেদিন পর্যটকদের রক্ত লাল হয়ে যায় মিনি সুইৎজারল্যান্ড। যেদিন দুপুরে জঙ্গিদের গুলিতে প্রয়াত হন ২৬ জন পর্যটক। প্রত্যক্ষদর্শী ও বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা বলেছিলেন যে, ‘জঙ্গিরা ধর্ম জেনে হত্যা করা হয়। বেছে বেছে হিন্দু পুরুষদের হত্যা করেছে।’ এই পেহলগাঁও কাণ্ডে লস্কর ই তৈবা-র ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট দায়ি বলে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে জানা গিয়েছিল, এই হত্যার ছক কদিন ধরে করা হয়। ২২ এপ্রিল হামলার ঠিক আগে ১-৭ এপ্রিল রেইকি চালিয়েছিল জঙ্গিরা। একাধিক রিসর্টে রেইকি করেছিল জঙ্গিরা। শেষ পর্যন্ত বেছে নিয়েছিল কাশ্মীরের বৈসারন উপত্যকা। ২২ এপ্রিল দুপুরে ৫-৬ জন জঙ্গি সেখানে হাজির হয়েছিল। দু-তিনটে দলে ভাগ হয়ে ৪০-৫০ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। ধর্মীয় পরিচয় দেখে টার্গেট করে হত্যা করা হয়েছিল সাধারণ মানুষকে। ঘটনাস্থলে সেদিন মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জন পর্যটক ও ১ জন স্থানীয়ের।
এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে হয় অপারেশন সিঁদুর। মঙ্গলবার মধ্যরাতে ভারতীয় সেনা উড়িয়ে দেয় ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি। মারা গিয়েছে প্রা ৮০ জন জঙ্গি। পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে করা হয়েছিল এই অপারেশন।