শেষ হল ভারতীয় রাজনীতির এক অধ্যায়ের। দিল্লির লোধি রোডের শ্মশানে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হল ভারতরত্ন প্রণব মুখোপাধ্যায়ের। গান স্যালুটের মাধ্যমে শেষ বিদায় জানানো হল দেশের ১৩তম রাষ্ট্রপতিকে। অবসান হল পাঁচ দশক দিল্লিতে দাপিয়ে বেড়ানো এক বর্ণময় বাঙালি রাজনীতিবিদ প্রণবযুগের।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই প্রণববাবুর পার্থিব শরীর রাখা ছিল তাঁর ১০ রাজাজি মার্গের বাসভাবনে। সেখানে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী-রাষ্ট্রপতি-সহ বহু নেতা। এসেছিলেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীও। প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে শ্রদ্ধা জানান উপ রাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত, সস্ত্রীক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল-সহ বহু নেতা-মন্ত্রী ও সাধারণ মানুষ। তবে কোভিডের কারণে মৃতদেহ বাড়ির একটি ঘরে রাখা হয়। কিন্তু সেখানে কাউকে যেতে দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে একটি বেদি তৈরি করে প্রণবের ছবি রাখা হয়। দুপুর একটার পরে শববাহী শকটে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির মরদেহ নিয়ে আসা হয় লোধি রোডের শ্মশানে।
সেখানেই মাস্ক পরে ৬ ফিট দূরত্বে দাঁড়িয়ে প্রণব মুখোপাধ্যায়কে শেষ বিদায় জানান সকলে। পিপিই কিট পরে আচারবিধি সারেন প্রণব-পুত্র অভিজিত মুখোপাধ্যায়। সজল চোখে বাবাকে অন্তিম বিদায় জানান প্রণবপুত্র৷
চিকিৎসাধীন থাকাকালীন প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছিল। তাই দিল্লির রাজাজি রোডের বাড়ি থেকে শুরু করে লোধি রোড মহাশ্মশান, সর্বত্রই কোভিড প্রোটোকল মেনে শেষকৃত্য করা হয়। পরিবারের অন্য সদস্যরাও সবাই পিপিই কিট পরে শামিল হয়েছিলেন শেষকৃত্যে। এ ছাড়া কোভিড প্রোটোকল মেনে শ্মশানেও লোকসংখ্যা সীমিত রাখা হয়েছিল।
এদিন প্রণব মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করে ২ মিনিট নীরবতা পালন করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। তাঁর প্রয়াণে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সাত দিন দেশের জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি তথা বাংলার গর্ব প্রণব বাবুর প্রয়াণে মঙ্গলবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করছে বাংলাদেশও।