
Air India Flight Crash: সফর ছিলো মাত্র নয় ঘন্টার। তারপরই নিজের স্বপ্নকে সত্যি করতে বিলেতের মাটি ছুঁতেন পায়েল খাটিক। কিন্তু সেই স্বপ্ন রয়েই গেল অপূর্ণ। বিদেশের মাটিতে পড়াশোনা করার জন্য প্রথমবার বিমানে উঠতেই মুহুর্তের মধ্যে তা হয়ে গেল শেষ বিমানযাত্রা। দেশের মাটিতেই স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেল পায়েলের।
বৃহস্পতিবার দুপুরে গুজরাটের আহমেদাবাদ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার AI171-এয়ারবাস। কিন্তু মাটি থেকে টেকঅফের মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই হয়ে গেল সবশেষ। বিমানে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জনই নিহত। আর এই নিহতদের তালিকায় রয়েছে রাজস্থানের উদয়পুরের বাসিন্দা পায়েল খাটিক।
জানা গিয়েছে, আদতে রাজস্থানের উদয়পুরের বাসিন্দা হলেও পায়েল খাটিকরা সপরিবারে গুজরাটের হিম্মতনগরে বাস করতেন। তার বাবা সুরেশভাই খাটিক একজন রিকশা চালক। অভাবের সংসারে দিনরাত এককরে মেয়েকে মানুষ করেছিলেন তিনি। উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডনে পাঠাচ্ছিলেন মেয়েকে। তখনই বা কে জানত জীবনে প্রথমবার প্লেনে ওঠাই কাল হয়ে দাঁড়াবে পায়েলের জীবনে। মাত্র ৩০ সেকেন্ডে শেষ হয়ে যাবে মেয়ের বিলেতে গিয়ে পড়াশোনার স্বপ্ন। কারণ, বৃহস্পতিবারের ভয়ঙ্কর প্লেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সুরেশভাই খাটিকের মেয়ে পায়েল খাটিকও।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আদতে রাজস্থানের লোক হলেও বহুদিন ধরেই কর্মসূত্রে গুজরাটের হিম্মতনগরেই বাস করছিল খাটিক পরিবার। ছোটেবেলা থেকেই পড়াশোনায় অসম্ভব মেধাবী ছিল পায়েল। আরও জানা গিয়েছে যে, পরিবারের পাশে দাঁড়াতে একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করত পায়েল। আর সেই সংস্থার তরফেই পায়েলকে পড়াশোনা করার জন্য বিলেতে পাঠানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে ৩০ সেকেন্ডেই শেষ পায়েলের লন্ডনে গিয়ে পড়াশোনা করার স্বপ্ন। দেশের মাটিতেই পুড়ে ছাই উচ্চশিক্ষা লাভের বাসনা!
অন্যদিকে, ভাইয়ের সঙ্গে গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশে চড়েছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার AI171-বিমানে। তখনও কেউ হয়ত দুঃস্বপ্নেও ভাবেনি এই ওড়ায় শেষ ওড়া হবে! পলকের মুহুর্তের মধ্যে সব শেষ! কিন্তু কথায় বলে না রাখে হরি, মারে কে? এই বিমানযাত্রায় যেন ঠিক এমনটাই ঘটে গেল এয়ার ইন্ডিয়ার AI171-বিমানের ১১এ সিটের যাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশের সঙ্গে। বৃহস্পতিবার দুপুরে গুজরাটের আহমেদাবাদের মেঘানিনগরের বিজে মেডিক্যাল কলেজের ক্যান্টিনের উপর ভেঙে পড়ে AI171-এর বিমানটি। আর এই দুর্ঘটনার হাত থেকে অবিশ্বাস্য ভাবে বেঁচে গিয়েছেন এয়ার ইন্ডিয়ার একমাত্র যাত্রী বিশ্বাসকুমার রমেশ।
ভয়ঙ্কর এই বিমান দুর্ঘটনায় বিমানের ভিতরে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জনই প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এয়ার ইন্ডিয়া এবং সরকারের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে ২৪১ জন যাত্রীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে এই তথ্য জানানো হয়েছে। কিন্তু একই বিমানে থাকা সহযাত্রী ভাইকে হারালেও সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন বিশ্বাসকুমার রমেশ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এয়ার ইন্ডিয়ার একমাত্র জীবিত যাত্রীর সঙ্গে দেখা করতে হাসপাতালে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। আর শুক্রবার সকালে গুরুতর ভাবে জখম ওই যাত্রীর সঙ্গে হাসপাতালে গিয়ে দেখা করে আসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কথা বলেন রমেশের সঙ্গে। বুকে গুরুত্বর চোট পেলেও এখনও কার্যত ট্রমায় রয়েছেন বিশ্বাসকুমার রমেশ। এদিন হাসপাতালের বেডে শুয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নিজের বেঁচে ফেরার ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন তিনি।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।