জাতীয় পতাকার নকশাকার, জেনে নিন এই মহান ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে কিছু কথা

  • ২ অগাষ্ট ১৮৭৬ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের ভাটলাপেনুমারুতে এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ 
  • ঊনিশ বছর বয়সে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগদান 
  • স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গেও প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন
  • জাতীয় পতাকার নকশা তৈরির জন্য ৩০টি দেশের জাতীয় পতাকা সম্পর্কে গবেষণা 

সময়টা অষ্টাদশ শতাব্দী, তখন দেশ ছিল  ব্রিটিশ শাসনের অধীনে। পরাধীন ভারতে তখন দিকে দিকে স্বাধীন দেশ গড়ে তোলার জন্য চলছে বিদ্রোহ। সেই সময় ২ অগাষ্ট ১৮৭৬ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের মছলিপত্তনমের নিকটে ভাটলাপেনুমারুতে এক সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এই ব্যক্তিত্ব। ছোট থেকেই স্বপ্ন পরাধীনতার বন্ধন থেকে দেশ-কে মুক্ত করার। মাত্র ঊনিশ বছর বয়সে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগদান করেন তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গেও প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি । ইনি হলেন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া দেশের জাতীয় পতাকার নকশাকার।
ঊনবিংশ শতাব্দীর আগে অবধি বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যের শাসকেরা আলাদা আলাদা নকশার পতাকা ব্যবহার করতেন। এরপর ৩১ মার্চ, ১৯২১ সালে জাতীয় কংগ্রেসের এক সম্মেলনে প্রথমবার ভারতের ত্রিবর্ণ পতাকার বিষয়টি প্রস্তাব করেছিলেন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া। ভেঙ্কাইয়ার নকশা করা পতাকা মঞ্জুর করেছিলেন মহাত্মা গান্ধি। এরপর ১৯৩১ সালে চূড়ান্ত স্বীকৃতি পায় এই পতাকা, তবে তখন পতাকায় অশোক চক্রের বদলে ছিল চক্র।
মছলিপত্তনমের উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুল জীবন শেষ করেন পিঙ্গলি। এরপর তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য কলম্বো যান। দেশে ফিরে তিনি রেল-এর চাকরি গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে উর্দু ও জাপানি ভাষা শিক্ষার জন্য লাহোরের অ্যাংলো-বৈদিক কলেজে যুক্ত হন। ভারতের জাতীয় পতাকার নকশা তৈরির জন্য ভেঙ্কাইয়া ৩০টি দেশের জাতীয় পতাকা সম্পর্কে গবেষণা করেন। শেষ অবধি এই তিন বর্ণই জাতীয় পতাকার জন্য বাছাই করেন তিনি। এরপর ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই সংবিধান সভায় ভারতের জাতীয় পতাকা প্রকাশ্যে আসে । এই পতাকায় চক্রের পরিবর্তে যোগ হয় অশোক চক্র।
জাতীয় পতাকার যথাযথ ব্যবহার এবং সম্মানের জন্য ২০০২ সালে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বেশ কিছু নিয়মাবলী করেছিল যা 'ফ্ল্যাগ কোড অফ ইন্ডিয়া' নামে পরিচিত। ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ট ব্যুরো এই পতাকা তৈরির পদ্ধতি ও নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন স্থির করে দিয়েছে। আর সেই নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পতাকার তৈরির অধিকার কেবল খাদী উন্নয়ন ও গ্রামীণ শিল্প কমিশ্যন-এর হাতে রয়েছে। ১৯৬৮ সালে প্রথমবারের জন্য পতাকাবিধিটি গৃহীত করা হয়েছিল। এই বিধি বা নিয়ম আবার ২০০৮ সালে সংশোধন করা হয়। তবে পুরনো বিধি অনুযায়ী, স্বাধীনতা দিবস, সাধারণতন্ত্র দিবস সহ অন্যান্য জাতীয় দিবস ছাড়া সাধারণ নাগরিকেরা পতাকা উত্তোলন করতে পারতেন না। 
স্বাধীন ভারতের এই পতাকায় গেরুয়া ত্যাগের প্রতীক, সবুজ সমৃদ্ধির প্রতীক, সাদা শান্তির প্রতীক ও অশোক চক্র ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতীক। এই মহান ব্যক্তিত্বের জন্যই দেশের তিন রঙা এই পতাকা জাতীয় পতাকার স্বীকৃতি পেয়েছে। পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়ার এই কৃতিত্ব ভারতের ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। আজ স্বাধীনতা দিবসে এই মহান ব্যক্তির এই অবদান সেই কথা বার বার মনে করিয়ে দেয়।

Share this article
click me!

Latest Videos

Suvendu Adhikari Live : কোলাঘাটের মঞ্চে বিস্ফোরক ভাষণ শুভেন্দু অধিকারীর, সরাসরি | Bangla News
‘এক প্রভু জেলে আছেন লক্ষ্য প্রভু তৈরি হয়ে গিয়েছেন’ Suvendu Adhikari-র তীব্র হুঙ্কার
Dilip Ghosh: কীভাবে দেশ রক্ষা পাবে ধর্ম রক্ষা পাবে? ভরা সভায় উপায় বলে দিলেন দিলীপ ঘোষ
নয়া মোড় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়! পার্থ-অর্পিতাদের বিরুদ্ধে শুরু হলো চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া!
Suvendu Adhikari Live: সল্টলেকে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি শুভেন্দু অধিকারী, দেখুন সরাসরি